শনিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সাদিয়া আক্তার নামের ওই নারী মারা যান বলে দেবিদ্বার থানার ওসি আরিফুর রহমান জানান।
২০ বছর বয়সী সাদিয়া দেবিদ্বার উপজেলার গুনাইঘর গ্রামের নুরুল ইসলাম সরকারের ছেলে আসাদ সরকারের স্ত্রী ও একই উপজেলার পদ্মকোট গ্রামের মো. ফরিদুল আলম সরকারের মেয়ে।
এ ঘটনায় আসাদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দেবিদ্বার উপজেলা সদরের বানিয়াপাড়া মাটিয়া মসজিদসংলগ্ন একটি ওয়ার্কশপের দোকান চালান তিনি।
সাদিয়ার পরিবারের অভিযোগ, যৌতুক দিয়ে গত দুই বছর আগে সাদিয়ার সঙ্গে আসাদের বিয়ে হয়। সম্প্রতি আসাদ আরও পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। সেই টাকা দিতে না পারায় গত ২৩ এপ্রিল সকাল ৮টার দিকে সাদিয়ার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় আসাদ।
গুরুতর অবস্থায় সাদিয়াকে প্রথমে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয় ।
ঘটনার পরদিন হাসপাতালে সাদিয়া বলেন, “আসাদ আমাকে কয়েকবার বলেছে, টাকা না পেলে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করবে। গত ৫ মাস ধরে যৌতুকের জন্য সে আমাকে শারীরিক অনেক নির্যাতন করেছে। আমার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির সবাই শুধু বলত, বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আয়।
“টাকা না দেওয়ায় আমার শরীরে পেট্রল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় আমার স্বামী। আমি আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও আমাকে বাধা দেওয়া হয়।”
সাদিয়ার মা সামসুন্নাহার বেগম বলেন, “যৌতুক না পেয়ে আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। স্বামীর শত নির্যাতন সহ্য করেও গত দুই বছর আমার মেয়ে সংসার করেছে। আমি খুনি আসাদের ফাঁসি চাই।”
ওসি বলেন, ঘটনার দুইদিন পর সাদিয়ার বাবা বাদী থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। এরপর গত ২৮ এপ্রিল রাতে আসাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ এবং পরদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ভিকটিম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ায় এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।