শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোরের আগে একটি সেনানিবাসের কাছে শুরু হওয়া গোলাগুলিতে এ পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা ও ২ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিহত হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এক প্রতিবেদনে এনডিটিভি জানিয়েছে, ভোররাতে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো জম্মু শহরের সুনজুয়ান সেনানিবাস এলাকায় অভিযানে নামলে দুপক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, বিচ্ছিন্নতাবাদীরা জম্মু শহরে একটি হামলার পরিকল্পনা করছে তাদের কাছে এমন খবর ছিল।
কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী (সিআইএসএফ) বলেছে, তাদের বাহিনীর সদস্যদের বহনকারী একটি বাসে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা হামলা চালালে একজন সহকারী উপপরিদর্শক নিহত হন।
“সুনজুয়ানের গোলাগুলিতে এক সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। সুনজুয়ানে লুকিয়ে থাকা সন্ত্রাসীরা বড় ধরনের এক হামলার পরিকল্পনা করেছিল। নিরাপত্তা বাহিনীতে সর্বোচ্চ প্রাণহানি ঘটানোই তাদের লক্ষ্য ছিল,” বলেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশ প্রধান দিলবাগ সিং।
সিআইএসএফের এক কর্মকর্তা জানান, বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ভোরে তাদের ১৫ সদস্যকে বহনকারী একটি বাসে হামলা চালায়।
“সিআইএসএফ কার্যকরভাবে এর জবাব দেয় এবং সন্ত্রাসীদের পালিয়ে যেতে বাধ্য করে। এ ঘটনায় সিআইএসএফের এক কর্মকর্তা নিহত ও আরও ২ জন আহত হন,” বলেন তিনি।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোদীর রোববার জম্মুতে আসার কথা রয়েছে। ২০১৯ সালের অগাস্টে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্য মর্যাদা বিলুপ্ত করার পর থেকে সেখানে মোদীর প্রথম রাজনৈতিক সফর এটি। তার আগে গুরুত্বপূর্ণ একটি সামরিক ঘাঁটির কাছে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উপস্থিতি একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয়, বলছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
সফরে স্থানীয় পাল্লি গ্রামে এক জনসভায় মোদীর ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে। এ জনসভায় কয়েক হাজার পঞ্চায়েত সদস্য উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
এই সফরের আগে জম্মু ও কাশ্মীরে যে কোনো ধরনের হামলা রোধ করতে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীগুলো উচ্চ সতর্কাবস্থায় আছে।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সুনজুয়ানে অন্তত দুই জন বিচ্ছিন্নতাবাদী লুকিয়ে আছে এমন খবর পায় পুলিশ। তারা একটি অভিযান শুরু করে, কিন্তু শুরুতেই ব্যাপক গুলির মুখে পড়ে। এতে এক সিআইএসএফ কর্মকর্তা নিহত ও আরও ৪ জন আহত হন। এরপর দুপক্ষের মধ্যে তীব্র বন্দুক লড়াই শুরু হয়।
জম্মু পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মুকেশ সিং বলেন, “সন্ত্রাসীরা এখানে লুকিয়ে থেকে হামলা পরিকল্পনা করছে, এমন খবরে রাতে ওই এলাকাটি ঘিরে রাখি আমরা। সকালে পুলিশ ঘেরাও লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। এতে নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্য নিহত ও আরও চার জন আহত হয়। গোলাগুলি চলছে।”
এর আগে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই সুনজুয়ান সেনানিবাসে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছিল।
গত মাস থেকে কাশ্মীর উপত্যকায় বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলায় চার পঞ্চায়েত সদস্য এবং বেশ কয়েকজন অভিবাসী শ্রমিক আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কাশ্মীরের বারামুল্লা জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ৩ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিহত হয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে লস্কর-ই-তৈয়বা দলের এক কমান্ডার রয়েছে, এমনটি জানিয়েছে তারা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সেখানে শুরু হওয়া নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান এখনও অব্যাহত আছে। এলাকাটিতে বেশ কয়েকজন বিচ্ছিন্নতাবাদী লুকিয়ে আছেন বলে ধারণা নিরাপত্তা বাহিনীর।