ক্যাটাগরি

মারিউপোলে কী হচ্ছে, শহরটি কেন গুরুত্বপূর্ণ

এটি ইউক্রেইনের দনবাস অঞ্চলে রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকাগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার অধিগ্রহণ করা ক্রাইমিয়াকে সংযোগকারী স্থল পথের ওপর অবস্থিত হওয়ায় সামরিক কৌশলগতভাবে শহরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

মারিউপোলের নিয়ন্ত্রণ পেলে স্থলপথে ক্রাইমিয়া যেতে রাশিয়াকে আর কোনো ধরনের বাধার মুখেই পড়তে হবে না। কৃষ্ণসাগরের উপদ্বীপটিতে থাকা রুশ সেনারাও তখন দনবাস বা ওডেসার দিকে অভিযানে যুক্ত হতে পারবে আর ইউক্রেইনের কৃষ্ণসাগর উপকূলরেখার ৮০ শতাংশ রাশিয়ার হস্তগত হবে।

কিন্তু রুশ সেনারা প্রায় ৫০ দিন ধরে শহরটিকে চারদিক থেকে ঘিরে রাখলেও এখনও তারা এর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি। মারিউপোলে থাকা ইউক্রেইনীয় সেনারা শহরটির বিশাল ইস্পাত কারখানা আজভস্তাইলের কম্পাউন্ডের ভেতরে অবস্থান নিয়ে প্রতিরোধ চালিয়ে গেলেও চারদিক থেকে ঘিরে ফেলা রুশ বাহিনী তাদের আত্মসমর্পণে নতুন সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে।

ইউক্রেইনীয় সেনাদের অস্ত্র নামিয়ে রাখতে রাশিয়া বুধবার গ্রিনিচ মান সময় বেলা ১১টা (মস্কোর স্থানীয় সময় দুপুর ২টা) পর্যন্ত সময় দিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ইউক্রেইনের রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা জানিয়েছে, বুধবার দুপুর ২টার কিছুক্ষণ আগে মাত্র পাঁচ জন ইউক্রেইনীয় আত্মসমর্পণ করেছে। এর আগেরদিন রুশ বাহিনীর দেওয়া আরেকটি আল্টিমেটামের মধ্যে কোনো ইউক্রেইনীয় আত্মসমর্পণ করেনি বলে এর আগে জানিয়েছিল রাশিয়া।

মারিউপোলের রাস্তায় রাশিয়ার একটি ট্যাঙ্ক। ছবি: রয়টার্স

মারিউপোলের রাস্তায় রাশিয়ার একটি ট্যাঙ্ক। ছবি: রয়টার্স

মারিউপোলের বন্দরটি মধ্যপ্রাচ্য ও অন্যত্র ইস্পাত, কয়লা ও গম রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হওয়ায় এর নিয়ন্ত্রণ পেলে রাশিয়া বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবে; বিপদে পড়বে ইউক্রেইন।

ইউক্রেইনের মিলিশিয়া ইউনিট আজভ ব্রিগেডের সদরদপ্তর হওয়ায় এই শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া অভিযানের শুরু থেকেই রাশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মস্কো ইউক্রেইনকে ‘নাৎসিমুক্ত’ করার যে ঘোষণা দিয়েছিল, তা আজভ ও ইউক্রেইনের সামরিক বাহিনীর কট্টর ডানপন্থি অংশকে লক্ষ্য করেই দেওয়া বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।

বিবিসি বলছে, কট্টর-ডান উগ্রবাদী আজভ ব্রিগেড ইউক্রেইনের সামরিক বাহিনীর অতি ক্ষুদ্র অংশ হলেও এর সদরদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ মস্কোকে তার অভিযানের সপক্ষে প্রচার ও যুক্তি দেওয়ার ব্যাপক সুযোগ করে দিতে পারে। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এর নিয়ন্ত্রণ পাওয়া ক্রেমলিনের মুখরক্ষাও করবে; রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম দিয়ে তারা তখন ইউক্রেইনে তাদের লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে, তা দেখাতে পারবে।

মারিউপোলের ডেপুটি মেয়র জানিয়েছেন, অবরুদ্ধ শহরটিতে এখনও প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার বাসিন্দা আটকা পড়ে আছেন এবং তারা খাবার, পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটে ভুগছেন।