মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে
টিআইবি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কয়েকটি বক্তব্য খণ্ডন করে বলেছে, “তিনি অন্য যেসব বিষয়ে টিআইবির
প্রতিবেদনের সাথে দ্বিমত প্রকাশ করেছেন, সে সম্পর্কে বিস্তারিত বিশ্লেষণসহ টিআইবি
মন্ত্রীর সম্মতি সাপেক্ষে তার সাথে সরাসরি আলোচনা করার উদ্যোগ গ্রহণ করবে।”
তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী যেভাবে
প্রতিবেদনটিকে ‘গুরুত্ব দিয়েছেন’, সেজন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে
টিআইবি।
গত ১২ এপ্রিল ‘করোনা ভাইরাস সংকট মোকাবিলায় সুশাসন: অন্তর্ভুক্তি ও স্বচ্ছতার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণা
প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবি।
এতে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে রোগীদের অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হওয়ার
পাশাপাশি টিকাদানে সরকারি ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক
ইফতেখারুজ্জামান বলেছিলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিকা কেনা থেকে ব্যবস্থাপনায় ৪০ হাজার
কোটি টাকার বেশি খরচের কথা বললেও তারা প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকার মতো খরচের তথ্য
পেয়েছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ফাইল ছবি
সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, টিকার দাম নিয়ে টিআইবির
প্রতিবেদনে ‘ভুল বোঝাবুঝির’ সৃষ্টি হয়েছে।
তার বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি ৪০
হাজার কোটি টাকার যে হিসাব দিয়েছিলেন, তা বিনামূল্যে ও উপহার হিসেবে পাওয়া টিকার
দামসহ হিসাব করা। অর্থাৎ, সরকার ৪০ হাজার কোটি টাকার টিকাই দিয়েছে, তবে সেজন্য খরচ
হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য ‘টিআইবির বিশ্লেষণকেই যথার্থতা
প্রদান করে’ বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি
করেছে সংগঠনটি।
“বিনামূল্যে অনুদান হিসেবে
পাওয়া টিকা বাবদ কোন যুক্তিতে ও কিসের ভিত্তিতে মূল্য নির্ধারণ করা হলো এবং কোন যুক্তিতে
তা খরচ হিসেবে বিবেচিত হল, তা বোধগম্য নয়। টিআইবি আশা করে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
টিকা ক্রয় ও বিতরণ বাবদ খরচের হিসেব আরও বিস্তারিতভাবে তুলে ধরবে।”
টিআইবি দেশের ভাবমূর্তির বিষয়ে
গুরুত্ব না দিয়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য তুলে ধরে বলে যে মন্তব্য করেছিলেন জাহিদ
মালেক, তারও জবাব দিয়েছে সংগঠনটি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “টিআইবির বিরুদ্ধে দেশের
ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা বা দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করা, দেশের কোনো সফলতাকে
প্রশ্নবিদ্ধ করা ইত্যাদি অভিযোগ আনার কোনো সুযোগ নেই।”
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির জরিপের
ধরন নিয়ে প্রশ্ন তুলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, টেলিফোনের মাধ্যমে কীভাবে রোগী
এবং রোগীর পরিচয় শনাক্ত হল সেটি ‘নিশ্চিত নয়’। এত ছোট পরিসরের জরিপে ‘অবশ্যই সঠিক তথ্য দেওয়া হয়নি’।
টিআইবি বলছে, গবেষণায় ‘বৈজ্ঞানিক মান ও পদ্ধতিগত
উৎকর্ষ নিশ্চিত করতে’ তথ্য সংগ্রহে একাধিক পদ্ধতি
গ্রহণ করা হয়েছে। সংক্রমণের ঝুঁকি বিবেচনা করে টেলিফোন সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা
হয়েছে।
“পরিসংখ্যান বিজ্ঞানে টেলিফোন
সাক্ষাৎকার একটি স্বীকৃত পদ্ধতি। ফলে টেলিফোন সাক্ষাৎকারে সঠিক তথ্য উঠে আসে না,
এই অভিযোগ করার কোনো সুযোগ নেই।”
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়,
“পরোক্ষ তথ্য হিসেবে সংশ্লিষ্ট
সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য এবং গণমাধ্যমে
প্রকাশিত প্রতিবেদন হতে তথ্য সংগ্রহ, পর্যালোচনা ও যাচাই বাছাই করে ব্যবহার করা
হয়েছে।
“গবেষণাকালীন সময়ে সংগৃহীত
প্রতিটি তথ্য একাধিক উৎস থেকে সংগ্রহ করে যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত করা
হয়েছে। ফলে এই গবেষণার ফলাফল সঠিক নয় এমন অভিযোগ করার কোনো সুযোগ নেই। বরং এই
গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লিখিত প্রতিটি তথ্য ও বিশ্লেষণ বিজ্ঞানসম্মত ও বস্তুনিষ্ঠ।”
এই সম্পর্কিত খবর
হাসপাতালে অনিয়মের শিকার ২২% কোভিড রোগী: টিআইবি
ঈমান ধরে টানাটানি করলে ‘বুকে লাগে’: কায়কাউস