শুক্রবার সকালে তার কফিন নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়ে আসা হলে সেটি দলীয় পতাকায় মুড়িয়ে দেওয়া হয়।
পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা প্রয়াত সহকর্মীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান।
পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তারা সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। বিএনপি ছাড়াও দলের অঙ্গসংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় মান্নানের কফিনে।
গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিকালে মারা যান এমএ মান্নান। তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র মান্নান ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়ার সরকারে প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। বিএনপির গাজীপুর জেলা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
মান্নান অধ্যাপনা থেকে ১৯৭৮ সালে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দলে (জাগদল) যোগ দিয়ে রাজনীতিতে নামেন। এই জাগদলই ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
১৯৯১ সালে বিএনপির টিকেটে গাজীপুরে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মান্নান। এরপর বিএনপি সরকার গঠন করলে ধর্ম এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী করা হয় মান্নানকে। ২০০১ সালেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন হলে প্রথম নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে ২০১৩ সালে মেয়র নির্বাচিত হন মান্নান। কিন্তু এরপর তিনি গ্রেপ্তার হয়ে তিনি কযেক দফা কারাগারে ছিলেন।
বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে মান্নান দলের ভাইস চেয়ারম্যান হন। এর আগে তিনি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় হাসপাতাল থেকে মান্নানের কফিন নয়া পল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে তার জানাজায় অংশ নেন দলের নেতাকর্মীরা।
বিএনপি নেতাদের মধ্যে নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসুর মাহমুদ চৌধুরী, শাহজাহান ওমর, শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, জয়নুল আবদিন ফারুক, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন এ্যানি, মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, হুমায়ুন কবির খান, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবু আশফাক খন্দকার, আনোয়ার হোসেইন, মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল উপস্থিত ছিলেন জানাজায়।
জানাজার আগে প্রয়াত নেতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এম এ মান্নানের ছেলে মনজরুল করীম রনি তার প্রয়াত বাবার জন্য সকলের কাছে দোয়া চান।
পরে মান্নানের কফিন অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয় গাজীপুরে। সেখানে জুমার পর রাজবাড়ি মাঠে এবং আসরের পর সালনায় আরও দুই দফা জানাজা শেষে গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরাস্থানে তাকে দাফন করা হবে।