বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে তারা দুলালকে প্রত্যাখ্যানের
পাশাপাশি এই নির্বাচন পরিচালনায় গঠিত আগের কমিটিকে নতুন করে ফল ঘোষণার দাবি
জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সমর্থকরা দুলালকে বিজয়ী ঘোষণার পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে
সুপ্রিম কোর্টের ল রিপোর্টার্স ফোরামে এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক এ জে মোহাম্মদ আলী।
সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সমিতির নির্বাচনে প্রায় দেড় মাস আগে ভোটগ্রহণ
হলেও ফল ঘোষণা ঝুলে ছিল আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সাদা প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী
দুলালের আপত্তিতে। প্রাথমিক ফলে পিছিয়ে থাকা দুলাল ভোট পুনর্গণনার আবেদন করেছিলেন।
এরপর নির্বাচন পরিচালনায় গঠিত উপ-কমিটির আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ
ওয়াই মশিউজ্জামান পদত্যাগ করলে ফল নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়।
এর মধ্যে গত ১২ এপ্রিল সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি মো. অজি উল্লার
নেতৃত্বে সাত সদস্যের নতুন একটি নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ
সমর্থকরা।
বুধবার অজি উল্লাহর নেতৃত্বে ওই কমিটি বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের
বাধা উপেক্ষা করে সমিতির সম্মেলন কক্ষের তালা ভেঙে ঢুকে ভোট ‘পুনর্গণনা’
করে দুলালকে জয়ী ঘোষণা করে। তার আগে দুই পক্ষের হাতাহাতি ও মারামারিও হয়।
মারামারির পর ভোট ‘পুনর্গণনা’ শেষে সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক পদে দুলালকে বিজয়ী ঘোষণা
সেই ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে সমিতির
সাবেক সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, “সুপ্রিম
কোর্ট বাবের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফলাফল ঘোষণার মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের সাথে
যে অনভিপ্রেত আচরণ করা হয়েছিল, তারই ধারাবাহিকতায় অত্যান্ত ন্যক্কারজনকভাবে এই
কোর্টের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যকে লঙ্ঘন করে নজীরবিহীনভাবে সন্ত্রাসী এবং অগণতান্ত্রিক
পদ্ধতিতে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়।”
এর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ৭৫ বছরের ইতিহাসকে ‘কলঙ্কিত’ করা
হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “অবিলম্বে
সাংবিধানিকভাবে গঠিত নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করে এই
অচলাবস্থা নিরসনের দাবি জানাচ্ছি, সাথে আবদুন নূর দুলাল সাহেবের অবৈধ প্রক্রিয়ায়
সেক্রেটারি কক্ষ দখলকে প্রত্যাখ্যান করছি।”
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন সংবাদ
সম্মেলনে বলেন, “প্রধান বিচারপতির কাছে
আমাদের দাবি- কোর্ট খোলার পূর্বেই বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, যারা এ ঘটনা
ঘটিয়েছে, তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবেন।
“পাশাপাশি যারা নির্বাচিত হয়েছেন, তাদেরকে
পুনর্বহালের ব্যবস্থা করার জন্য দাবি জানাচ্ছি। সম্পাদক পদে রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ
আমাদের আটজন এবং বিজয়ী অন্যান্য যারা একসাথে কাজ করতে পারেন সেই রকম একটি রুলিং
আমরা বিচারপতির কাছ থেকে চাই।”
গত ১৫ ও ১৬ মার্চ ভোটগ্রহণের পরদিন গণনা শেষে আওয়ামী লীগ সমর্থিত
সাদা প্যানেলকে সভাপতিসহ ছয় পদে এবং বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল সম্পাদকসহ আট পদে
এগিয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সাবেক সম্পাদক এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন,
বাইরে থেকে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ‘লোকজন
কালো কোট পরে’ ভোট পুনর্গণনা নামে ‘ব্যালট
ছিনতাই’ করেছে।
“তারা সুপ্রিম কোর্টের ভেতরে পুলিশের ছত্রছায়ায় ব্যালট
বাক্স হাইজ্যাক করে বিজয় মিছিল করেছে। সুপ্রিম কোর্ট যেহেতু চিফ জাস্টিজের কোর্ট,
প্রধান বিচারপতির কাছে আমরা দাবি জানাচ্ছি, অনতিবিলম্বে সুপ্রিম কোর্টের একজন
বিচারপতিকে দিয়ে এ ঘটনার তদন্ত করা হোক। এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের
বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।”
সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে নীল প্যানেলের সম্পাদক
প্রার্থী ও বিদায়ী সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজলও উপস্থিত ছিলেন।