সংস্থাটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ২০২০ সালে ২ কোটি ৩০ লাখ শিশু টিকা থেকে বাদ পড়ে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
এই সংখ্যা শুধু টিকাদান পরিষেবাগুলোর প্রতি প্রতিশ্রুতি এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে কমানো যেতে পারে বলে মনে করছে সংস্থাটি।
প্রতি বছর এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ ‘বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহ’ হিসেবে উদযাপন করা হয়।
রোববার বৈশ্বিক টিকাদান প্রচেষ্টার সপ্তাহব্যাপী আয়োজনে যোগ দিয়ে ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত লিয়াম নিসনও টিকায় বিনিয়োগ বাড়ানোর কথা বলেন।
এক ভিডিও বার্তায় তিনি পোলিও প্রতিরোধে প্রথম টিকা তৈরি করা জোনাস সাল্কের মতো বিজ্ঞানী এবং কারখানায় টিকার শিশি ভর্তি বা ভ্যাকসিন ইনজেকশন সরবরাহে নিয়োজিত নিবেদিত কর্মীদের প্রচেষ্টা কীভাবে প্রতিবছর ২০ থেকে ৩০ লাখ শিশুর জীবন বাঁচাচ্ছে, তার উপর আলোকপাত করেন।
লিয়াম নিসন বলেন, “টিকা হচ্ছে মানব সাফল্যের একটি অসাধারণ গল্প। গত ৭৫ বছরে কোটি কোটি শিশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে, যার কৃতিত্ব বিজ্ঞানী, স্বাস্থ্যকর্মী, স্বেচ্ছাসেবকদের।
“আপনি যদি কখনও টিকা নিয়ে থাকেন বা আপনার শিশুদের টিকা দিয়ে থাকেন, তাহলে আপনি হাতে হাত রেখে গড়ে তোলা সেই বন্ধনের অংশ, যা মানবতাকে সুরক্ষিত রাখে।”
এক সময়ের ভয়ঙ্কর রোগ হিসেবে বিবেচিত পোলিওকে এখন বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই আর হুমকি হিসেবে দেখা হয় না বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “টিকা যে আমাদের প্রত্যেকের জন্য কতটা ভালো কাজ করেছে, এ সংক্রান্ত সাম্প্রতিক আলোচনায় সেই দৃষ্টিভঙ্গি ইদানীং দেখা যায় না। কিন্তু আমাদের এটা উদযাপন করতে হবে। এটি সম্ভবত মানব ইতিহাসের বৃহত্তম সম্মিলিত অর্জনগুলোর একটি।”
চলমান কোভিড মহামারীর প্রসঙ্গ টেনে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, “গত দুটি বছর আমাদের শিখিয়েছে, যে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় কিছু শিশু ঝুঁকিতে থাকে, সেই স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় সব শিশুই ঝুঁকিতে থাকে।
“বিশ্বের জন্য এই মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা ও ভবিষ্যতের স্বাস্থ্যজনিত জরুরি অবস্থা মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত হওয়ার সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে শক্তিশালী স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং প্রতিটি শিশুর জন্য টিকাদান ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার পেছনে বিনিয়োগ করা।”
ইউনিসেফ জানিয়েছে, প্রতি বছর এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে উদযাপিত হওয়া বিশ্ব টিকাদান সপ্তহের নেতৃত্বে রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং এটি সব বয়সের মানুষকে রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য টিকা ব্যবহারের বিষয়টি তুলে ধরতে বৈশ্বিক অংশীদারদের একত্রিত করে।
এ বছরের প্রতিপাদ্য হল #LongLifeForAll, যেখানে ‘দীর্ঘ জীবন’ জীবদ্দশায় টিকা দেওয়ার গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে।
সংস্থাটির সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টকে মেনশন করে এবং এখন থেকে আগামী ১০ মে পর্যন্ত হ্যাশট্যাগ #longlifeforall ব্যবহার করে প্রতিটি পোস্টে লাইক, শেয়ার বা মন্তব্য করলে জাতিসংঘ ফাউন্ডেশনের Shot@Life প্রচারাভিযান ও বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ইউনিসেফের অ্যাকাউন্টে ১ ডলার করে সর্বোচ্চ ১ কোটি ডলার পর্যন্ত জমা হবে।