ভূমধ্যসাগর উপকূল থেকে লিবিয়ার পুলিশ গত কয়েক দিনে পাঁচ শতাধিক বাংলাদেশিকে আটক করেছে বলে খবর দিয়েছে ভয়েস অব আমেরিকা।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদেরকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা ‘অবশ্যই নেওয়া হবে’।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএমের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ তুলে ধরে আব্দুল মোমেন বলেন, “তিনি বলেছেন, যাদেরকে ফিরিয়ে আনা হয়, তাদের অনেকে আবারও অবৈধভাবে সেখানে যান।”
“এটা কোনোভাবে বন্ধ করা যাচ্ছে না। একটু কমেছে অবশ্য। আমার মনে হয়, আপনারা সচেতনতা তৈরি করেন। বিদেশে গিয়ে কি কষ্টটা করে! গতকালও শুনেছি, এখনো যথেষ্ট লোক আটক আছে।”
লিবিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, অস্থিতিশীলতার কারণে ২০১৫ সালে বাংলাদেশিদের লিবিয়ায় যাওয়া বন্ধ করেছিল সরকার। এর মধ্যে ‘মোটামুটি’ স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করায় আবার তা চালু করা হয়। প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানের মতো দক্ষ লোকবল উচ্চ বেতনে সেখানে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, “তারপরও দেশে অস্থিতিশীলতা আছে। কোনো কোনো এলাকায় ওয়ারলর্ড আছে। যারা অবৈধভাবে যান, তারা ওইসবের খপ্পরে পড়েন।
“আমরা ইতোমধ্যে কিছু লোক নিয়ে এসেছি। শুনলাম যে, আরও কয়েকশ লোক ওখানে আটক আছে। জেলে আছে। এটা খুবই দুঃখজনক।”
ছবি: ভয়েস অব আমেরিকা
লিবিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল এস এম শামীম উজ জামানের বরাত দিয়ে ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগ এক প্রতিবেদনে জানায়, ইউরোপে পাড়ি দেওয়ার প্রস্তুতির সময় গত ২৩ এপ্রিল ত্রিপোলির পূর্ব উপকূল থেকে তাদের আটক করা হয়।
রাষ্ট্রদূত বলেন, “প্রাথমিকভাবে লিবিয়ার পুলিশ আমাদেরকে ৫০০ জন বাংলাদেশিকে আটকের কথা জানিয়েছে। তবে, আমরা এ পর্যন্ত ২৪০ জনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছি।”
আটক বাংলাদেশিদের বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনও।
ভূমধ্যসাগর উপকূল হয়ে বাংলাদেশিদের ইউরোপযাত্রার সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “ভূমধ্যসাগরের উপকূল থেকে আটক পাঁচ শতাধিক বাংলাদেশিকে লিবিয়ার সেইফ হোমে রাখা হয়েছে।
“তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। আমাদের রাষ্ট্রদূত তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য আইওএমসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা নেবে। বছরখানেকর মধ্যে আমরা লিবিয়া থেকে এক হাজারের ওপরে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছি।”
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, “ভূমধ্যসাগর উপকূল হয়ে ইউরোপ যাত্রার কনসার্ন নাম্বারটা কমছে না। আমরা এটা নিয়ে সিরিয়াস অবস্থানে যাব। আমরা সিরিয়াসলি অ্যাওয়ারনেস ক্যাম্পেইনে যাব।
“যেসব জেলার লোকজন বেশি যাচ্ছে, বিশেষ করে ফরিদপুর, মাদারীপুর ও শরীয়তপুর অঞ্চলের লোকদের বোঝানোর জন্য।”
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, “এখানে ট্রাফিকিংয়ের বিষয়টাতে আমরা গুরত্ব দিতে চাই। তারা এসব কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করার বিষয় আছে।
“লিবিয়াতে আমাদের শ্রম বাজার অল্প অল্প করে খুলছে। সেই স্বাভাবিক বাজারে লিগ্যাল পথে যারা যাবে তাদের জন্য সাংঘর্ষিক।”
আরও পড়ুন