সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অস্বাভাবিক উঁচু-নিচু হওয়ায় যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। ধীর হয়ে যাচ্ছে গাড়ির গতি।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে ঢাকামুখী লেইনের সড়ক দখল করে বাজার ও দোকানপাট বসেছে। এতে সড়ক সংকীর্ণ হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। শিমরাইল মোড়ে অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ডে ট্রাক দাঁড় করিয়ে রাখার কারণেও জট লাগে।

ঢাকা-টেকনাফ পথের সেন্টমার্টিন প্লাস পরিবহনের মালিক তারা মিয়া বলেন, “ঈদে চাপ বাড়লে নারায়ণগঞ্জের শিমরাইল, মদনপুর, মোগড়াপাড়া ও মেঘনা টোলপ্লাজা এলাকায় জট লাগতে পারে। শিমরাইলের ঢাকামুখী রাস্তায় জট হতে পারে।”
মদনপুর চৌরাস্তায় এলোপাতাড়ি বাস ও অন্যান্য ছোট যান দাঁড় করিয়ে রাখায় যানজটের সৃষ্টি হয়। সাইনবোর্ড-শিমরাইল অংশে উল্টো পথে লেগুনা, ইজিবাইক, অটোরিকশা চলাচল করে। তাছাড়া ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে ছয় লেইনের কাজ চলছে। এই অংশেও গাড়ির চাপ বেশি থাকবে বলে গাড়িচালকরা জানান।
সাইনবোর্ড এলাকার বাসিন্দা শামসুউদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, ঈদে গাড়ির চাপ থাকায় জট সৃষ্টি হয়। তাছাড়া সড়কের পাশে অবৈধ দোকানপাটের জন্যও জট লাগে।
বিপরীত দিক থেকে আসা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ ধীরগতির যানবাহন ও বাসস্ট্যান্ডে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে সিদ্ধিরগঞ্জ অংশে জট লাগে বলে অভিযোগ করেন মো. শহীদুল্লাহ্ নামে একজন বাসিমালিক।
একই এলাকার আজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, “ঈদে মানুষের বাড়ি ফেরার চাপ থাকে। এই সুযোগে ফিটনেসবিহীন গাড়িও টাকা কামানোর জন্য রাস্তায় নামানো হয়। বাসস্ট্যান্ড ছাড়া যাত্রী ওঠানামা করার কারণে জট লাগে।”

ঈদের সময় মদনপুর, সাইনবোর্ড, শিমরাইল থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত যানজট হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ঢাকা-বসুরহাট পথের ড্রিমলাইন পরিবহনের শিমরাইল কাউন্টারের ব্যবস্থাপক মো. সুমন।
তিনি বলেন, “মেঘনা সেতুতে সব টোলবুথ খোলা থাকলে এবং মহাসড়কে তিন চাকার পরিবহন না চললে তেমন সমস্যা থাকবে না।”
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে বরপা, রূপসী ও ভুলতা এলাকায় জটের আশঙ্কা রয়েছে। ভুলতায় সড়কের দুপাশে দেশের বৃহত্তম পাইকারি কাপড়ের বাজার রয়েছে। আর মহাসড়কের পাশে কর্ণগোপ এলাকায় রয়েছে বেশ কিছু পোশাক কারখানা। এসব কারখানায় ছুটি হলে কয়েক হাজার শ্রমিক একসঙ্গে বের হয়ে রাস্তা পারাপারের সময় জট লাগে। তাছাড়া সড়কের পাশে অবৈধ বাস ও ট্রাকের স্ট্যান্ড রয়েছে।
তারাব এলাকায় ময়লার ড্যাম্পিং স্টেশনের কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়।
রূপসী শিল্প এলাকায় সিটিসহ আশপাশের মিলগুলোর কয়েকশ মালবাহী ট্রাক চলাচল করায় জটের সৃষ্টি হয়। যত্রতত্র গাড়ি থামার কারণেও সৃষ্টি হয় জটের।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ওসি নবীর হোসেন বলেন, মহাসড়কের যে কয়টি পয়েন্টে যানজটের আশঙ্কা রয়েছে সেগুলো নিয়ে হাইওয়ে পুলিশ কাজ করবে। মদনপুর, শিমরাইল, বন্দর কেওঢালা ও মেঘনা টোল প্লাজায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
তাছাড়া বরপা, রূপসী, ভুলতাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে জট নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করবে বলেও জানান তিনি।
এবার ঈদে যানজটের ভোগান্তি ছাড়াই মানুষ বাড়ি ফিরতে পারবে বলে তার আশা।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম বলেন, “করোনাভাইরাসের প্রকোপের ফলে গত দুই বছর মানুষের বাড়িতে যাওয়ার হার কম ছিল। এবার দ্বিগুণের বেশি মানুষ গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাবেন। সে লক্ষ্যে সড়কের ভোগান্তি এড়াতে ট্রাফিক পুলিশের ৭০০ সদস্য মোতায়েন থাকবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অবস্থা ভালো আছে। তবে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে কাজ চলার কারণে যানজট হতে পারে।
“অবৈধ পার্কিং ঠেকাতে পুলিশ কাজ করবে। সড়কে কোনো গাড়ি বিকল হলে যেন দ্রুত সরিয়ে নেওয়া যায় সেই প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে।”