চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ভিনিসিউস ও জেসুসের দুই দল। প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে খেলবে সিটি। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত একটায় শুরু হবে ম্যাচটি।
সময়ের সেরা দুই দলের অনেক তারকার ভীড়েও লড়াইয়ের আগে আলোচনার ভালোভাবেই আছেন ভিনিসিউস। সেটা মাঠে তার সপ্রতিভ উপস্থিতির কারণেই।
চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩১ গোলে (১৭ গোল ও ১৪ অ্যাসিস্ট) অবদান রেখেছেন ভিনিসিউস। করিম বেনজেমার সঙ্গে তার দারুণ ফলপ্রসু জুটিতে ভর করে লা লিগা শিরোপা পুনরুদ্ধারের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে রিয়াল। সেখানে বাকি পাঁচ রাউন্ডে আর ১ পয়েন্ট পেলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে তারা।
জেসুসও আছেন দারুণ ফর্মে। প্রিমিয়ার লিগে গত শনিবার ওয়াটফোর্ডের বিপক্ষে সিটির ৫-১ ব্যবধানে জয়ের ম্যাচে একাই ৪ গোল করেন তিনি। সেই সঙ্গে ব্রাজিলের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে প্রিমিয়ার লিগে চার গোলের কীর্তি গড়েন ২৫ বছর বয়সী ফুটবলার।
মার্কাকে গত সোমবার দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন জেসুস। সেখানেই এক পর্যায়ে ওঠে ভিনিসিউসের প্রসঙ্গও। তরুণ উইঙ্গারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন তিনি।
জেসুসের কথায় উঠে আসে ২০১৯-২০ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কথাও। সেই আসরের শেষ ষোলোয় দুই লেগেই রিয়ালকে হারিয়েছিল সিটি। আর দুই লেগেই গোল করেছিলেন জেসুস।
“(২০১৯-২০ আসরে শেষ ষোলোর প্রথম লেগ) খুব কঠিন এবং উত্তেজনাপূর্ণ একটি ম্যাচ ছিল, সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে খেললে সবসময় যেমনটা হয়ে থাকে। আমরা জিতেছিলাম (২-১), কিন্তু তারাও জিততে পারত। দলকে সাহায্য (১ গোল) করতে পেরে ভালো লেগেছিল। তবে ভিন্ন খেলোয়াড়দের নিয়ে এখনকার চিত্রটা ভিন্ন।”
সবশেষ ওই লড়াইয়েও রিয়ালের স্কোয়াডে ছিল সেই সময়ের তরুণ ভিনিসিউস। তবে সে এখন অনেক পরিণত বলেই বিশ্বাস জেসুসের।
“ভিনিসিউস থাকবে, যে আগের সেই লড়াইয়েও খেলেছিল, কিন্তু এখন সে অনেক বেশি পরিণত। খেলোয়াড় হিসেবে আগের মতোই আছে, কিন্তু এখন আরও পরিণত।”
জেসুস মনেপ্রাণে চান, ভিনিসিউস ক্যারিয়ারে আরও উন্নতি করুক। প্রতিপক্ষের জন্য আরও বিধ্বংসী হয়ে উঠুক। তবে নিজেদের বিপক্ষে ২১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডকে স্বরুপে দেখতে চান না জেসুস।
“আমি তার একজন বড় ভক্ত। আশা করি, সে ভবিষ্যতে আরও ভালো হয়ে উঠবে। আমি তাকে শুভকামনা জানাই, তবে আমাদের বিপক্ষে নয়!”
“তরুণ বয়সে রিয়াল মাদ্রিদের মতো বিশাল মাপের একটি ক্লাবে যোগ দিয়ে একজন সুযোগ পাবে এবং খেলবেও। কিন্তু অভিজ্ঞতা ও পরিণতবোধের অভাবে কাজটা সহজ হয় না।”
জেসুস আশাবাদী, নিজের খেলাটা উপভোগ করে উন্নতি অব্যাহত রাখবেন ভিনিসিউস।
“সমালোচনা হবেই। আমি তার জন্য খুশি। সবাই জানত যে সে এখনকার মতোই ভালো খেলোয়াড়। আশা করি, ক্যারিয়ারে খুশি থাকতে সে নিজের মানের আরও উন্নতি করবে।”
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সাফল্য বিবেচনায় রিয়ালের ধারেকাছে নেই সিটি। তবে প্রতিযোগিতাটিতে সবশেষ ঘরের মাঠে তিনবারের মুখোমুখি লড়াইয়ের চিত্র পুরোপুরিই ইংলিশ দলটির পক্ষে; সবশেষ তিন ম্যাচে একটি জিতেছে সিটি, বাকি দুটি ড্র।
সিটি কোচ পেপ গুয়ার্দিওলার সামনেও দারুণ এক রেকর্ডের হাতছানি। প্রথম কোচ হিসেবে লা লিগার দলটিকে ইউরোপ সেরার প্রতিযোগিতা থেকে তিনবার বিদায় করার কীর্তি গড়ার।
২০১০-১১ মৌসুমে তার কোচিংয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে দলটিকে হারায় বার্সেলোনা। এরপর ২০১৯-২০ মৌসুমে শেষ ষোলোয় রিয়ালের বিপক্ষে তার বর্তমান দল সিটির ওই দুই লেগেই ২-১ ব্যবধানের জয়।