চট্টগ্রাম বন্দর দিবসের প্রাক্কালে রোববার বিকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এমন আশার কথা শোনান। প্রতি বছর ২৫ এপ্রিল বন্দর দিবস উদযাপন করা হয়।
তিনি বলেন, “এখন আমরা কলম্বো, পোর্ট কেলাং ও সিঙ্গাপুর বন্দরের ওপর নির্ভরশীল। মাতারবাড়ি পোর্ট হলে তখন আর অন্যের মুখাপেক্ষি হয়ে থাকতে হবে না।”
কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে চলমান বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি অবস্থানগত কারণে এটিকে বন্দর হিসেবে উন্নীত করতে চায় সরকার। এজন্য আগের প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ৫২ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
বন্দর নির্মাণের কাজের বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। দেশের প্রধান এ সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষের অধীনেই মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর পরিচালিত হবে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্মকর্তারা।
রোববার মতবিনিময় সভায় চবক চেয়ারম্যান শাহজাহান বলেন, বে-টার্মিনাল এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের নির্মাণ কাজ শেষ হলে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা তিন থেকে চারগুণ বেড়ে যাবে।
“নির্মাণকাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হলে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর হবে সাব রিজিওনাল হাব।“
চট্টগ্রাম বন্দরের বাস্তবায়নাধীন এ দুটি প্রকল্প শেষ হলে বড় আকারের জাহাজ অনায়াসে জেটিতে ভিড়তে পারবে জানিয়ে তিনি বলেন, বে টার্মিনালে ১২ মিটার ড্রাফটের (জাহাজের পানির নিচের অংশের গভীরতা) জাহাজ ভিড়বে।
“মাতারবাড়ির গভীর সমুদ্রবন্দরে ১৮ মিটার ড্রাফট ও ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ঢুকতে পারবে। এসব জাহাজে ১০ থেকে ১২ হাজার টিইইউএস কন্টেইনার ধরবে। অথচ চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে ঢুকতে পারে ৯ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফট এবং ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ।“
এখন পর্যন্ত প্রকল্প দুটির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে দাবি করে রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহজাহান বলেন, “মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ২৮৩ একর জমি কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। নির্মাণকাজের জন্য দ্রুতই দরপত্র আহ্বান করা হবে।”
চট্টগ্রাম বন্দরে ‘আরও বড়’ জাহাজ ভেড়ার পথ খুলছে
বিদ্যুৎকেন্দ্র: বড় হচ্ছে মাতারবাড়ি বন্দর-নগর, ব্যয় বাড়ল ১৬০০০ কোটি টাকা
এছাড়া বে টার্মিনালের জন্য প্রকল্পের ৬৭ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আরও ৮০৩ একর জমি নামমাত্র মূল্যে বন্দরের অনুকূলে বরাদ্দ দিতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে।“
মত বিনিময়কালে চেয়ারম্যান বন্দরের সাম্প্রতিক কার্যক্রমের তথ্য তুলে ধরেন। ২০২১ সালে দেশের প্রধান এ সমুদ্রবন্দরে ৩২ লাখ ১৪ হাজার টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। জেনারেল কার্গো ওঠানামা হয়েছে ১ কোটি ৬৬ লাখ টন। জাহাজ এসেছে ৪ হাজার ২০৯টি।”
এসময় বন্দরের সদস্য (অর্থ) কামরুল আমীন, সদস্য (হারবার মেরিন) কমডোর মোস্তাফিজুর রহমান, সদস্য (প্রকৌশল) ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
বন্দরের অগ্রগতি নিয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম।