তাছাড়া পুলিশের বিরুদ্ধে মনগড়া
এজাহারে সই নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশ নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
নিহত নজির আহামেদ
সাপু (৪০)
সরাইল উপজেলার নিজ-সরাইল গ্রামের মোল্লাবাড়ির
ওবায়দুল্লাহর ছেলে।
সরাইল থানার ওসি
আসলাম আহমেদ
বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,
“বৃহস্পতিবার রাতে নজির আহামেদের
বাড়িতে চুরি
হওয়ার সময়
এক চোরকে
আটক করে
বাড়ির সদস্যরা। গণপিটুনিতে চোর আহত
হয়। খবর পেয়ে
পুলিশ গিয়ে
চোরকে আটক
করে থানায়
নিয়ে আসে।
“মামলা করার জন্য
নজির আহামেদও থানায় অসেন। মামলার আগে গণপিটুনিতে আহত
চোরকে চিকিৎসার
জন্য পুলিশ
পাহারায় হাসপাতালে
নেওয়ার সময় নজিরও সঙ্গে ছিলেন।
কিন্তু হাসপাতালে যাওয়ার পথে
হৃদরোগে আক্রান্ত
হন নজির আহামেদ। তাকে সরাইল উপজেলা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর তার
মৃত্যু হয়।”
সে সময় সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালন করছিলেন চিকিৎসক
ফজলে রাব্বী।
ফজলে রাব্বী বলেন, “বৃহস্পতিবার
রাত ১০টা
৪০ মিনিটে
পুলিশ নজির
আহামেদকে নিয়ে
হাসপাতালে আসে। পথেই
তার মৃত্যু
হয় এবং
হাসপাতালে আনার পর তাকে মৃত
ঘোষণা করা
হয়। নজির আহামেদের
শরীরে কোনো
আঘাতের চিহ্ন
ছিল না।”
ওসি আসলাম বলেন, চুরির ঘটনায়
নিহত নজির আহামেদের বড় ভাই
জাফর আহামেদ
বাদী হয়ে
১৩ জনের
বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এর মধ্যে
আটক জুম্মান মিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। জুম্মান একই এলাকার বাসিন্দা।
তবে জাফর আহামেদের দাবি, পুলিশ
তাদের ইচ্ছামত এই এজাহার লিখে বাদী হিসেবে তার সই নিয়েছে।
এ সম্পর্কে জেলার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ
সুপার মোল্লা
মোহাম্মদ শাহীন
বলেন, “পুলিশ হেফাজতে নজি আহামেদের মৃত্যু
হয়নি।”
ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি
মামলার নথির বরাতে বলেন, “একটি বসতভিটা
নিয়ে পূর্বশত্রুতার
জেরে বৃহস্পতিবার
দুপুরে ঝগড়া
হয় নজির আহামেদ ও জুম্মানের মধ্যে। জুম্মান
মিয়া ওই দিন রাত
সাড়ে ৮টার
দিকে নজির আহমেদের শয়নকক্ষে
তাকে হত্যার জন্য প্রবেশ
করেন। কিন্তু রজির আহামেদ তাকে ধরে
ফেলেন। খবর পেয়ে
পুলিশ গিয়ে
জুম্মানকে হেফাজতে নেয়। তাকে থানায় নেয় পুলিশ। নজির আহামেদও থানায় যান মামলা করার
জন্য। পথে নজির আহামেদ অসুস্থ হয়ে
পড়লে পুলিশের
সহায়তায় তাকে
হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত
ঘোষণা করেন।”
নজির আহামেদের ভাই জাফর
আহামেদ এই এজাহারকে পুলিশের সাজানো বলে দাবি করেন।
জাফর আহামেদ বলেন, “আমার
ভাই মারা
যাওয়ার পর
আমরা সরাইল
হাসপাতালে যাই। সেখানে
নিহত ভাইয়ের
বুকে একটি
ফোলা জখম
দেখতে পাই। সুরতহাল প্রতিবেদনে এটা লেখার
দাবি জানাই
আমরা। কিন্তু
পুলিশ তা লিখতে আপত্তি করে। পরে থানা থেকে
আমাদের ফোন
করে ডেকে
নিয়ে মামলা
করতে বলে। আমরা বলেছি মামলা
পরে করব। কিন্তু পুলিশ বলেছে, মামলা পরে
করলে মেরিট
নষ্ট হবে।
“তখন তাদের লেখা
এজাহারে আমি
স্বাক্ষর দেই। পুলিশ আমাদের ‘ইমোশনালি
ব্ল্যাকমেইল করেছে।
পুলিশ বলছে আমার ভাই হৃদরোগে মারা গেছে। তারা কিভাবে বুঝল
হৃদরোগে মারা
গেছে? পুলিশ
আসামি জুম্মানকে থানায় নেওয়ার সময় আমার ভাইকেও
থানায় নিয়ে
যায়। তখন
ভাইয়ের সঙ্গে
আমাদের কেউ
ছিল না।”
জাফর আহমেদ বিডিনিউজ
টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুলিশের শারীরিক
ও মানষিক
নির্যাতনে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।”
তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি
করেন।