ক্যাটাগরি

মারিউপোলে আটকা পড়া সেনাদের সরিয়ে নিতে কিইভের আলোচনার প্রস্তাব

আলোচনার বিষয় হিসেবে ইস্পাত কারখানাটিতে আটকা পড়া বেসামরিক ও সেনাদের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ বন্দিদের বিনিময় করার প্রস্তাব দিয়েছেন কিইভের জ্যেষ্ঠ আলোচকরা।

ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও প্রধান আলোচক মিখাইলো পদোইলাক বুধবার এক টুইটে বলেছেন, “আজভ (ব্যাটেলিয়ন), সামরিক বাহিনী, বেসামরিক, শিশু, বেঁচে থাকা আহতদের- আমাদের এসব লোকদের বাঁচাতে কোনো শর্ত ছাড়াই বিশেষ পর্যায়ের আলোচনার জন্য ইউক্রেইন প্রস্তুত।”

মারিউপোলের অবশিষ্ট ইউক্রেইনীয় সেনারা বিশাল আজভস্তাইল ইস্পাত কারখানায় অবস্থান নিয়ে প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু তাদের পক্ষে আর বেশিক্ষণ হয়তো প্রতিরোধ অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে না বলে বুধবার সকালে জানিয়েছেন সেখানে থাকা ইউক্রেইন মেরিনের একজন কমান্ডার।

রাশিয়া মস্কোর স্থানীয় সময় বুধবার দুপুর ২টার মধ্যে তাদের আত্মসমর্পণের চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিলেও আজভস্তাইলের সেনারা তা অগ্রাহ্য করে। আত্মসমর্পণ না করে প্রতিরোধ চালিয়ে যাবে বলে জানায় তারা।

ইউক্রেইনের দ্বিতীয় আরেক আলোচক দাভিদ আরাখামিয়া এক অনলাইন পোস্টে জানিয়েছেন, মারিউপোলে থাকা ইউক্রেইনীয় বাহিনীগুলোর সঙ্গে তার ও পদোইলাকের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আছে।

তিনি বলেন, “আজ শহরটির প্রতিরোধকারীদের সঙ্গে এক কথোপকথনে আমাদের সামরিক গ্যারিসন সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সরাসরি আলোচনার জন্য একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যে কোনো সময় রাশিয়ার পক্ষ থেকে নিশ্চয়তা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এ ধরনের আলোচনার জন্য সেখানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি আমরা।” 

মারিউপোলের প্রতিরোধে নেতৃত্ব দেওয়া ও এখন ইউক্রেইনীয় সশস্ত্র বাহিনীর অংশ হয়ে ওঠা আজভ ব্যাটেলিয়নের একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য জানিয়েছেন, রাশিয়া অস্ত্র নামিয়ে রেখে আত্মসমর্পণ করার যে প্রস্তাব দিয়েছে তা তারা প্রত্যাখ্যান করেছেন।

তার বদলে বেসামরিকদের চলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার একটি চুক্তি করতে বলেছে তারা। রাশিয়ার ধারাবাহিক গোলাবর্ষণ এবং ‍অস্ত্রবিরতি বজায় রাখার ব্যর্থতার কারণে বেসামরিকদের সরিয়ে নেওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।   

উগ্র-ডানপন্থি এই আজভ ব্যাটেলিয়নকে ‘নব্যনাৎসি’ বলে অভিহিত করেছে রাশিয়া। ইউক্রেইনকে ‘নব্যনাৎসী’ মুক্ত করতে দেশটিতে তারা ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ চালাচ্ছে বলে দাবি রাশিয়ার।

এক ভিডিও আবেদনে আজভ ব্যাটেলিয়নের ডেপুটি কমান্ডার সেভিয়েতোস্লাভ পালামার বলেছেন, “আমি এই নিশ্চয়তা বহাল রাখার আহ্বান জানাই। শুধুমাত্র তৃতীয় একটি পক্ষের সাহায্যেই বেসামরিকরা ইস্পাত কারখানাটি ছাড়তে পারবেন।”  

তিনি জানান, আজভ ব্যাটেলিয়ন পদোইলাক ও আরাখামিয়াকে মারিউপোল গিয়ে শীর্ষ রুশ আলোচকদের সঙ্গে কথা বলতে বলেছে।

“আমাকে এটা বলতে দিন, রুশ ফেডারেশন আমাদের অস্ত্র নামিয়ে রাখার ও আমাদের প্রতিরোধকারীদের বন্দি হিসেবে তাদের হাতে ধরা দেওয়ার যে শর্ত দিয়েছে আমরা সেগুলো প্রত্যাখ্যান করছি,” বলেছেন পালামার। 

বুধবার ইউক্রেইন অভিযোগ করে বলেছে, স্থানীয়ভাবে একটি অস্ত্রবিরতি সমঝোতা হলেও রুশ বাহিনীগুলো সেটি মানেনি, ওই সমঝোতা মানলে নারী, শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিসহ বহু লোককে শহরটি থেকে সরিয়ে নেওয়া যেতো।

আরও খবর:

মারিউপোলের সেনাদের আত্মসমর্পণে রাশিয়ার নতুন সময়সীমা
 

ইউক্রেইনের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যে রাশিয়ার নতুন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা
 

মারিউপোলে কী হচ্ছে, শহরটি কেন গুরুত্বপূর্ণ
 

আমাদের হাতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা আছে: মারিউপোলের মেরিন কমান্ডার
 

মারিউপোলের সেনাদের আত্মসমর্পণে রাশিয়ার নতুন সময়সীমা
 

ইউক্রেইন যুদ্ধ: শরণার্থীর সংখ্যা ৫০ লাখ ছাড়িয়েছে