ক্যাটাগরি

গুগল, মেটার ‘অবৈধ’ কনটেন্ট রোধে নতুন নিয়ম ইইউ’র

‘ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট (ডিএসএ)’
নামে নতুন এই ইন্টারনেট নীতিমালার চুক্তির ঘোষণাটি এসেছে শনিবার।

রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, প্রায় ১৬
ঘন্টার বেশি সময় ধরে আলোচনার পর  চূড়ান্ত হয়েছে
এই নীতিমালা।

ইইউ অ্যান্টিট্রাস্ট প্রধান মার্গ্রেথ
ভেস্টাগারের কৌশলের দ্বিতীয় অংশ হিসেবে চালু হয়েছে ডিএসএ। নতুন এই নীতিমালা গুগল, মেটার
মতো অন্যান্য মার্কিন টেক জায়ান্টদের লাগাম টেনে ধরতে সহায়তা করবে বলে ধারণা রয়েছে।

গত মাসেই ‘ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট
(ডিএমএ)’ নামের যুগান্তকারী নীতিমালার পক্ষে ইইউ’র ২৭টি দেশের ব্লক ও আইন প্রণেতাদের
কাছ থেকে সমর্থন পেয়েছেন ভেস্টাগার।

এই নীতিমালা গুগল, অ্যামাজন, অ্যাপল,
মেটা ও মাইক্রোসফটকে ইউরোপে তাদের মূল ব্যবসায়িক অনুশীলনগুলো বদলাতে বাধ্য করতে পারে
বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।

“আমাদের ডিএসএ-তে একটি
সমঝোতা আছে: ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট নিশ্চিত করবে, অফলাইনে যা ‘অবৈধ’ হিসেবে বিবেচিত,
অনলাইনেও সেটিকে ‘অবৈধ’ হিসেবে বিবেচনা ও মোকাবেলা করা হবে।” –টুইট করেছেন ভেস্টাগার।

“শুধু একটি স্লোগান
হিসেবে নয়, বরং বাস্তবতা হিসেবে!”

 

ইইউ’র আইন প্রণেতা দিতা শারানজোভা এই
চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি এমন নিয়ম চালুর আহ্বান জানিয়েছিলেন আট বছর আগেই।

“গুগল মেটা এবং অন্যান্য শীর্ষ অনলাইন
প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহারকারীর সুরক্ষায় আরও ভালোভাবে কাজ করতে হবে। ইউরোপ এটি স্পষ্ট
করেছে যে, তারা  ‘স্বাধীন ডিজিটাল দ্বীপ’ এর মতো কাজ করতে পারবে না।”
–এক বিবৃতিতে বলেছেন শারানজোভা।

“যেহেতু আইনটি চুড়ান্ত ও কার্যকর হয়েছে,
এটির বিবরণ গুরুত্ব বহন করবে। আইনটি যেন সকলের জন্য কাজ করে, সেটি নিশ্চিত করতে ও প্রযুক্তিগত
বিবরণ সঠিকভাবে পেতে, আমরা নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কাজ করতে উন্মুখ।” –এক বিবৃতিতে
জানিয়েছে গুগল।

ডিএসএ অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন
নীতিমালা লঙ্ঘন করলে নিজেদের বৈশ্বিক আয়ের ৬ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানার মুখোমুখি হতে পারে।
এমনকি, নিয়ম বার বার লঙ্ঘন করলে ইইউ-তে তাদের ব্যবসাও নিষিদ্ধ হতে পারে।

নতুন নীতিমালায় শিশুদের লক্ষ্য করে বানানো
অথবা ধর্ম, লিঙ্গ, বর্ণ এবং রাজনৈতিক মতামতের মতো ‘টার্গেটেড’ বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ হচ্ছে।

এ ছাড়া, যেসব ‘ডার্ক প্যাটার্ন’ মানুষের
ব্যক্তিগত ডেটাকে, কৌশলে বিভ্রান্তির মাধ্যমে অনলাইন কোম্পানিগুলোকে দিতে সহায়তা করে,
সেগুলোও নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।

শীর্ষ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং অনলাইন
সার্চ ইঞ্জিনগুলোকে একটি সংকট চলাকালীন সময়ে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে। ইউক্রেইনে
রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসন এবং এ সম্পর্কিত ‘গুজব’ ঠেকাতে এই পদক্ষেপের বিষয়টি আরও জোরালো
হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানগুলো
নিজস্ব অ্যালগোরিদমের ডেটা দিতে বাধ্য হতে পারে ইইউ পর্যাবেক্ষক ও গবেষকদের কাছে।

পাশাপাশি, প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈশ্বিক বার্ষিক
আয়ের ০.০৫ শতাংশ পর্যন্ত তাদের কার্যক্রমের মনিটরিং বাবদ খরচ করতে হতে পারে।

অন্যদিকে, মাঝারি আকারের প্রতিষ্ঠানগুলোকে
এই নীতিমালা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সমালোচনা করেছেন ইইউ’র আইন প্রণেতা মার্টিন শিরদেওয়ান।

“রক্ষণশীলদের চাপে মাঝারি আকারে প্রতিষ্ঠানগুলোর
ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নিয়ম চালু হয়েছে, এটি একটি ভুল।” –বলেছেন শিরদেওয়ান।

“যেহেতু অনেক প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল সেক্টরের
এই সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে, সেক্ষেত্রে এমন ব্যতিক্রম একটি ফাঁকির মতোই।”

২০২৪ সাল থেকে ডিএসএ জারি হবে বলে প্রতিবেদনে
উল্লেখ করেছে রয়টার্স।