ক্যাটাগরি

ট্রাম্পের সঙ্গে এয়ারফোর্স ১ চুক্তিতে ‘ফেঁসে গেছে’ বোয়িং

২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন
নিয়ে বুধবারের এক কনফারেন্স কলে বোয়িং প্রধান ডেভ কালহউন জানিয়েছেন, বছরের প্রথম তিন
মাস পর্যন্ত নতুন এয়ার ফোর্স ওয়ান নির্মাণ প্রকল্পে ৬৬ কোটি ডলার বাড়তি খরচ করে ফেলেছে
তার প্রতিষ্ঠান।

“আমি এয়ার ফোর্স ওয়ানকে একটি অদ্ধুত বিষয়
বলবো। এর আলাপ-আলোচনাও ছিল অদ্ভুত, ঝুঁকিগুলোও ছিল নতুন যা বোয়িংয়ের নেওয়া ঠিক হয়নি।
কিন্তু আমরা এই পরিস্থিতির মধ্যেই আছি এবং দিন শেষে সেরা মানের এয়ারপ্লেন সরবরাহ করবো।”

প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা
চুক্তিগুলো বিবেচনায় নিলে ২০২২ সালের প্রান্তিক বোয়িংয়ের জন্য একটি ‘এলোমেলো প্রান্তিক’
ছিল।

২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট
ডনাল্ড ট্রাম্পের চাপের মুখে তিনশ ৯০ কোটি ডলারের বিনিময়ে দুটি নতুন এয়ার ফোর্স ওয়ান
নির্মাণের চুক্তি করেছিল বোয়িং। চুক্তিটি ছিল একটি ‘বেঁধে দেওয়া মূল্যের চুক্তি’। এর
মানে হচ্ছে, প্রকল্প শেষে খরচ যাই হোক না কেন, পূর্বনির্ধারিত মূল্যের বাইরে কোনো খরচ
দেয় না ক্রেতা। নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ক্ষতি হলেও সেই অর্থ দাবি করা যাবে না।

২০১৬ সালে সরকারি খরচ কমানোর কথা বলে বোয়িংয়ের
সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এয়ার ফোর্স ওয়ান নির্মাণের আগের চুক্তি বাতিল করার হুমকি
দিয়েছিলেন ডনাল্ড ট্রাম্প। সেবারও হুমকির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে টুইটার ব্যবহার করেছিলেন
তিনি। প্রাথমিক অবস্থায় ধারণা ছিল, পুরো প্রকল্পের খরচ হবে চারশ থেকে পাঁচশ কোটি ডলার।

সিএনএন জানিয়েছে, নতুন এয়ার ফোর্স ওয়ানের
নির্মাণ কাজ ২০২৪ সাল নাগাদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ট্রাম্প সেটি ২০২১ সালের মধ্যে চেয়েছিলেন।

ট্রাম্পের চাহিদা মতো ২০২১ সালের মধ্যে
নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেনি বোয়িং। ট্রাম্পের হুমকির মুখে চুক্তি পরিবর্তনের পর ৭৩৭
ম্যাক্স কেলেঙ্কারীতে চাকরি হারিয়েছেন বোয়িংয়ের তৎকালীন প্রধান নির্বাহী ডেনিস মুলেনবার্গ।
কালহউন তার স্থলাভিষিক্ত হলেও মহামারীর কারণে চাপে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বুধবারের কনফারেন্স কলে কালহউন জানিয়েছে,
বোয়িংয়ের এয়ার ফোর্স ওয়ান নির্মাণ প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মহামারীর প্রকোপে। “প্রতিরক্ষা
জগতে যখন একদল দক্ষ কর্মী কোভিডের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাদের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার
মতো দক্ষ এবং নিরাপত্তা ক্লিয়ারেন্স আছে এমন কর্মী আমাদের হাতে বেশি নেই। আমরা আসলে
বিভিন্ন দিক থেকে মার খেয়েছি।”

রাজনীতিবিষয়ক সাময়িকী পলিটিকো জানিয়েছে,
চুক্তির প্রথম এয়ার ফোর্স ওয়ান ২০২৪ সালে হস্তান্তরের পরিকল্পনা করেছে বোয়িং, আর দ্বিতীয়টি
হস্তান্তর করা হবে আরও এক বছর পর। তবে, মার্কিন বার্তাসংস্থা সিএনবিসির প্রতিবেদন বলছে,
উড়োজাহাজ দুটির নির্মাণ শেষ হতে আরও বেশি সময় লাগতে পারে। আর পুরোটা সময় জুড়েই এই প্রকল্পে
আর্থিক ক্ষতির মুখে থাকবে বোয়িং।