ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আকতার বৃহস্পতিবার এক
সংবাদ সম্মেলনে জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,
শেরে
বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা
হলেন- হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল কাইয়ুম (২৪),
একই বর্ষের সমাজবিজ্ঞান
বিভাগের পলাশ মিয়া (২৪) ও মাহমুদ ইরফান (২৪), বাংলা বিভাগের ফয়সাল ইসলাম (২৪) এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের জুনায়েদ বুগদাদী (১৯)।
হাফিজ আকতার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কয়েকদিন আগে তাদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হলেও বৃহস্পতিবার
তাদের এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
“সংঘাতে যারা অ্যাকটিভলি
অংশগ্রহণ করেছিল- হত্যার সাথে
সম্পর্কিত, আমাদের মূল উদ্দেশ্য হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করা। আমরা পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছি। রড,
লাঠি, ধারালো অস্ত্র নিয়ে তারা স্পটে ছিল,
তারা পাঁচজনই ঢাকা কলেজের ছাত্র।”
এক প্রশ্নের
জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “ভিডিও ফুটেজ অ্যানালাইসিস করে, তাদের সাথে কথা বলে
তাদের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছি। তারা প্রত্যক্ষভাবে এখানে অংশগ্রহণ করেছে। যেহেতু বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে, সেখানে এই পাঁচজনের কার কী দায়ভার আমরা দেখব।”
গ্রেপ্তার পাঁচজনকে রিমান্ডে নিয়ে
জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হবে জানিয়ে হাফিজ আকতার বলেন, “জানতে চাওয়া
হবে- তারা কেন এভাবে মাঠে নেমেছে, ধারালো
অস্ত্র কোথা থেকে এসেছে।”
নিউ মার্কেটে সংঘর্ষ: নাহিদ হত্যায় ঢাকা কলেজের ৬ ছাত্র শনাক্ত
নিউ মার্কেটে সংঘর্ষ: মোরসালিনের হত্যাকারী কে, ‘ক্লু পাচ্ছে না’ পুলিশ
গত ১৮ এপ্রিল ইফতারের টেবিল বসানো নিয়ে নিউ মার্কেটের দুই দোকানের কর্মীদের
বচসার পর এক পক্ষ ঢাকা কলেজ ছাত্রাবাস থেকে ছাত্রলীগের কয়েক কর্মীকে ডেকে আনে।
তারা গিয়ে মারধরের শিকার হওয়ার পর ছাত্রাবাসে ফিরে আরও শিক্ষার্থীদের নিয়ে সোমবার
মধ্যরাতে নিউ মার্কেটে হামলা চালাতে গেলে বাঁধে সংঘর্ষ।
ওই সংঘর্ষ চলে পরদিনও। দিনভর সংঘর্ষের সময় ডেলিভারিম্যান নাহিদকে কুপিয়ে জখম
করা হয়। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে তিনি মারা যান।
একইদিনে সংঘর্ষের সময় দুপুরের দিকে নুরজাহান মার্কেটের সামনে ইটের আঘাতে আহত
হন মোরসালিন। দুদিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়।
মোরসালিন হত্যার বিষয়ে হাফিজ আকতার বলেন,
“নাহিদের ব্যাপারে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করা
গেলেও মুরসালিনের ব্যাপারে এখনো সে ভাবে কোন তথ্য বা সাক্ষী পাওয়া যায়নি। এটা পেতে
একটু সময় লাগবে।”
সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমে ব্যবহার করে ওই ঘটনাকে ‘বিস্তৃত
করার’ চেষ্টাও হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন এই গোয়েন্দা
কর্মকর্তা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন দুদিন
আগে জানিয়েছিলেন, নাহিদ হত্যার ঘটনায়
ছয়জনকে তারা চিহ্নিত করেছেন, তারা সবাই ঢাকা কলেজের
ছাত্র। ঘটনার সময় কয়েকজন হেলমেট পরা ছিল।
গোয়েন্দা পুলিশ গত রোবাবার ঢাকা কলেজ ছাত্রাবাসে অভিযানও
চালিয়েছিল। তখন এক শিক্ষার্থীকে আটক করা হলেও পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
অবশ্য প্রত্যক্ষদর্শী এবং ভিডিও বিশ্লেষণ করে কয়েকজনকে চিহ্নিত করে সংবাদমাধ্যমের খবরে এসেছিল যে তারা সবাই ঢাকা কলেজ
ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।
ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই এখন। ২০১৬ সালে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন
করা হলও তারা আর পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি। কলেজের ছাত্রলীগ এখন কয়েকটি ভাগে
বিভক্ত।
সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি হত্যা মামলাসহ সংঘর্ষ এবং বোমাবাজির ঘটনায় মোট পাঁচটি
মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের মামলায় নিউ মার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেন
ছাড়া আর কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।