মামলাগুলো বৃহস্পতিবার আদালতে ওঠার পর এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিল করতে ঢাকা মহানগর হাকিম শুভ্রা চক্রবর্তী আগামী ৭ জুন দিন রাখেন।
তিন মামলার মধ্যে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের একটি মামলা করেছেন নিউ মার্কেট থানার এসআই মেহেদী হাসান। একই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়ামিন কবির দাঙ্গা-হাঙ্গামা, জ্বালাও-পোড়াও, পুলিশের কাজের বাধা দেওয়ার অভিযোগে আরেকটি মামলা করেছেন।
সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে নিহত ডেলিভারিম্যান নাহিদ মিয়ার চাচা মো. সাঈদের দায়ের করেন হত্যা মামলা।
তিন মামলায় শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ প্রায় ১৪ শ মানুষকে আসামি করা হয়েছে।
নিউ মার্কেটে সংঘর্ষ: তিন মামলায় আসামি সহস্রাধিক
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দোকানকর্মীদের রক্তক্ষয়ী ওই সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছিল গত সোমবার রাতে। ওই রাতে নিউ মার্কেটের একটি খাবারের দোকানে ঢাকা কলেজের কয়েকজন ছাত্র মারধরের শিকার হয়।
দোকান মালিকরা জানান, দুই দোকানের কর্মীদের বচসা থেকে এক পক্ষ ঢাকা কলেজ ছাত্রাবাস থেকে ছাত্রলীগের কয়েক কর্মীকে ডেকে আনে। তারা গিয়ে মারধরের শিকার হওয়ার পর ছাত্রাবাসে ফিরে এলেও রাতেই শিক্ষার্থীদের নিয়ে মধ্যরাতে নিউ মার্কেটে হামলা চালাতে গেলে বাঁধে সংঘর্ষ।
পরদিন মঙ্গলবার দিনভর চলা এই সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন। তাদের মধ্যে নাহিদ মিয়া নামের ১৮ বছর বয়সী এক তরুণকে রাস্তার উপর কোপানো হয়।
এলিফ্যান্ট রোডের ডাটা টেক কম্পিউটার নামের একটি দোকানের ডেলিভারি অ্যাসিসটেন্ট হিসেবে কাজ করতেন নাহিদ। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
‘গরিব বইলা কেউ বিচারের কথা কয় না’
পুলিশের করা সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাহিদের মাথার বাম পাশে পাশাপাশি চারটি কাটা জখম ছিল, জখমগুলো দুই থেকে সাড়ে তিন ইঞ্চি লম্বা। চারটি জখমে ২৩টি সেলাই দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা।
পিঠের বাম পাশে পাশাপাশি তিনটি কাটা জখম। যার প্রত্যেকটি পাঁচ ইঞ্চি করে লম্বা। বাঁ পায়ের গোড়ালির নিচে কাটা জখমেও পাঁচটি সেলাই লেগেছিল, এছাড়া উভয় পায়ের বিভিন্ন জায়গায় নীল-ফোলা কালা জখম ছিল। নাক, মুখের ছোলা জখম ছিল।
মঙ্গলবার সংঘর্ষের মধ্যে ইটের আঘাতে আহত মোরসালিন নামের এক দোকান কর্মচারীও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে বৃহস্পতিবার ভোরে। এ বিষয়ে এখনও কোনো মামলা হয়নি থানায়।
সংঘর্ষের সময় শিক্ষার্থী ও দোকানকর্মীরা পরস্পরের দিকে অবিরত ইট ছুড়ছিল, অনেকগুলো হাতবোমার বিস্ফোরণও ঘটে।
দুই পক্ষের সমঝোতার পর দুদিন বাদে বৃহস্পতিবার নিউ মার্কেটসহ ওই এলাকার বিপণি বিতানগুলো খুলেছে।
ব্যস্ত নিউ মার্কেট এলাকায় দিনভর সংঘাত, কার কী দায়?