ক্যাটাগরি

বৈশাখের খরতাপ কাটতে আরও অপেক্ষা

টানা সপ্তাহ খানেক ধরে এমন তাপপ্রবাহ বিরাজ করলেও মে মাসের শুরুতে ঝড়-বৃষ্টির আভাস রয়েছে; যখন রোজার ঈদ উৎসবে সময় কাটাবে দেশবাসী।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, তখন প্রশমিত হতে পারে বৈশাখের এ খরতাপ, যা ভোগাতে শুরু করে চৈত্রের শেষ দিকের এক দফা তাপপ্রবাহে।

আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানান, শুক্রবার টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাঙ্গামাটি, রাজশাহী ও পাবনা জেলাসহ খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকতে পারে। দেশজুড়েই দিন ও রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

বৈশাখের খরতাপে ছায়া পেয়ে সোহরাওয়ার্দী বিশ্রাম নিতে দেখা যায় ছিন্নমূল মানুষদের। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

বৈশাখের খরতাপে ছায়া পেয়ে সোহরাওয়ার্দী বিশ্রাম নিতে দেখা যায় ছিন্নমূল মানুষদের। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

এবার বৃষ্টির দেখা না মেলায় চৈত্রের মাঝামাঝি থেকে গরমের অস্বস্তি বাড়তে থাকে। বছরের শেষ সপ্তাহের তাপপ্রবাহে তা আরও বেড়ে যায়। আর বৈশাখের শুরুর দিন কোথাও কোথাও ঝড়বৃষ্টিও হলেও তা অব্যাহত না থাকায় কমেনি গরমের প্রতাপ।

উল্টো খরতাপে পারদ চড়তে থাকে তড়তড়িয়ে। গত ১৫ এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় রাজশাহীতে ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা ছিল আট বছরের সর্বোচ্চ। আর ২৩ এপ্রিল রাজশাহী, ঈশ্বরদী ও চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ।

শনিবার ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং কুমিল্লা অঞ্চলসহ রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিজলী চমকসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

ঈদের সময় ঝড়-বৃষ্টির আভাস
 

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ৩৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৩৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গত কয়েকদিনের তাপপ্রবাহের কারণে দিন ও রাতে অস্বস্তিকর ভ্যাপসা গরম সর্বত্র। এতে দূরের ঈদযাত্রায় অস্বস্তি পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের।

ছুটির দিন হওয়ায় এবং ঈদ করতে রাজধানীবাসীর বড় অংশ গ্রামে যেতে ঢাকা ছাড়ায় এদিন রাজপথে যানজটের দেখা মেলেনি। তবে ঈদের কেনাকাটায় মার্কেটগুলোয় ছিল ভিড়।

পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং কুমিল্লা অঞ্চলসহ রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিজলী চমকসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

ঈদের ছুটিতে বাড়ি যেতে শুক্রবার সকালে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

ঈদের ছুটিতে বাড়ি যেতে শুক্রবার সকালে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে।

বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে পারে বলে আভাস রয়েছে পরবর্তী পাঁচ দিনেও।

এর মধ্যে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদ হতে পারে সোম বা মঙ্গলবার (২ বা ৩ মে)। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে উৎসব উদযাপন করতে হতে পারে দেশবাসীর বলে জানান আবহাওয়াবিদ নাজমুল। বৃষ্টি নামলে তখন দিনভর অস্বস্তিকর গরম না থাকার পূর্বাভাস রয়েছে বলে জানান তিনি।

নদীবন্দরে ঝড়ো হাওয়ার আভাস   

শুক্রবার রাত ৯টা থেকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির কারণে কিছু নদীবন্দরে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

এতে বলা হয়, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চলের উপর দিয়ে পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম দিক থেকে ঘন্টায় ৬০-৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ী ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এসব এলাকার নদী বন্দরগুলোকে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এছাড়া যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, বরিশাল ও কুমিল্লা ঞ্চলের উপর দিয়ে ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।