তিনি জানালেন, গত মার্চে ৪০ হাজার কোটি টাকার যে হিসাব তিনি দিয়েছিলেন, সেটা ছিল কোভ্যাক্স থেকে বিনামূল্যে এবং উপহার হিসেবে পাওয়া টিকার দামসহ হিসাব করা। অর্থাৎ, সরকার ৪০ হাজার কোটি টাকার টিকাই দিয়েছে, তবে সেজন্য খরচ হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা।
কোভিড মহামারীর সময়ে স্বাস্থ্যখাতের ‘অনিয়ম ও ‘দুর্নীতি’ নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবির) এক প্রতিবেদনে টিকার জন্য খরচ নিয়েও প্রশ্ন তোলার পর সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে এই ব্যাখ্যা এল।
হাসপাতালে অনিয়মের শিকার ২২% কোভিড রোগী: টিআইবি
দাম না বলে চীনা টিকার মূল্যছাড়ের খবর দিলেন অর্থমন্ত্রী
১২ এপ্রিল ওই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলেনে বলেছিলেন, “স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, টিকা কেনা থেকে ব্যবস্থাপনায় ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে। সরকারের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্য না পাওয়ায় অন্যান্য উৎস থেকে আমরা দেখেছি, এখানে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকার মত খরচ হয়েছে। এ বিষয়গুলোতে সরকারকে আরও স্বচ্ছ হতে হবে।”
সোমবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে টিআইবির ওই প্রতিবেদনের বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য তুলে ধরেন জাহিদ মালিক।
টিআইবির অভিযোগ ‘সঠিক নয়’ দাবি করে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ‘সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা’ বজায় রেখেছে।
“ভারত থেকে সরকার যে দামে টিকা কিনেছে, তার কাছাকাছি দামে চীন থেকে টিকা কেনা হয়েছে। কোভ্যাক্স থেকে কস্ট শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে ১০ কোটি ডোজ টিকা কেনা হয়েছে। আর কোভেক্স থেকে সাড়ে ৯ কোটি ডোজ টিকা বিনামূল্যে পেয়েছি।”
টিকার দাম নিয়ে টিআইবির প্রতিবেদনে ‘ভুল বোঝাবুঝির’ সৃষ্টি হয়েছে মন্তব্য করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
গত মার্চের সেই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “আমি বলেছিলাম ৪০ হাজার কোটি টাকার কথা। এর মানে এই নয় বাংলাদেশ সরকারের ৪০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। টিকা আনা, প্লেনের ভাড়া, রাখা, সিরিঞ্জের দাম, টিকাদান কর্মসূচি চালানো- সব মিলিয়ে আমাদের খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।
টিকা: দুই মাস পরও সংসদে একই উত্তর দিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
কোভিড টিকায় খরচ কত? বলতে নারাজ স্বাস্থ্যমন্ত্রী
“বাকি বিশ হাজার কোটি টাকা হল- যে সাড়ে নয় কোটি ডোজ টিকা আমরা ফ্রি পেয়েছি সেটার দাম আমরা ধরে হিসাব করেছি। উপহার হিসেবে পাওয়া টিকার বেশিরভাগই ফাইজার, মডার্নার ওটারও তো একটা মূল্য আছে। সেটা যদি ধরি ২৫ হাজার কোটি টাকা ওই টিকার দামই আসে। দুটো মিলিয়ে আমরা বলেছি, বাংলাদেশের মানুষকে ৪০ হাজার কোটি টাকা মূল্যের টিকা দিয়েছি।”
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছাড়াও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব লোকমান হোসেন মিঞা, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব সাইফুল হোসেন বাদল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম খুরশীদ আলমসহ কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।