ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের এবারের আসরের শেষ দিনে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে প্রাইম ব্যাংককে দারুণ শুরু এনে দেন অভিজ্ঞ এই দুই ব্যাটসম্যান। ১৩২ বলে ১৩৭ করে আউট হন তামিম, লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে যা তার ২১তম সেঞ্চুরি। এনামুল ফেরেন ৮৫ বলে ৯৬ রান করে।
উদ্বোধনী জুটিতে দুজন তোলেন ১৯১ বলে ২১৫ রান।
আগের ম্যাচে দুজনের ২৩৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ১০ উইকেটে ম্যাচ জিতেছিল প্রাইম ব্যাংক। আগ্রাসী সেঞ্চুরি করেছিলেন দুজনই।
বিকেএসপিতে বৃহস্পতিবার টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে প্রাইম ব্যাংক। দুই ওপেনারের শুরুটা ছিল দুইরকম। প্রথম ওভারে বাউন্ডারি দিয়ে শুরুর পর এনামুল ডানা মেলে দিয়ে উড়তে থাকেন। তামিম নিজেকে রাখেন গুটিয়ে।
১৫ ওভার শেষে স্রেফ ২ বাউন্ডারিতে তামিমের রান ছিল ৬০ বলে ৩০, এনামুল তখন খেলছেন ৩০ বলে ৪৪ রান করে।
মাহমুদুল হাসানের অফ স্পিনে ছক্কা মেরে এনামুলের ফিফটি আসে ৩৮ বলে। তামিম পঞ্চাশ পূর্ণ করেন ৮৪ বলে।
ফিফটির পর থেকে অবশ্য দারুণ গতিতে ছুটতে থাকেন তামিম। ফিফটির পরপরই ছক্কা মারেন হুসনা হাবিবকে। বাউন্ডারি আসতে থাকে তার ব্যাট থেকে নিয়মিতই। ৮০ পেরিয়ে বাঁহাতি স্পিনার রকিবুল আতিকের বলে রিভার্স সুইপে বাউন্ডারির পর ছক্কা মারেন সোজা ব্যাটে মাথার ওপর দিয়ে। পরের বলে আবার চার রিভার্স সুইপে। সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন তিনি ১২২ বলে।
ফিফটি থেকে সেঞ্চুরিতে যেতে বল লাগে তার ৩৮টি। সেঞ্চুরির পর আরও বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন। আল আমিনের অফ স্পিনে টানা দুটি চারের পর ছক্কা মারেন স্লগ সুইপে। পরের বলে আবার চার পুল করে। পরের ওভারে আরেক অফ স্পিনার আরাফাত সানি জুনিয়রকে টানা দুটি ছক্কায় ওড়ান ঠিক একইভাবে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে লং অফ দিয়ে। পরের বলে আরেকটি ছক্কার চেষ্টায় ধরা পড়েন কাভার সীমানায়।
১৩ চার ও ৬ ছক্কার ইনিংস শেষ হয় ১৩২ বলে ১৩৭ করে।
এনামুল তখন ক্রিজে ৫৯ বলে ৭৫ রান করে। অনায়াসেই তিনি এগিয়ে যান তিন অঙ্কের দিকে। সেঞ্চুরি মনে হচ্ছিল স্রেফ সময়ের ব্যাপার। কিন্তু হঠাৎই বিপত্তি। রকিবুল আতিকের একটি বলে পা বাড়িয়ে খেলতে গিয়ে ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড হয়ে যান। অসাধারণ মৌসুমের শেষ ইনিংসে তার রান ৮ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৫ বলে ৯৬।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা পাওয়ার পর প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এক আসরে হাজার রানের মাইলফলক এনামুল স্পর্শ করেন আগের ম্যাচেই। গড়েন বিশ্বরেকর্ডও। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে প্রথম কোনো ব্যাটসম্যান হিসেবে এক টুর্নামেন্টে করেন হাজার রান। শেষ ম্যাচে ৯৬ রানের পর তিনি লিগ শেষ করলেন ১৫ ইনিংসে ৩ সেঞ্চুরি ও ৯ ফিফটিতে ১ হাজার ১৩৮ রান করে।
জাতীয় দলের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর ও পরে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে লন্ডন সফরের পর ফিরে লিগে ৪ ম্যাচ খেলে তামিমের রান ৮, ৯০, অপরাজিত ১০৯ ও ১৩৭।
এই দুজনের দারুণ ব্যাটিংয়ে ৫০ ওভারে প্রাইম ব্যাংক তোলে ৩৫৫ রান।
এবারের লিগে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় রান। সর্বোচ্চ রান প্রাইম ব্যাংকেরই ৩৮৮, গত ২৭ মার্চ শাইনপুকুরের বিপক্ষে। সেদিন ১৪২ বলে ১৮৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন এনামুল।