নিউ মার্কেট থানার ওসি স
ম কাইয়ুম বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পৃথিবীতে এক নামে মানুষ কি একজনই
থাকে?
সংঘর্ষের সময় ‘দাঙ্গা-হাঙ্গামা,
জ্বালাও-পোড়াও, পুলিশের কাজের বাধা দেওয়ার’ অভিযোগে নিউ মার্কেট থানার পরিদর্শক (তদন্ত)
ইয়ামিন কবিরের দায়ের করা এ মামলায় ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরও কয়েকশ ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীকে
আসামি করা হয়েছে।
এ মামলার প্রধান আসামি অ্যাডভোকেট
মকবুল হোসেনকেই এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যে দুটি দোকানের কর্মীদের বচসাকে
কেন্দ্র করে গত ১৮ এপ্রিল ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওই সংঘাতের সূত্রপাত, সেই
দোকান দুটির মালিক মকবুল নিউ মার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং বর্তমান মহানগর
দক্ষিণের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
আসামিদের কারও রাজনৈতিক পরিচয়
মামলায় বলা হয়নি। তবে মকবুলের দাবি, রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণেই তাকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় নাম আসা বাকি ২৩ জনও বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী বলে দলটির নেতাদের ভাষ্য।
ওই ২৩ জনের মধ্যে ১৪ জন মঙ্গলবার
হাই কোর্টে আবেদন করে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন। জামিনের মেয়াদ শেষে তাদের বিচারিক
আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
নিউ মার্কেটে সংঘর্ষ: বিএনপির ১৪ নেতাকর্মীর আগাম জামিন
মকবুলকে জিজ্ঞাসাবাদে ‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্য’ মিলছে: পুলিশ
জামিন শুনানি শেষে তাদের
আইনজীবী কায়সার কামাল আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের বলেন, “২৪ জনের বিরুদ্ধে যে মামলাটি
পুলিশ করেছে, তার মধ্যে ২৩ নম্বর আসামি মিন্টু মারা গেছেন দুই বছর আগে। তিনি যুবদলের
রাজনীতি করতেন। আর চার নম্বর আসামি ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি টিপু সাত বছর
ধরে জাপানে আছেন।”
এ মামলার আসামিদের রাজনৈতিক
পরিচয় এবং মিন্টু ও টিপুর বিষয়ে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তবে পুলিশ
তাদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে নারাজ।
নিউ মার্কেট থানার ওসি পাল্টা
প্রশ্ন করলেন, গ্রেপ্তারের আগে আইনজীবী কীভাবে নিশ্চিত হলেন যে, ওই দুই ব্যক্তিই সেই
ব্যক্তি?
“এই মিন্টু যে সেই মিন্টু,
তা উকিল সাহেব কীভাবে নিশ্চিত হলেন? মিণ্টু নাম কি একজনের হয়! আর টিপুর বিষয়টা… ওই যে বলা হয় ‘ঠাকুর ঘরে কে রে আমি কলা খাই না’… ব্যাপারটা এমনই মনে হচ্ছে। আসলে উকিল সাহেবের এজাহার পড়া উচিত ছিল।”
মামলার এজাহারে বলা হয়,
ওই রাতে (১৮ এপ্রিল) সংঘর্ষের পর মকবুল, আমীর হোসেন আলমগীর, মিজান, টিপু, হাজি জাহাঙ্গীর
হোসেন পাটোয়ারি, হাসান জাহাঙ্গীর মিঠু, হারুন হাওলাদার, শাহ আলম শন্টু, শহীদুল ইসলাম
শহীদ, জাপানি ফারুক, মিজান ব্যাপারী ও আসিফের ‘উসকানিতে’ রহমত, সুমন, জসিম, বিল্লাল,
হারুন, তোহা, মনির, বাচ্চু, জুলহাস, মিঠু, মিন্টু ও বাবুল সরাসরি সংঘাতে অংশ নেয়।
রিমান্ড শেষে মকবুল কারাগারে
এ মামলায় গ্রেপ্তার বিএনপি
নেতা মকবুল হোসেনকে তিন দিনের পুলিশ রিমান্ড শেষে বুধবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে
পাঠানো হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিউ
মার্কেট থানার পরিদর্শক হালদার অর্পিত ঠাকুর এদিন মকবুলকে আদালতে হাজির করে আসামিকে
কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অন্যদিকে মকবুলের পক্ষে তার আইনজীবী জামিনের আবেদন
করেন।
নিউ মার্কেটে সংঘাতের মামলায় মকবুল রিমান্ডে
নিউ মার্কেট সংঘর্ষ: গ্রেপ্তার মকবুল থানায়
ঢাকার মহানগর হাকিম ইশরাত
জাহান জামিন শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন রেখে মকবুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মকবুল হোসেনের পক্ষে শুনানিতে
ছিলেন ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন
। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আজাদ রহমান।
মকবুল হোসেনের অসুস্থতার
কথা বলে চিকিৎসার আবেদন করেছিলেন আইনজীবী ইকবাল। আদালত কারাবিধি অনুযায়ী তার চিকিৎসার
ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন।
২২ এপ্রিল বিকেলে ধানমণ্ডির
বাসা থেকে মকবুলকে গ্রেপ্তারের পরদিন তাকে রিমান্ডে পাঠিয়েছিল আদালত। পুলিশের পক্ষ
থেকে বলা হয়েছিল, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে নিউ
মার্কেট থানার ওসি স ম কাইয়ুম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নতুন করে আর পুলিশ
হেফাজত চাওয়া হয়নি, কারণ অনেক তথ্য পাওয়া গেছে, এখন যাচাই-বাছাই করতে হবে তথ্যগুলো।
যাচাই-বাছাই পরই পরবর্তী পদক্ষেপ।”