মার্চ মাসে এক সিরিজ আক্রমণে টি-মোবাইলের
সোর্স কোড বেহাত হওয়ার খবর প্রথম জানিয়েছিল সাইবার নিরাপত্তা গবেষক ও সাবেক সংবাদকর্মী
ব্রায়ান ক্রেবসের ওয়েবসাইট ‘ক্রেবস অন সিকিউরিটি’। পরবর্তীতে, প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট
ভার্জকে সাইবার হামলার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছে মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানটি।
তবে, ‘হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়া সিস্টেমে
সেবাগ্রাহক, সরকারি বা একই ধরনের স্পর্শকাত তথ্য ছিল না,’ বলে দাবি আক্রান্তের।
ল্যাপসাসের সদস্যদের একে-অন্যকে পাঠানো
মেসেজের স্ক্রিনশট দেখার সুযোগ হয়েছে ক্রেবসের। হ্যাকার দলটির সাত কিশোর সদস্য ব্রিটিশ
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগের সপ্তাহেই টি-মোবাইল হ্যাকিং প্রসঙ্গে আলোচনা করছিল
তারা।
ভার্জ জানিয়েছে, প্রথমে অনলাইন থেকেই
কোম্পানিটির কর্মীদের লগ-ইন ক্রেডিনশিয়াল কিনেছিল হ্যাকাররা। এরপর ওই লগ-ইন ক্রেডিনশিয়াল
ব্যবহার করে টি-মোবাইলের কাস্টমার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করে ব্যবহারকারীদের
সিম কপি করে নেয় তারা।
এ ধরনের সাইবার হামলায় কার্যত ভুক্তভোগীর
মোবাইল নম্বর কপি করে নিজস্ব ডিভাইসে ব্যবহারের সুযোগ পায় হ্যাকার। ফলে, ভুক্তভোগীর
ফোনে আসা কল, টেক্সট মেসেজের নাগাল পায় হ্যাকার। এক্ষেত্রে ‘মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন’
বা কয়েক ধাপের পরিচয় নিশ্চিতকরণ ব্যবস্থার অংশ হিসেবে পাঠানো মেসেজও দেখার সুযোগ পায়
তারা।
ব্যবহারকারীদের সিম নম্বর কপি করে নেওয়ার
পাশাপাশি ল্যাপসাস এফবিআই এবং পেন্টাগন অ্যাকাউন্টও হ্যাক করার চেষ্টা করেছিল বলে উঠে
এসেছে ক্রেবসের প্রতিবেদনে। তবে শেষ পর্যন্ত ওই দুটি অ্যাকাউন্টের বাড়তি নিরাপত্তা
ব্যবস্থার কারণে হালে পানি পায়নি তাদের ওই চেষ্টা।
এ প্রসঙ্গে ভার্জকে পাঠানো এক ইমেইল
বিবৃতিতে টি-মোবাইল বলেছে, “বেশ কয়েক সপ্তাহ আগেই আমাদের নজরদারী টুল একজন হ্যাকারকে
চিহ্নিত করেছিল যে চোরাই ক্রেডিনশিয়াল দিয়ে অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থায় প্রবেশের চেষ্টা করছিল।
ওই ব্যবস্থায় অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম চালানোর সফটওয়্যার ছিল।”
“আমাদের সিস্টেম সাধারণ নিয়মানুসারেই
কাজ করেছে এবং সিস্টেমের ফাঁকফোকর দ্রুত বন্ধ করে বেহাত লগ-ইন অ্যাকাউন্ট অকার্যকর
করে দেওয়া হয়েছে।”
টি-মোবাইলের ওপর প্রথম সাইবার হামলার
ঘটনা নয় এটি। ল্যাপসাসের হামলায় সেবাগ্রাহকদের ডেটা বেহাত না হলেও, ২০২১ সালের অগাস্ট
মাসের হ্যাকিংয়ে বেহাত হয়েছিল চার কোটি ৭০ লাখ ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত ডেটা। ওই ঘটনার
কয়েকমাস পরেই আবার সাইবার হামলার শিকার হয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।
অন্যদিকে গত কয়েক মাস ধরেই খবরের শিরোনামে
আছে ল্যাপসাস। মাইক্রোসফট, স্যামসাং, এবং এনভিডিয়ার মতো প্রথম সারির প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের
সোর্স কোড চুরি করেছে হ্যাকারদের দলটি। মার্চ মাসেই হ্যাকারদের দলটির সদস্য হিসেবে
সন্দেহভাজন সাত কিশোরকেকে গ্রেপ্তার করেছে ব্রিটিশ পুলিশ। তদন্তকারীদের আশঙ্কা, হ্যাকারদের
এই দলটির ‘মাস্টারমাইন্ড’ও এক ব্রিটিশ কিশোর।