মঙ্গলবার নিউ মার্কেট এলাকায় দিনভর সংঘর্ষের পর রাজধানীর
বিভিন্ন এলাকার সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নামতে পারে বলে সতর্ক রয়েছে পুলিশও।
সোমবার রাতে ঢাকা কলেজের কয়েক শিক্ষার্থী নিউ মার্কেট
এলাকায় দোকানকর্মীদের হাতে মারধরের শিকার হলে তার জেরে রাতের পর মঙ্গলবার দিনভর সংঘর্ষ
চলে। এতে একজন নিহত এবং অর্ধশত আহত হয়।
কলেজ শিক্ষার্থী ও দোকানকর্মীদের সংঘর্ষের কারণে
নিউ মার্কেট ও ঢাকা কলেজ সংলগ্ন মিরপুর সড়ক মঙ্গলবার সারাদিন বন্ধ ছিল। এতে তীব্র যানজট
হয় রাজধানীর অন্য সড়কে।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ
করেছেন ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরা; বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে পুরান ঢাকার কবি
নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাতটি কলেজের মধ্যে
ঢাকা, ইডেন ও কবি নজরুল কলেজ ছাড়াও রয়েছে বদরুন্নেসা কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজ, মিরপুর
বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজ।
কবি নজরুল কলেজে
বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শিমুল আহমেদ বলেন, “শিক্ষার্থীদের উপর এমন বর্বর হামলার
প্রতিবাদ জানাই আমরা। দ্রুত এর বিচার না হলে আমরা সাত কলেজ পুরো ঢাকা শহর অচল করে দেব।
“ব্যবসায়ীদের সাহস হয় কীভাবে শিক্ষার্থীদের
গায়ে হাত তোলার? পুলিশও রবার বুলেট ও টিয়ার সেল ছুড়েছে। প্রশাসনের দ্রুত এর সমাধান
করা উচিৎ।”
এই হামলার দ্রুত
বিচার না হলে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়া হবে বলে জানান আরেক শিক্ষার্থী ইসাক নূর।
তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের উপর এই হামলার বিচার
না হলে আমরা রাজপথ ছাড়বো না।”
সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা
যদি বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভে নামে তাহলে রাজধানীর অনেক সড়ক আটকে গেলে ভয়াবহ যানজট দেখা
দেবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ
কমিশনার মোহা, শফিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা
বিক্ষোভে নামতে পারে বলে তারাও ধারণা করছেন এবং সেজন্য প্রস্তুতিও রাখছেন।
তিনি বলেন, “আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। তবে বিভিন্ন
কলেজ থেকে যদি ছাত্ররা রাস্তায় নেমে যায়, তখন তো আর নিয়ন্ত্রণে থাকে না। একটা কর্নার
থেকে সে রকম চেষ্টা করা হচ্ছে, বিভিন্ন জায়গা থেকে নামানোর।”
মঙ্গলবারের পরিস্থিতি
সামাল দিতে না পারলেও পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে বলে মানতে রাজি নন তিনি।
এখনও পরিস্থিতি কেন নিয়ন্ত্রণে আসছে না- এই
প্রশ্নে মঙ্গলবার রাতে শফিকুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গুলি করে তো আর মানুষ মারতে পারব
না। আমরা আমাদের মতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। এটা যাতে আর না বাড়ে … তাদের যারা নিয়ন্ত্রণ
করে শিক্ষক, ছাত্র নেতারা, ব্যবসায়ীদের, সবাইকে লাগানো হয়েছে।”
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ব্যর্থতা রয়েছে
কি না- প্রশ্ন করা হলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “ব্যর্থতার কী আছে? সবাই মিলে চেষ্টা করা হচ্ছে। শিক্ষকরা চেষ্টা করছেন, ছাত্রনেতারা
চেষ্টা করছেন, ব্যবসায়ী নেতারা চেষ্টা করছেন।
“তারা (সংঘর্ষকারীরা)
কথা শুনছেন না। উচ্ছৃঙ্খল কেউ যদি কথা না শুনে ….. এখন সমঝোতা ছাড়া কোনো রাস্তা নেই। শক্তি
প্রয়োগ করে সংঘাতে লিপ্ত হয়ে কোন সমাধান হবে না।”
আরও পড়ুন