শুক্রবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বিশ্ব ধরিত্রী দিবস ২০২২’ উপলক্ষে ‘পৃথিবীকে রক্ষা করতে বাস্তুসংস্থানসমূহ নিরাপদ করি’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এই আহ্বান জানান।
হাছান মাহমুদ বলেন, “প্রকৃতির ওপর যে অত্যাচার আমরা করছি, এরপরও কিন্তু পরিবেশ আমাদের প্রতি বিরূপ হয়নি। যারা নিজের স্বার্থে পরিবেশ ও প্রকৃতি ধ্বংস করছে।
“যারা বড় বড় শিল্পপতি, তাদের স্বার্থে শিল্প উৎপাদনের জন্য পরিবেশ প্রকৃতি মাথায় না রেখে নদীকে গলা টিপে মারছে, তারা দেশ, জাতি ও মানুষের শত্রু। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
পরিবেশের প্রতি যত্মশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, “আজকে পৃথিবী উষ্ণ হচ্ছে। এই যে তাপমাত্রা বাড়ছে এটা আমাদের কারণে বাড়ছে।
“শুধু তাপমাত্রা বাড়ছে না সমুদ্র পৃষ্টের উচ্চতা বাড়ছে, বরফ গলছে, আরো অনেক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। এগুলো পৃথিবীর উষ্ণায়নের কারণে ঘটছে।”
পরিবেশ রক্ষায় দেশের মানুষ সচেতন নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ঢাকা শহরে দুই কোটি মানুষ বাস করে। সবাই মনে করে, পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব শুধু ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের।
“এইভাবে তো একটা শহর কোনোভাবে বসবাস উপযোগী রাখা সম্ভব না।”
যথেচ্ছ পলিথিন ব্যবহারের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, “আমি নিজে কখনো পলিথিন ব্যবহার করি না। পলিথিন বন্ধে একটা আইন আছে, কিন্তু এখন সবকিছুতে পলিথিন দেওয়া হয়।
“কিছুদিন অভিযান পরিচালনা করে আবার হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। মানুষ যদি পলিথিন না নিত তাহলে পলিথিন আসত না। মানুষকে সচেতন করতে হবে। না হলে কোনো কিছুই রক্ষা পাবে না।”
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির আয়োজনে এ সেমিনারে পরিবেশ রক্ষায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও ভূমিকার কথা তুলে ধরেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, “পরিবেশ রক্ষা এই স্পিড সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব।”
গণমাধ্যমে ধরিত্রী দিবসের প্রতিবেদন না থাকায় উষ্মা প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, “দু’একটি ছাড়া কোনো পত্র-পত্রিকা এমনকি কোনো টেলিভিশনেও কোনা প্রতিবেদন দেখলাম না। তাতে আমি হতাশ হয়েছি।
“দেশের কোনো জায়গায় আগুন লাগলে এমনভাবে ফলাও করে দেখায়, লাইভ করে, যেন সারা দেশ আগুনে পুড়ছে। পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেলে অন্য সংবাদের আর গুরুত্ব থাকে না।”
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও উপ কমিটির সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন বলেন, “জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য নিরাপদ ও বাসযোগ্য আগামী নিশ্চিত করতে পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।”
বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির চোরম্যান অধ্যাপক বজলুল হক খন্দকারের সভাপতিত্বে সেমিনারে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্স স্টাডিজের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আতিক রহমান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক নাসরিন আহমেদ, বাংলাদেশ কাউন্সিল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইন্ডস্ট্রিয়াল রিসার্চ-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক আফতাব আলী শেখ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাহবুবা নাসরিন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।