পুরোদমে কাটা মাড়াইয়ের মাত্র ২০/২৫ দিন আগে বুধবার ভোর রাতে বয়ে যাওয়া এ ঝড়ে জেলার অধিকাংশ এলাকার আধাপাকা বোরো ধান নুয়ে পড়েছে।
এতে জমিতে পানি জমে ধান পঁচে ও চিটা হয়ে প্রায় ১ লাখ হেক্টর জমির প্রতি বিঘায় ৪/৫ মণ ফলন কম হবার শঙ্কা করছেন বোরো চাষিরা। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে নিচু এলাকার জলাবদ্ধ জমি থেকে আধাপাকা ধান কেটে নিচ্ছেন তারা।
জেলার রানীনগর উপজেলার কালিগ্রাম গ্রামের বোরো চাষি ওহাদুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও রোগবালাই এবং পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম হওবার কারণে এ বছর বোরো ধানে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছিলেন তারা। কিন্তু ১৫-২০ মিনিটের কাল বৈশাখীর ছোবলে কৃষকের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত করেছে।
মহাদেবপুর উপজেলার পাহাড়পুর এলাকার সাইফুল ইসলাম, উত্তরগ্রামের আব্দুর রশিদ আত্রাই উপজেলার হাট কালুপাড়া গ্রামের সোহেলরানা, আমজাদ হোসেন ও মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম জানান, এখন জমিতে ধান শুয়ে পড়ায় ধানে চিটা হবে এবং জলাবদ্ধ জমিতে থাকা ধান পঁচে যাবে। এর ফলে প্রতিবিঘায় ধান ৪/৫ মণ কম হবে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নওগাঁ সদরের বরুনকান্দি গ্রামের বোরো চাষি আব্দুল মালেক বলেন, বুধবার ভোর রাতের ঝড়বৃষ্টিতে তারসহ মাঠের সমস্ত ধান ‘বিছানা নিয়েছে’ (নুয়ে পড়েছে)। জমিতে পানি জমে গেছে। তাই বাধ্য হয়েই আধা পাকা ধান কেটে ঘরে তুলছেন।
এ অবস্থায় প্রতিবিঘায় ধানে ফলন ৫/৭ মণ কম হবে বলে আশঙ্কা তারও।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল ওয়াদুদ জানান, জেলায় চাষকৃত ১ লাখ ৮৯ হাজার চারশ হেক্টর জমির মধ্যে বৈশাখীর ঝড়বৃষ্টিতে ৫৬ হাজার ২৪০ হেক্টর জমির কাঁচা ও আধাপাকা ধান নুয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছে।
যে সব আধাপাকা ধানের দানা শক্ত হয়েছে এসব ধানের কোন ক্ষতি হবে না। আর যে সব ধানের দানা কেবল বের হচ্ছে ই ধান গুলোর কিছুটা ক্ষতি হতে পারে ।
ধানের কতটা ক্ষতি হয়েছে এমন প্রশ্নে এই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, “ত্যাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতির পরিমাণ বলা মুশকিল। এটা ৩/৪ দিন পরে ক্ষতির বলা যাবে।”
ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে কিছু ধান ক্ষতির মুখে পড়ে কিছুটা ক্ষতি হলেও জেলার বোরো ধানের মূল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রায় কোন প্রভাব পড়বে না বলে জানালেন এই কৃষি কর্মকর্তা।