সোমবার ভোরে সেহেরির পরপরই শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি
ইনস্টিটিউটে মারা যান গৃহকর্তা আব্দুল করিম (৩০)। তার কিছু সময় পর স্ত্রী খাদিজা আক্তারও
(২৫) মারা যান।
করিমের খালাতো ভাই কামাল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভাই
ভাবি খুব কাছাকাছি সময়ে চলে গেলেন, ওদের মেয়ে ফাতেমার অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে ডাক্তাররা
জানিয়েছেন।”
মুদি ব্যবসায়ী করিম পরিবার নিয়ে মাতুয়াইল এলাকার একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন।
গত ২১ এপ্রিল ভোরে সেহেরির সময় খাবার গরম করতে গেলে বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন ধরে যায়।
প্রতিবেশীরা তিনজনকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
তিনজনের মধ্যে খাদিজার দেহের প্রায় ৯৫ শতাংশ, করিমের ৫৪ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
আর তাদের মেয়ে ফাতেমার ৩৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
আত্মীয় স্বজনরা প্রথমে বলেছিলেন, ফ্রিজের কম্প্রেসার বিস্ফোরিত হয়ে ওই
বাসায় আগুন লেগেছে বলে তারা ধারণা করছেন। তবে পরে পুলিশ ও তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের
তদন্তে জানা যায়, রান্নঘরে জমে থাকা গ্যাস ওই বিস্ফোরণ আর অগ্নিকাণ্ডের কারণ।
ফ্রিজ নয়, রান্নাঘরে গ্যাস জমে যাত্রাবাড়ীর বিস্ফোরণ: তদন্ত
‘ফ্রিজের কম্প্রেসার বিস্ফোরণ’: যাত্রাবাড়ীতে বাবা, মা ও মেয়ে দগ্ধ
তিতাস গ্যাসের ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের ব্যবস্থাপক সবিউল আউয়াল গত শনিবার
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই বাসায় তিতাস গ্যাসের লাইনের পাশাপাশি এলপি গ্যাস
সিলিন্ডারও ছিল।
“তারা দুটিই ব্যবহার করতেন। বিস্ফোরণ গ্যাস থেকে হয়েছে, সেটা এলপি থেকেও
হতে পারে, তিতাস গ্যাসের লাইন থেকেও হতে পারে। তবে তিতাস গ্যাসের লাইনে কোনো ত্রুটি
পাওয়া যায়নি।”
সবিউল আউয়াল জানান, তিতাস গ্যাসের চাপ কম থাকায় বা সরবরাহ নিয়মিত না হওয়ায়
অনেকেই এলপি গ্যাস সিলিন্ডার কিনে রাখেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করেন।
এর মধ্যে কোনো একটি গ্যাসের লাইন হয়ত খোলা ছিল এবং সেখান থেকে গ্যাস বের
হয়ে ঘরে জমে দিয়েছিল, সেখান থেকেই এ দুর্ঘটনার সূত্রপাত বলে তিতাসের এই কর্মকর্তার
ধারণা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান,
করিম ও খাদিজার লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়ী পাবনার সুজানগরে নিয়ে তাদের দাফন করা হবে
বলে করিমের খালাতো ভাই কামাল হোসেন জানান।