ভিত ছিল শক্ত, মঞ্চ ছিল প্রস্তুত। আদর্শ উপলক্ষ পেয়ে উত্তাল হয়ে উঠল সাকিবের ব্যাট। তার বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের দিনে সাব্বির রহমান আউট হলেন সেঞ্চুরি থেকে ১০ রান দূরে।
ঢাকা প্রিমিয়ায়ার লিগের ম্যাচে মঙ্গলবার গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে বিকেএসপিতে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জের সাকিব ও সাব্বির।
রূপগঞ্জের উদ্বোধনী জুটি ৭১ রান তোলার পর ষোড়শ ওভারে উইকেটে যান সাব্বির রহমান। তিনে নেমে দলকে এগিয়ে নেন তিনি সাবলিল ব্যাটিংয়ে। তৃতীয় উইকেটে নাঈম ইসলামের সঙ্গে গড়েন ১০৩ রানের জুটি।
নাঈমের বিদায়ের পর ৩৮ ওভার শেষে উইকেটে যান সাকিব। রূপগঞ্জের রান তখন ৩ উইকেটে ১৮৬। পরিস্থিতি দাবি করছিল দ্রুত রান। সাকিব সেই দাবি মেটান দারুণভাবে।
প্রথম চার বলে সাকিব করেন দুই রান। তার ঝড়ের শুরু ৪০তম ওভারে। বাঁহাতি স্পিনার রকিবুল আতিকের বলে মাথার ওপর দিয়ে ছক্কায় শুরু। পরের বলে কাট করে চার। পরেরটি বিশাল ছক্কা স্লগ সুইপে। পরের বলে আবার স্লগ করেন, এবার ব্যাটের ওপরের দিকে লেগে কিপারের পাশ দিয়ে চার।
পরের ওভারে সৈয়দ খালেদের বলে চার মারেন নান্দনিক এক ইনসাইড আউট শটে। ৪২ তম ওভারে আল আমিনের অফ স্পিনে বাউন্ডারি আদায় করেন টানা দুটি। প্রথমটি কাট শটে, পরেরটি ইনসাইড আউটে। ১৪ বলে তার রান তখন ৩৯। পরের বলে নেন সিঙ্গেল।
পরের দুই বলে চার-ছক্কা হলে রেকর্ড গড়তে পারতেন। সেটি হয়নি। তবে আল আমিনের পরের ওভারে আরেকটি ছক্কা মারেন জায়গা বানিয়ে খেলে ওয়াইড লং অফ দিয়ে। ওই ওভারেই ফিফটি স্পর্শ করেন ২১ বলে।
লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তৃতীয় দ্রুততম ফিফটি এটি। দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড ফরহাদ রেজার। ২০১৯ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম দোলেশ্বরের হয়ে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ২০ বলে ৫৬ রানের ইনিংসের পথে ফরহাদ ফিফটি করেন ১৮ বলে।
দ্বিতীয় দ্রুততম ফিফটি নাজমুল হোসেন মিলনের। ২০০৭ সালে জাতীয় লিগের ওয়ানডে সংস্করণে ঢাকা বিভাগের হয়ে ধানমন্ডি মাঠে খুলনা বিভাগের বিপক্ষে ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি ১৯ বলে। কাকতালীয়ভাবে ফরহাদের মতো নাজমুলের ইনিংসটিও ছিল ২০ বলে অপরাজিত ৫৬ রানের।
সাকিব অবশ্য ৫৬ নন, আউট হন ২৬ বলে ৫৯ করে। ৬ চার ও ৩ ছক্কার ইনিংস থামে আল আমিনের বলে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে। ক্যাচ তুলে দেন তিনি পয়েন্টে।
সাব্বির রহমান টিকে ছিলেন তখনও। ৫৩ বলে ফিফটি ছোঁয়ার পর রানের গতি বাড়িয়ে তিনি সম্ভাবনা জাগান তিন অঙ্ক ছোঁয়ার। ৪৯তম ওভারে পেসার মারাজ মাহবুবের বলে স্কুপ করতে গিয়ে গিয়ে টাইমিং করতে পারেননি। বল আলতো করে উঠে যায় কিপার আকবর আলির হাতে।
সাব্বির যদিও দেখাচ্ছিলেন, বল তার উরুতে লেগে ওপরে উঠছে। তবে আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্তই দেন। লিগের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তাই পাওয়া হলো না তার। ইনিংস শেষ হয় ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৩ বলে ৯০ করে।
শিরোপা লড়াইয়ে থাকা রূপগঞ্জ ৫০ ওভারে তোলে ২৯৩ রান।