মাস্ক পরা কোভিড-১৯’য়ে আক্রান্ত হওয়ার
ও অন্যদের মাঝে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
তবে ঠিক মতো মাস্ক না পরলে দেখা দিতে
চোখ শুকানোর সমস্যা। যাকে বলে ‘ড্রাই আই সিন্ড্রম’।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ইউথা’র
করা এক পর্যবেক্ষণে এরকম তথ্যই পাওয়া গেছে। ‘অফথামোলজি অ্যান্ড থেরাপি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত
এই প্রতিবেদনে বলা হয়, যারা নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করেন তাদের অনেকেই চোখ শুকানোর সমস্যা
নিয়ে বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
‘ড্রাই আই সিন্ড্রোম’ কী?
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল আই ইন্সটিটিউট
(এনইআই)’ জানাচ্ছে, ‘ড্রাই আই সিন্ড্রোম’ এমন একটি অবস্থা যেখানে চোখ পর্যাপ্ত তরল
উৎপাদন করতে পারে না। ফলে চোখের আর্দ্রতা হ্রাস পায় এবং অস্বস্তি বাড়ে। চোখ অশ্রু বা
পর্যাপ্ত অশ্রু উৎপাদন করতে না পারলে আর্দ্রতার অভাবে এমনটা হয়। দীর্ঘদিন এই সমস্যা
চোখের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
বিভিন্ন কারণে এমন সমস্যা দেখা দিলেও
বর্তমানে মাস্ক পরিধান এর অন্যতম কারণ। যা ‘মাস্ক-অ্যাসোসিয়েটেড ড্রাই আই’ নামে পরিচিত।
লক্ষণ
এনইআই’য়ের বরাত দিয়ে হেল্থডটকম’য়ে প্রকাশিত
প্রতিবেদনে জানানো হয়, এই অবস্থা একই সময়ে দুই চোখকে প্রভাবিত করতে পারে। আর সঠিক
চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে যেতে হতে পারে। শুষ্ক চোখের কিছু সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে
রয়েছে-
চোখে ঝাপসা দেখা, জ্বালাপোড়া বা ঘামাচির
সংবেদন, আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা, লালচে চোখ, জ্বলুনি, চোখ দিয়ে পানি পড়া, ঝাপসা দেখা,
চোখের পাতা ফুলে যাওয়া ইত্যাদি।
ঝুঁকি
যারা দীর্ঘ সময় ধরে মাস্ক পরে থাকেন
তাদের এই অবস্থা হওয়ার ঝুঁকি থাকে। আর মাস্ক ঠিক মতো না পরলেই এই সমস্যা হতে পারে
বলে, গবেষকরা জানিয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিঃশ্বাস ফেলার সময়
মাস্কের উপরিভাগ দিয়ে বাতাস বের হয় চোখে গিয়ে পড়তে থাকলে ‘ড্রাই আই’ সমস্যা দেখা দিতে
পারে। তাই মাস্ক ঠিক মতো পরতে হবে। আঁটসাঁট হয়ে মাস্ক নাকের ওপর বসেছে কি-না সে বিষয়ে
খেয়াল রাখতে হবে।
এছাড়া চশমা এবং কন্টাক্ট লেন্স পরা ব্যক্তিদের
মধ্যেও এই সমস্যার ঝুঁকি বেশি। এছাড়া যারা বিরতিহীনভাবে দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার স্ক্রিনের
সামনে কাজ করেন, এয়ার কন্ডিশনার এবং উত্তপ্ত পরিবেশে সময় কাটান তারাও এই ঝুঁকিতে
থাকেন।
এমনকি বয়স্করাও এই অবস্থায় পড়তে পারেন।
ধূমপান বা মদ্যপানও এক্ষেত্রে অন্যতম ভূমিকা পালন করতে পারে।
চিকিৎসা
চোখে কোনো সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত বিশেষজ্ঞদের
পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। আর নিজেকে নিরাপদ রাখতে নিচের কাজগুলো মেনে চলা যেতে পারে।
ধূমপান, সরাসরি বায়ুপ্রবাহ এবং বাতাস
এড়িয়ে চলা। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা। বাতাসকে শুষ্ক না করতে একটি হিউমিডিফায়ার
ব্যবহার করা। চোখের ওপর উষ্ণচাপ প্রয়োগ করা। বৈদ্যুতিক পর্দা থেকে বিরতি নেওয়া। ল্যাপটপের
স্ক্রিন দৃষ্টি স্তরের নিচে রাখা। নিয়মিত কৃত্রিম ‘টিয়ার’ ব্যবহার করা ইত্যাদি।
আরও পড়ুন