ক্যাটাগরি

সমঝোতার পর সুনসান ঢাকা কলেজ

সোমবার রাতের সংঘর্ষের পর মঙ্গলবার দিনভর নিউ মার্কেট এলাকা ছিল রণক্ষেত্র । দুই পক্ষের মারামারিতে আহত হন অর্ধ শতাধিক, পরে তাদের দুজনের মৃত্যু হয়। বুধবারও পুরো এলাকা ছিল থমথমে, বিকালে কলেজ ফটকে বোমাবাজিও হয়।

বুধবার মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দীর্ঘ বৈঠকে শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা সমঝোতায় পৌঁছালে বৃহস্পতিবার সকালে নিউ মার্কেট খুলে দেওয়া হয়।

সকালে নিউমার্কেট এলাকায় দেখা যায়, সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। দোকান খুলে দেওয়ায় বেচাকেনা চলছে বিপণিবিতানগুলোতে।

সায়েন্সল্যাব থেকে নীলক্ষেত মোড় পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরও দেখা যায়। তবে ঢাকা কলেজের মূল ফটক বন্ধ রাখা হয়েছে। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের তেমন আনাগোনাও দেখা যায়নি।

উত্তেজনা কমে আসায় আবাসিক শিক্ষার্থীরা ছাত্রবাসে নিজেদের মত সময় কাটাচ্ছেন।

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস হলের ছাত্র হৃদয় হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ক্যাম্পাস তো একদম সুনসান, শান্ত স্বাভাবিক। আমরা যারা আছি হলে, নিজেদের মত কাজ করছি।”

বুধবার রাতে ১০ দফা দাবি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। ওই সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়া হৃদয় জানান, রাতের বৈঠকে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ায় তাদের মধ্যে আর ক্ষোভ নেই।

“কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হওয়ার শঙ্কা এখন নেই। আমাদের সব দাবিই মেনে নিয়েছে। নিউ মার্কেটের দোকান কর্মীরা প্রচুর খারাপ ব্যবহার করে। এটা নিয়ে সবার মধ্যে চাপা ক্ষোভ ছিল। এ বিষয়গুলোও দাবিতে ছিল, তারা মেনে নিয়েছে।”

রক্তক্ষয়ী এই সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ প্রায় ১৪শ জনকে আসামি করে তিনটি মামলা হয়েছে।

কলেজের পরিস্থিতি ও মামলা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি ঢাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এটিএম মইনুল হোসেন।

তবে অনার্স চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা দেওয়া হৃদয় হোসেন বলেছেন, “যেহেতু অজ্ঞানামাদের বিরুদ্ধে মামলা, চিন্তার কোনো কারণ নেই। আবার কারণ আছেও। তবে এগুলো নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এখনও তেমন প্রতিক্রিয়া নেই।”

সূচি অনুযায়ী শুক্রবার থেকে ঢাকা কলেজে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার কথা। তবে রোজার মধ্যে অনেকে আগেই হল ছেড়ে গেছেন। সংঘর্ষের মধ্যেও কিছু শিক্ষার্থী হল ছেড়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর হল ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন আরও অনেকে।

উত্তর ছাত্রাবাসের আবাসিক শিক্ষার্থী বেলায়েত হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সামনে ঈদ, কাল থেকে ছুটি। যারা বাড়িতে ঈদ করবে, তারা রেডি হচ্ছে। আস্তে আস্তে যাবে।”

তবে অনেক শিক্ষার্থী ছুটিতে ছাত্রাবাসেই থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, “হল ছাড়ার নির্দেশ মেনে কেউ যাচ্ছে না। যাদের এমনি যাওয়ার কথা, তারাই যাচ্ছে। হল বন্ধ থাকবে কেন? ঈদের দিনও হল খোলা থাকে, কিছু শিক্ষার্থী থাকে, সেটা থাকবে।”