বৃহস্পতিবার
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এক সার্কুলারে জানিয়ে দেওয়া
হয়েছে, কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো সুদ মওকুফ করতে পারবে না।
ব্যাংকিং
প্রবিধি ও নীতি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মাকসুদা বেগম স্বাক্ষরিত ওই সার্কুলারে বলা
হয়েছে, বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় না নিয়ে
ব্যাংক প্রায়ই গ্রাহকের অনুকূলে সুদ মওকুফ কর দিচ্ছে।
“এর
ফলে সুদ মওকুফ সুবিধা পাওয়ার জন্যে গ্রাহকরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাংকের পাওনা পরিশোধে অনাগ্রহী হতে পারে।”
নতুন
নীতিমালায় বলা হয়েছে, মূল ঋণ (আসল) কোন ভাবেই মওকুফ
করা যাবে না। এছাড়া ‘জাল-জালিয়াতির’ মাধ্যমে সৃষ্ট ঋণ এবং ‘ইচ্ছাকৃত
খেলাপি’ ঋণগ্রহীতার সুদ মওকুফ করা যাবে না।
কেন্দ্রীয়
ব্যাংক বলছে, ব্যাংকের আয় খাত বিকলন করে সুদ মওকুফ করা যাবে না।
কোনো
গ্রাহকের সুদ মওকুফের জন্য ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। তবে দশ লাখ টাকা পর্যন্ত মূল
ঋণের সুদ মওকুফের ক্ষমতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের
থাকবে।
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, সুদ মওকুফের ক্ষেত্রে ব্যাংকের তহবিল ব্যয় আদায়
নিশ্চিত করতে হবে। তবে তিন বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এমন প্রকল্পের
ক্ষেত্রে এই নিয়ম শিথিল করা
যাবে।
আবার যদি ঋণের জামানত, সহজামানত, প্রকল্প সম্পত্তি
এবং প্রকল্প উদ্যোক্তাদের ব্যক্তিগত সম্পদ বিক্রি করেও তহবিল ব্যয় আদায় করা সম্ভব
না হয়, সেক্ষেত্রেও ব্যাংকের তহবিল ব্যয় আদায়ের বিষয়টি শিথিলের
সুযোগ থাকবে।
পাওনা আদায়ের জন্য আইনগত ব্যবস্থাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পরও অর্থ
আদায় করা না গেলে ব্যাংকের তহবিল ব্যয়
আদায়ের বিষয়টি শিথিল
হবে।
ঋণগ্রহীতার মৃত্যু অথবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারী, মড়ক, নদী ভাঙ্গন বা দুর্দশাজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতা ‘যৌক্তিক
কারণে’ ঋণ পরিশোধে অপারগ হলে তহবিল ব্যয় আদায়ের বাধ্যবাধকতা শিথিল হবে।
নতুন
নীতিমলায় বলা হয়েছে, তহবিল ব্যয় আদায়ের শর্ত
শিথিল করার যৌক্তিকতা নিশ্চিত করতে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগের মাধ্যমে
নিরীক্ষা করাতে হবে এবং হেড অব ইন্টারনাল কন্ট্রোল অ্যান্ড
কমপ্লায়েন্স (এইচআইসিসি) এর মতামত নিতে হবে।
এছাড়া
আর্থিক বিবরণী পর্যালোচনা করে যদি দেখা যায়, ঋণের সুদ মওকুফের বিবেচনাধীন সময়ের কর পরবর্তী নিট মুনাফা
ইতিবাচক, তাহলে সুদ মওকুফ করা যাবে না।
সুদ মওকুফ করার ক্ষেত্রে ব্যাংকের নিজস্ব আর্থিক অবস্থার উপর কেমন প্রভাব
পড়বে, তাও পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে নতুন নীতিমালায়।
কোন ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, এবং তার পরিবারের সদস্যদের বা পরিচালকের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঋণের সুদ মওকুফের ক্ষেত্রে
অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে
এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে সার্কুলারে জানানো হয়েছে।