ঢাকা-চট্টগ্রাম
মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের প্রায় ১০৫ কিলোমিটার এলাকা শনিবার দুপুর পর্যন্ত যানজটমুক্ত
দেখা গেছে। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন চালক ও যাত্রীরা।
সকাল থেকে
দুপুর পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, চট্টগ্রামমুখী লেনে গাড়ির
চাপ বেশি রয়েছে। আর ঢাকামুখী লেনে পণ্যবাহী পরিবহনের চাপ বেশি। তবে কোথাও যানজট
নেই।
ঢাকা থেকে
কুমিল্লার উদ্দেশে ছেড়ে আসা এশিয়া পরিবহনের বাসচালক মো. হাফিজ উদ্দিন বিডিনিউজ
টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সায়েদাবাদ থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত টুকটাক যানজট ছিল। তবে
দাউদকান্দি থেকে কুমিল্লা শহরে প্রবেশ পর্যন্ত তেমন কোনো যানজট নেই। আমরা এখন
স্বস্তিতে আছি।
“দুই থেকে আড়াই
ঘণ্টার মধ্যে কুমিল্লা থেকে ঢাকা পৌঁছাতে পারছি। ঈদের পরও আমরা এমন পরিবেশ চাই।”
ঢাকা থেকে
কুমিল্লাগামী বাসযাত্রী মাহফুজ আলম বলেন, “সড়ক সংস্কারের কারণে কয়েক মাস প্রায়ই
যানজটে আটকে দুর্ভোগে পড়েছি। তবে শেষ পর্যন্ত স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারছি, এটাই
আনন্দের। মানুষ নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে চায়, এজন্য হাইওয়ে পুলিশকে সব সময় তৎপর
থাকতে হবে।”
আরেক বাসচালক
হানিফ মিয়া বলেন, “সংস্কারকাজ বন্ধ এবং হাইওয়ে পুলিশ তৎপর থাকায় মহাসড়কে যানজট
নেই। তবে কোথাও দুর্ঘটনার কারণে যানজট যেকোনো সময় লেগে যেতে পারে। এক্ষেত্রে
হাইওয়ে পুলিশকে সব সময় তৎপর থাকতে হবে।”
কুমিল্লা সড়ক ও
জনপথ (সওজ) বিভাগ জানিয়েছে, সদর থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার
এলাকায় মহাসড়কের এক বছর মেয়াদি চার লেনের পরীক্ষামূলক সংস্কারকাজ চলছে। গত বছরের
নভেম্বর মাসে চান্দিনা উপজেলার কাঠেরপুল এলাকা থেকে এ কাজ শুরু হয়। জানুয়ারি থেকে
সংস্কারকাজটি পুরোদমে শুরু হয়।
চার মাস ধরে
সংস্কারকাজের কারণে মহাসড়কে প্রায় সময়ই যানজটের সৃষ্টি হয়ে দিনভর মানুষকে
ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। কারণ কাজের সময় এক লেন বন্ধ রাখা হয়। ফলে দুইমুখী গাড়ি এক
লেন দিয়ে চলাচল করে।
বিশেষ করে
রজমানে প্রায়ই যানজটে আটকে তীব্র গরমে মহাসড়কে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে চালক ও
যাত্রীদের। এ ছাড়া মহাসড়কের পাশে বাজার বসায় এবং তিন চাকার যান প্রায়ই মহাসড়কে
ঢুকে পড়ায় ঈদযাত্রায় যানজট সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা করেছিলো চালক ও যাত্রীরা। তবে ২৫
রমজানের পর থেকে সওজ কাজ বন্ধ রাখায় মহাসড়ক এখন যানজটমুক্ত।
দুপুরে হাইওয়ে
পুলিশ কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, “মহাসড়কে যান
চলাচল স্বাভাবিক রাখতে দিনরাত কাজ হচ্ছে। এখন মহাসড়ক সম্পূর্ণ যানজটমুক্ত। বৃহস্পতিবার
ও শুক্রবার অন্যান্য সময়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ গাড়ি চলাচল করেছে, তবে কোথাও
যানজট সৃষ্টি হয়নি। আশা করছি, ঈদযাত্রায় যাত্রীদের কোনো সমস্যা হবে না। মহাসড়ক এখন
সম্পূর্ণ ভালো।
রহমত উল্লাহ
আরও বলেন, “কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ পর্যন্ত আমাদের এলাকা।
প্রতিটি স্থানে আমরা তৎপর রয়েছি। মহাসড়কে আমাদের ৫৬টি টহল দল ও ৩০টি কুইক রেসপন্স
টিম কাজ করছে।
“এ ছাড়া
প্রস্তুত রয়েছে ১১টি রেকার টিম। কোথাও কোনো গাড়ি বিকল হলে বা দুর্ঘটনার কবলে পড়লে
দ্রুত সেটি অপসারণ করা হচ্ছে। আশা করছি, আমরা যেকোনো সমস্যা দ্রুত সময়ের মধ্যে
সমাধান করতে পারব।”
সওজ বিভাগ
কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, “বর্তমানে মহাসড়কের কোথাও কোনো
ধরনের খানাখন্দ নেই। যার কারণে মানুষ নিরাপদ চলাচল করতে পারছে। মহাসড়কের কুমিল্লার
অংশ এখন যানজটমুক্ত। যেসব জায়গায় হাটবাজার আছে সেখানে হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে আমাদের
লোকেরাও কাজ করছে। তারা যানজট রোধে সার্বক্ষণিক কাজ করছে।”