ক্যাটাগরি

ঈদের জন্য সাজছে চট্টগ্রামের বিনোদনকেন্দ্রগুলো

নগরীর পাহাড়তলীতে রেলওয়ের কৃত্রিম জলাশয় ফয়’স লেকে গড়ে তোলা এমিউজমেন্ট পার্ক এবং সি ওয়ার্ল্ড গত দুই বছরে চারটি ঈদ আর দুটি পহেলা বৈশাখে বন্ধ ছিল মহামারীর কারণে।

জীর্ণতা ভর করেছিল রাইডগুলোতে। বিবর্ণ হয়ে পড়েছিল অঙ্গসজ্জা। তাতে নতুন করে লাগছে রঙের ছোঁয়া; মেরামতও করা হচ্ছে।

শিশুদের জন্য যোগ হয়েছে টয় ট্রেন। মেরি গো রাউন্ডের ঘোড়াগুলোর বাহারি রঙ বহু দূর থেকেও নজর কাড়ছে। লেকের ধারে ওয়াকওয়েতে রঙিন নকশা পুরো আবহকে করে তুলেছে বর্ণময়।

পার্ক পরিচালনাকারী কোম্পানি কনকর্ডের উপ-ব্যবস্থাপক (মার্কেটিং) বিশ্বজিৎ ঘোষ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঈদের পরদিন থেকে সাত দিনে মোট ৩৫-৪০ হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হবে বলে আশা করছি। কেননা গত দুবছর মহামারীর কারণে মানুষ ঈদে কোথাও বেড়াতে পারেনি।”

দর্শনার্থীদের আগ্রহের কথা মাথায় রেখে ফয়’স লেকে নৌভ্রমণের জন্য থাকা আটটি নৌযানের সঙ্গে যোগ হচ্ছে আরও দুটি নতুন নৌযান। লেকের অপর পারের সি ওয়ার্ল্ডে চলছে পরিচ্ছন্নতার কাজ। ঈদে সেখানে থাকছে ডিজে শো।

বিশ্বজিৎ জানান, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ভ্রমণ পিপাসুরা রিসোর্ট ও বাংলো বুকিং দিতে শুরু করেছেন।

এই বিনোদন কেন্দ্রের পাশেই আছে জেলা প্রশাসন পরিচালিত চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, যা নগরীর মানুষের অন্যতম বিনোদন আকর্ষণ।

তীব্র গরমে এখন চিড়িয়াখানার প্রাণীদের প্রাণ প্রায় ওষ্ঠাগত। খাঁচায় থাকা চৌবাচ্চার জলে নেমে গরম থেকে বাঁচার চেষ্টায় আছে বাঘ-সিংহ-কুমিরসহ সব প্রাণী।

নগরীর কাজীর দেউড়ি এলাকার চিটাগাং শিশু পার্কের রাইডগুলোতে নতুন রঙ লেগেছে, ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে সব।

নগরীর কাজীর দেউড়ি এলাকার চিটাগাং শিশু পার্কের রাইডগুলোতে নতুন রঙ লেগেছে, ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে সব।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত দুই বছরের চারটি ঈদে যেহেতু বন্ধ ছিল, তাই এবার ঈদের সময় চার-পাঁচদিনে প্রায় ৬০-৭০ হাজার দর্শনার্থী আসার সম্ভাবনা আছে। সে লক্ষ্যে আমরা ছোটোখাটো কিছু মেরামত কাজ করছি।

“এছাড়া ঈদের ছুটির সময়ে পরিচ্ছন্নতার জন্য অস্থায়ী লোক নিয়োগ দেওয়া হবে। গরমে প্রাণীরা যাতে ভালো থাকে, সেদিকেও নজর দেয়া হচ্ছে।”

নগরীর কাজীর দেউড়ি মোড়ে চট্টগ্রাম শিশু পার্ক ঘুরেও দেখা গেছে ঈদ প্রস্তুতি। মেরামত কাজ প্রায় শেষ, চলছে শেষ মুহূর্তের ধোয়ামোছা।

পার্ক পরিচালনাকারী ওয়ান্ডার ল্যান্ডের জিএম মো. নাছির উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত দুই বছরে প্রায় ১০-১১ মাস পার্ক বন্ধ ছিল। এত দীর্ঘ সময়ের ক্ষতি আসলে এক ঈদে পূরণ সম্ভব না। তবে এবার ঈদে বেশি লোক সমাগম হলে আমরা হয়ত কিছুটা শক্তি ফিরে পাব। সেই আশায় আছি।”

নগরীর আরেক প্রান্ত বহদ্দারহাট এলাকায় স্বাধীনতা কমপ্লেক্সও নগরবাসীর আরেক বিনোদন গন্তব্য।

সেই কমপ্লেক্স পরিচালনাকারী ওয়েল এন্টারপ্রাইজের জিএম মো. আলী জনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা সারাবছর ধরেই মেনটেইনেন্স কাজ করে থাকি। ঈদের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত আছি।

“তবে এবারও ঈদে জনসমাগম কেমন হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। কারণ এবার পহেলা বৈশাখে করোনার বিধি নিষেধ ছিল না। কিন্তু এত বড় উৎসবের দিনেও প্রত্যাশিত দর্শনার্থী আসেনি।”

নগরীর পার্ক ও সরকারি-বেসরকারি বিনোদন কেন্দ্রের পাশাপাশি উৎসব ছুটিতে সবচেয়ে বেশি লোক সমাগম হয় পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে। বিনোদন কেন্দ্র ও উন্মুক্ত স্থানে বেড়ানো নিরাপদ করতে প্রস্তুত স্থানীয় প্রশাসন।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর তৌহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এবার যেহেতু দু’বছর পর স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে, তাই দর্শনার্থীদের প্রচুর চাপ থাকবে।

“তাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও নির্বিঘ্ন বিনোদনের ব্যবস্থা করতে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। সব বিনোদন কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা থাকবেন। পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবেন।”