পুরান ঢাকার ইসলামপুর থেকে সরিয়ে বুড়িগঙ্গা সেতু-২ (বাবু বাজার ব্রিজ) সংলগ্ন কেরানীগঞ্জের কদমতলী মডেল টাউনে নবনির্মিত আধুনিক মাল্টিপ্লেক্সটি ঈদের দিন উদ্বোধন করা হবে বলে জানান লায়ন সিনেমা হলেন কর্ণধার মির্জা আব্দুল খালেক।
খালেক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ঈদের দিন ‘গলুই’ ও ‘শান’ সিনেমা প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে লায়ন সিনেমাসের পর্দা উঠবে। প্রেক্ষাগৃহে মোট ৪টি সিনেমা হল থাকবে; এর মধ্যে দুটি হলে বাংলা সিনেমা ও অপর দুটি হলে থ্রিডিসহ হলিউডের সিনেমা প্রদর্শন করা হবে।
২০১৪ সালের দিকে কদমতলী মডেল টাউনে ‘লায়ন শপার্স ওয়ার্ল্ড’র নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল; সেই শপিং মলের অষ্টম তলায় থাকছে প্রেক্ষাগৃহটি। বছরখানেক আগে নির্মাণকাজ শেষ হলেও করোনাভাইরাসের কারণে উদ্বোধন পেছানো হয়েছে।
দর্শকদের জন্য প্রতিটি হলের ২০০ করে মোট ৮০০ আসন রয়েছে; টিকিটের মূল্য এখনও নির্ধারণ করা হয়নি বলে জানিয়েছে লায়ন সিনেমাস কর্তৃপক্ষ।
তারা বলছেন, দর্শকদের কথা বিবেচনায় রেখে দেশের অন্যান্য মাল্টিপ্লেক্সের তুলনায় লায়ন সিনেমাসের টিকিটের মূল্য কম রাখা হবে; দুয়েকদিনের মধ্যে তা দাম নির্ধারণ করা হবে।
সিনেমা হল: ছিল ১২৩৫টি, ২ যুগ পেরিয়ে কমে এখন ১২০টি
ঢাকাই চলচ্চিত্রের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা দেশের পুরানো সিনেমা হলগুলোর একটি লায়ন সিনেমা হল বন্ধ হয়েছিল ২০০৫ সালে; পরে সেখানে শপিংমল নির্মাণ করা হয়েছে।
মির্জা খালেকের ভাষ্যে, “অশ্লীল সিনেমার প্রকোপের মধ্যে দর্শকরা হল থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া লোকসানের মুখে পড়ে বাধ্য হয়ে সেই সময় হলটি বন্ধ করেছিলাম।”
লায়ান টাওয়ার। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
ইংরেজ আমলে প্রতিষ্ঠিত ডায়মন্ড জুবিলী থিয়েটারের মালিকানা গত শতকের কুড়ির দশকে মির্জা আবদুল সর্দারের হাতে আসে। পরে নতুন করে প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণের পর সেটি ‘লায়ন সিনেমা’ নামে পরিচিতি পায়।
প্রথম দিকে নাটকের পাশাপাশি সিনেমা দেখানো হলেও ১৯২৭ সাল থেকে শুধুই সিনেমা প্রদর্শন করে লায়ন সিনেমা হল। ঢাকাই সিনেমা সোনালী সময়ে রমরমা ছিল সিনেমা হলটি; পুরানা ঢাকার বাসিন্দারা পরিবার নিয়ে সিনেমা দেখতে হলে ভিড় করতেন।
পুরান ঢাকার দর্শকদের স্মৃতিবিজড়িত হলটি ফেরানোর ঘোষণার সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে বেশ সাড়া পাওয়ার কথা জানালেন উত্তরাধিকার সূত্রে হলের মালিকানার দায়িত্বে আসা মির্জা খালেক। বলা হচ্ছে, এটিই পুরান ঢাকার প্রথম মাল্টিপ্লেক্স প্রেক্ষাগৃহ।
সিনেমা হলটি ইসলামপুর থেকে নতুন ঠিকানায় নেওয়ার কারণ কী?-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি “লায়ন সিনেমা হল বন্ধ করার সময় ওই জমিটা কিনেছিলাম। ওই দিকে জমির দাম অনেক বেশি। ওই কারণে খোলা জায়গায় হলটি করলাম যাতে কম দামে জমি যাওয়া যায়। সেই সঙ্গে মানুষের সমাগমও একটু স্বস্তিদায়ক হয়।”
সিনেমা হলটির ব্যবস্থাপনায় আছে জয় সিনেমা নামে একটি প্রতিষ্ঠান।