সাম্প্রতিক দিনগুলোতে নানা নাটকীয়তার
জন্ম দিয়েছে সামাজিক মাধ্যম টুইটার ও টেসলা প্রধান ইলন মাস্ক। টুইটারের ওপর মাস্কের দখলদারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পথ কঠিন করতে
সম্প্রতি ‘পয়জন পিল’ গেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মটি।
তবে, সম্প্রতি টুইটার কেনার জন্য প্রয়োজনীয়
বিশাল আর্থিক তহবিলের বিস্তারিত জানিয়েছেন মাস্ক। তহবিলের একটা বড় অংশ আসবে মাস্কের
নিজের পকেট থেকে, বাকি তহবিলের যোগান দেবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাংক মর্গান
স্ট্যানলি ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
মাস্ক টুইটারের মূল্য পরিশোধের বিস্তারিত
পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের বাজার পর্যবেক্ষক সংস্থা ‘সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন
(এসইসি)’-কে জানিয়েছেন বৃহস্পতিবার। বিবিসি জানিয়েছে, মাস্কের বিস্তারিত পরিকল্পনা
জানার পরই আগ্রহ বেড়েছে টুইটারের ১১ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদের। নিজস্ব গোপন সূত্রের
বরাত দিয়ে একই খবর জানিয়েছে রয়টার্স, নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং ব্লুমবার্গের মতো একাধিক
বার্তাসংস্থা।
বর্তমানে টুইটারের ৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে
মাস্কর মালিকানায়। মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মটি কেনার জন্য চার হাজার ৬৫০ কোটি ডলার
তহবিল গঠনের পরিকল্পনা করেছেন তিনি।
বিবিসি জানিয়েছে, মাস্ক এসইসি’র কাছে
অর্থায়ন পরিকল্পনা দাখিল করার পর সাধারণ শেয়ার মালিকদের অনেকেই কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ
করে মাস্কের প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়ার জন্য তাগাদা দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ওয়েডবুশ
সিকিউরিটিজের বাজার বিশ্লেষক ড্যান আইভস বলেন,“ বিনিয়োগকারীদের অনেকেই মাস্কের সঙ্গে
টুইটারের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠককে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে টুইটারের বিদায় ঘণ্টা
হিসেবে দেখবেন। সম্ভবত কোম্পানিটি কিনেই ফেলবেন মাস্ক, যদি না দৃশ্যপটে দ্বিতীয় কোনো
ক্রেতার আবির্ভাব হয়।”
এপ্রিল মাসের শুরুতেই টুইটার পরিচালকের
পদ প্রত্যাখান করেছেন মাস্ক। পরিচালক পদে বসলে, মাস্ক একবারে কতো টুইটার শেয়ারের মালিক
হতে পারবেন তার ওপর বাধ্যবাধকতা আসতো। পরিচালকের পদ প্রত্যাখান করে ১৪ এপ্রিল উল্টো
পুরো প্রতিষ্ঠানই কিনে ফেলার প্রস্তাব দেন তিনি।
মাস্কের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ‘বিষের
বড়ি’ গেলার সিদ্ধান্ত নেয় টুইটারের পরিচালনা পর্ষদ। স্বল্প মেয়াদে ‘শেয়ারহোল্ডার রাইটস’
নামে শেয়ার কেনা-বেচার একটি বিশেষ নিয়ম চালুর সিদ্ধান্ত নেয় মাইক্রো ব্লগিং সেবাটি।
কেউ যদি পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ছাড়াই টুইটারের ১৫ শতাংশ কিংবা তার বেশি সাধারণ
শেয়ারের মালিক হয়ে যান, তাহলে অন্য অংশীদাররা ছাড় দেওয়া মূল্যে বাড়তি শেয়ার কেনার সুযোগ
পাবেন। এই কৌশলকেই বলা হচ্ছে ‘বিষের বড়ি’ বা ‘পয়জন পিল’।
এই কৌশলের মূল্য লক্ষ্যই হচ্ছে কেউ প্রতিষ্ঠানের
১৫ শতাংশের বেশি শেয়ারের মালিক হওয়ার চেষ্টা করলে তাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা।