তবে পোল্যান্ড এই অভিযোগ ‘গুজব’ উল্লেখ করে উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, কিইভের সমর্থকদের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরির লক্ষ্যে এমন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
সের্গেই নারিশকিন বৃহস্পতিবার অপ্রকাশিত গোয়েন্দা তথ্যের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এতে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও এর নেটো মিত্রদেশ পোল্যান্ড পশ্চিম ইউক্রেইনের কিছু অংশে পোলিশ নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র করছে।
ফলে শেষমেষ পশ্চিমা দেশ এবং রাশিয়ার মধ্যে ইউক্রেইনকে ভাগ করতে বাধ্য হওয়ার মধ্য দিয়ে যুদ্ধ শেষ হতে পারে বলে একরকম স্পষ্ট ইঙ্গিতই দিল মস্কো।
এসভিআর এর প্রকাশিত বিরল এক বিবৃতিতে নারিশকিন আরও বলেছেন, রাশিয়ার ফরেইন ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের পাওয়া গোয়েন্দা তথ্যানুযায়ী, ওয়াশিংটন ও ওয়ারশ ইউক্রেইনে ইতোপূর্বের পোল্যান্ড শাসিত অঞ্চলে পাকাপোক্ত সামরিক ও রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে।
অতীতের বিভিন্ন সময় পোল্যান্ড এমন কিছু ভূখণ্ড শাসন করেছে যা বর্তমানে ইউক্রেনের অংশ। অঞ্চলটি এখন পশ্চিম ইউক্রেইন হিসেবে পরিচিত; এ অঞ্চলের মধ্যে আছে লিভভ নগরীও। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে পশ্চিমের এ অঞ্চলটি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল।
এসভিআর প্রধানের দাবি, এ মুহূর্তে একটি পরিকল্পনা নিয়ে পোল্যান্ডের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ পরিকল্পনার আওতায় নেটোর ম্যান্ডেট ছাড়াই পোল্যান্ডের ‘শান্তিরক্ষী বাহিনী’ পশ্চিম ইউক্রেইনের কিছু অংশে প্রবেশ করবে; সেখানে তাদের রুশ বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়ানোর সম্ভাবনা কম।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সোভিয়েত আমলের কেজিবি’র বিদেশে গুপ্তচরবৃত্তির বেশির ভাগ দায়িত্ব পেয়েছে এসভিআর। তারা তাদের সর্বশেষ এই অভিযোগের পক্ষে কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি। রয়টার্সও এ অভিযোগ যাচাই করতে পারেনি।
পোল্যান্ডের স্পেশাল সার্ভিসেস কোঅর্ডিনেটর-এর মুখপাত্র স্ট্যানিস্ল জারিন ‘এসভিআর’ এর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, “বেশ কয়েক বছর ধরে পশ্চিম ইউক্রেইনে পোল্যান্ডের আক্রমণের পরিকল্পনা করার মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।”
“এই রুশ অপপ্রচারের লক্ষ্য হল ইউক্রেইন ও পোল্যান্ডের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি করা এবং পিএল-ইউএ সহযোগিতা ক্ষুন্ন করা।”
রাশিয়ার চলমান আগ্রাসনে ইউক্রেইনকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন দিয়ে আসছে পোল্যান্ড। সীমান্ত দিয়ে তারা ইউক্রেইনে অস্ত্র পাঠাচ্ছে এবং প্রায় ৩০ লাখ ইউক্রেইনীয় শরণার্থীকে আশ্রয়ও দিয়েছে পোল্যান্ড।
রাশিয়ার একজন জ্যোষ্ঠ আইনপ্রণেতা ও ফেডারেশন কাউন্সিলের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির ডেপুটি চেয়ার সিনেটর আন্দ্রেই ক্লিমোভও বৃহস্পতিবার বলেছেন, ইউক্রেইনের একাংশে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করছে পোল্যান্ড। তবে তিনিও তার এ দাবির পক্ষে কোনও প্রমাণ দেননি।
বেশ কয়েক দিন ধরেই রাশিয়া ইঙ্গিত দিয়ে আসছে যে, জোর করে ইউক্রেইনকে ভাগ করার মধ্য দিয়ে চলমান সংঘাতের অবসান হতে পারে।
এ সপ্তাহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একজন ঘনিষ্ঠ মিত্র বলেছিলেন, ইউক্রেইন বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রে ভেঙে পড়ার দিকে যাচ্ছে। তিনি এটিকে রাশিয়াকে অপদস্থ করতে কিইভকে কাজে লাগানোর যুক্তরাষ্ট্রের চেষ্টা বলে বর্ণনা করেন।