ঢাকার পুলিশ কমিশনার মুহা. শফিকুল ইসলাম রাজধানীবাসীর উদ্দেশে বলেছেন, “ঈদ জামাতে জঙ্গি হামলায় আশংকা নেই, তবে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ছাতা ও জায়নামাজ- এই দুটি জিনিস ছাড়া অন্য কিছু সঙ্গে আনবেন না।”
রোববার বাংলাদেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে সোমবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে; আর দেখা না গেলে ঈদ হবে মঙ্গলবার। সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররমে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধাত হবে, কবে ঈদ উদযাপন করবেন বাংলাদেশের মুসলমানরা।
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত দুই বছর জাতীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাত হয়নি। এবার সেখানে ৩৫ হাজার মানুষের জামাত আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
রোববার সকালে জাতীয় ঈদগাহ মাঠের নিরাপত্তা প্রস্তুতি ঘুরে দেখে পুলিশ কমিশনার বলেন, রাজধানীতে মাঠে ঈদের জামাত এবারও কম হবে। মসজিদসহ মোট ১ হাজার ৪৬৮টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে ঢাকায়। প্রতিটি জামাতেই পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বায়তুল মোকাররমে পাঁচটি জামাত, প্রথমটি সকাল ৭টায়
ঈদ কবে, জানা যাবে রোববার সন্ধ্যায়
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কমিশনার বলেন, ঈদ জামাতকে কেন্দ্র করে জঙ্গি হামলার কোনো আশঙ্কা এবার তারা দেখছেন না।
“শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে (২০১৬ সালে) হামলার উদ্দেশ্য ব্যক্তিকেন্দ্রিক ছিল; যিনি ইমামতি করছিলেন, তাকে হত্যার জন্যই হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা, ঈদ জামাতে নয়।”
এবার ঈদ করতে ঢাকার বাইরে যাওয়া মানুষের মূল্যবান সম্পদ ‘নিজ দায়িত্বে সুরক্ষিত’ রাখার বিষয়টি আবারও মনে করিয়ে দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার।
তিনি বলেন, “সম্পদ অরক্ষিত রেখে যদি ভেবে থাকেন পুলিশ পাহারা দেবে, এটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।”
ঢাকা মহানগরে ৫০ থানায় নিরাপত্তা দিতে রাতে অতিরিক্ত ২ হাজার ৫০০ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন বলে তথ্য দেন শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশের। তারপরও ব্যক্তিকেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাতো নিতে হবে।”
র্যাবের নিরাপত্তা আয়োজন
র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনও রোববার জাতীয় ঈদগাহ মাঠে গিয়ে নিরাপত্তা প্রস্তুতি পরিদর্শন করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের সামনে র্যাবের নিরাপত্তা প্রস্তুতি তুলে ধরেন।
র্যাব প্রধান বলেন, ঈদ ঘিরে বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণী বিতানে প্রচুর কেনাবেচা, আর্থিক লেনদেন ও জনসমাগম হয়। বাজারে তখন ‘অসাধুচক্র’ সক্রিয় থাকে। মানুষ ঈদ করতে বাড়ি ফেরার কারণে সড়ক, রেল এবং নৌ-পথে প্রচুর যাত্রী সমাগম হয়। ঈদের দিন ঈদের জামাতে সমবেত হয় বিপুল সংখ্যক মানুষ।
“ঈদের সময় অধিকাংশ মানুষ ছুটিতে থাকে বলে ঢাকা শহর ফাঁকা হয়ে যায়। ছিনতাই, চুরি ও ডাকাতির মাত্রা বৃদ্ধিসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের আশঙ্কা থাকে।”
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রতি বছরের মত এবারও ঈদ ঘিরে বিশেষ নিরাপত্তা নিয়েছে র্যাব। সারাদেশ নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ঈদগাহসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে র্যাবের বম ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে তল্লাশি চালানো হয়েছে।
নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, লঞ্চ টার্মিনালে অস্থায়ী র্যাব ক্যাম্প এবং পথে অস্থায়ী চেকপোস্ট করা হয়েছে।
“সড়ক এবং নৌপথে চাঁদাবাজি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও অতিরিক্ত যাত্রী বহনকরাসহ বিভিন্ন হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ড রোধকল্পে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের সহায়তায় কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।”