‘দ্য ডন’ পত্রিকা জানায়, বুধবার ইসলামাবাদে প্রেসিডেন্টের বাসভবন আইওয়ান-ই-সদরে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির কাছে শপথ নেন বিলাওয়াল।
শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারিও।
৩৩ বছর বয়সী বিলাওয়াল ২০১৮ সালে প্রথম ন্যাশনাল এসেম্বলিতে নির্বাচিত হন। এবার প্রথমবারের মতো তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
তিনি কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাচ্ছেন তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত না হওয়া গেলেও শোনা যাচ্ছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নতুন মন্ত্রিসভায় বিলাওয়াল পররাষ্ট্রমন্ত্রী হতে পারেন।
বিলাওয়ালের বোন এক টুইটে বলেছেন, পিপিপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিলাওয়াল বুধবারই ঐক্য সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন। এজন্য বিলাওয়ালকে আগাম অভিনন্দনও জানিয়েছেন তিনি।
তাছাড়া, বিলাওয়ালও এর আগে মঙ্গলবার করাচিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বুধবার ফেডারেল মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারেন বলে আভাস দিয়েছিলেন।
গত ১৯ এপ্রিল পাকিস্তানের নতুন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার শপথের দিন বিলাওয়াল উপস্থিত থাকলেও তিনি সেদিন শপথ নেননি। নতুন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সেদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও কেউ শপথ নেননি।
তবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন পিপিপি’র হিনা রব্বানি খার। পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হতে পারেন বলে তখন থেকেই গণমাধ্যমে খবর শোনা যাচ্ছিল।
কয়েকজন পিপিপি নেতার সাক্ষাৎকার থেকেও এর আগে বিলাওয়ালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি একরকম নিশ্চিত হয়েছে, যদিও বিষয়টি নিয়ে তখনও ভেতরে ভেতরে আলোচনা চলছিল।
মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা বিলাওয়ালের কাছে পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে শিগগিরই একটি সংবাদ সম্মেলন করবেন তিনি।
মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে বিলাওয়াল প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, ‘একপাক্ষিকভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ’ সম্ভব নয় এবং সমস্যার সমাধান সমন্বিতভাবে খুঁজে দেখার ভার সব রাজনৈতিক দলেরই।
“আমাদেরকে বুঝতে হবে এটি কোনও সাধারণ জোট সরকার নয়। এটি বিরোধী বেঞ্চে বসা দলগুলোর এক ঐক্য সরকার। এটি অনেক বড় একটি চ্যালেঞ্জ এবং প্রত্যেককেই তাদের ভূমিকা পালন করতে হবে এবং বোঝা ভাগাভাগি করতে হবে,” বলেন বিলাওয়াল।
পাকিস্তানের বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট সরকারের প্রধান দুই শরিক পিএমএল-এন ও পিপিপি। মন্ত্রিসভায় পিএমএল-এনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকবে। এ দলের ১৪ জন মন্ত্রীর দায়িত্ব পাবেন। এছাড়া পিপিপির ১১টি, জেইউআই-এফ চারটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাবে। বাকি সাত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাবে অন্য শরিকরা।
এক সপ্তাহ আগে আস্থা ভোটে হেরে ইমরান খানের বিদায়ের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন পিএমএল-এন নেতা শাহবাজ শরিফ।
পার্লামেন্টে ইমরানের বিরুদ্ধে বিরোধীদলগুলো অনাস্থা প্রস্তাব আনলে ডেপুটি স্পিকার তা বাতিল করে দিয়েছিলেন। এরপর প্রেসিডেন্ট আলভি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন।
কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট ওই দুই সিদ্ধান্ত ‘অবৈধ’ ঘোষণা কর। সেই রায়ে শেষ পর্যন্ত আস্থা ভোট হয় এবং ইমরান খানের পিটিআই সরকারের পতন ঘটে।
ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ১৭২ সদস্যের সমর্থন লাগে, সেখানে ১৭৪ সদস্যের সমর্থন পায় শাহবাজ নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট।