দেশে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার এই প্রবেশদ্বারে ছোট-বড় ১৭টি ফেরি চালু থাকলেও তা যথেষ্ট নয় বলে যাত্রীদের ভাষ্য।

প্রতিটা যাত্রীবাহী পরিবহনের আট থেকে নয় ঘণ্টা এবং পণ্যবাহী ট্রাকগুলোর দেড় দিনের বেশি সময় লাগছে ফেরিতে উঠতে।
মঙ্গলবার ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে চার কিলোমিটার এলাকায় দুইটা লাইন ধরে যাত্রীবাহী পরিবহন ও পণ্যবাহী যান দাঁড়িয়ে রয়েছে। এছাড়া ঘাট থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে রাজবাড়ী সদর উপজেলার গোয়ালন্দ মোড়ে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কে তিন কিলোমিটার জুড়ে পণ্যবাহী যান দাঁড়িয়ে আছে।
সোহাগ পরিবহনের চালক কুদ্দুস মিয়া বলেন, “রাত ২টায় দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে আটকে ছিলাম। সকাল ১০টায় ঘাট থেকে রয়েছি দেড় কিলোমিটার দূরে। ফেরিতে উঠতে আরও সময় লাগবে এক থেকে দেড় ঘণ্টা।
“আমাদের ভোগান্তি তো হচ্ছেই। সেই সঙ্গে যাত্রীরাও ভোগান্তিতে রয়েছে।”

যানজটে বাসের মধ্যে দীর্ঘ সময় বসে থেকে গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেক যাত্রী
খাতুন এক্সপ্রেস পরিবহন নামে একটি বাসের যাত্রী মেহেদী হাসান মারুফ রাত ৩টা থেকে ফেরিতে ওঠার অপেক্ষায় থাকলেও পরদিন বেলা ১১টায়ও সেই অপেক্ষার অবসান হয়নি।
“রাত ৩টা থেকে ফেরি পারের অপেক্ষায় আছি। এখন বেলা ১১টা বাজলেও ফেরিতে উঠতে পারি নাই। প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে আমাদের। গরমের মধ্যে বাসের শিশু ও বয়স্করা যে কষ্ট পাচ্ছেন তা বোঝানোর মত না।”
যানজটের কারণে দেড় দিন ধরে রাস্তায় একই জায়গায় আটকে আছেন বলে জানান বেনাপোলের ট্রাকচালক শাহীন মিয়া।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সোমবার সকালে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে আটকে আছি। মঙ্গলবার বেলা ২টায়ও একই জায়গায় আছি। এই এলাকায় নেই খাবার হোটেল, নেই শৌচাগার ব্যবস্থা, নেই গোসলখানা।

যানজটের কারণে দেড় দিনের বেশি সময় ধরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে ট্রাকগুলো
“খোলা আকাশের নিচে প্রচণ্ড গরমে রোদের মধ্যে কী হালে আছি আমরা সেটা কেউ বোঝার চেষ্টা করছে না। মনে হচ্ছে আমরা মানুষ না।”
অবস্থার উন্নতির জন্য যাত্রী ও যান চালকেরা আরও ফেরি চেয়েছেন।
কিন্তু অবস্থার বিশেষ পরিবর্তনের আশা দেখাতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।

বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান বলেন, চালু থাকা ১৭টি ফেরির পাশাপাশি আরও দুটি ফেরি যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও তা কবে নাগাদ হতে পারে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই তাদের কাছে। তাছাড়া মেরামতের জন্য পাঠানো বিকল দুটি ফেরি কবে নাগাদ চালু হবে তাও তিনি বলতে পারেননি।
তবে ঈদের পাঁচ দিন আগে ও পরে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার বন্ধ রাখা হবে বলে জানান তিনি।
তার দাবি, ট্রাক পারাপার বন্ধ হলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিকে চলে আসবে।