মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর তথ্যের ভিত্তিতে রোববার ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এক ফেইসবুক স্ট্যাটাসে এ তথ্য জানিয়েছেন।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে দুই বছর পর এবার বিধিনিষেধবিহীন ঈদ উদযাপন হতে যাচ্ছে। এ কারণে এবার স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে রাজধানী ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়বে বলেই ধারণা।
এর আগের চার ঈদের সময়ই লকডাউনে জনচলাচলে কড়াকড়ি ছিল। তবে বিধিনিষেধ উপেক্ষা করেই ওইসব ঈদে ঢাকা ছাড়তে মানুষের ঢল নেমেছিল। সরকারি ঘোষণায় গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও বিকল্প বাহনে সেসময় রাজধানী ছেড়েছিলেন তখন।
ঈদে টানা ছয় দিনের ছুটির প্রথম দিন শুক্রবার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে।
সবশেষ ২০২১ সালে জুলাইয়ে কোরবানি ঈদের সময় লকডাউনের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষের পরিসংখ্যান তুলে ধরতে সেসময়ও মোস্তাফা জব্বার ফেইসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন।
সেসময় তিনি জানিয়েছিলেন, ১৫ থেকে ২২ জুলাই আট দিনে গ্রামমুখী ঢলে মানুষের হাতে ১ কোটি ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৬৮৩টি সিম ছিল।
রোববারও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ঈদযাত্রায় সময়ে গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ও টেলিটকের কত সংখ্যক সিম ঢাকার বাইরে গেছে সেই পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।
লকডাউনের বিরতিতে ঢাকা থেকে গ্রামে গেছে কোটির বেশি মোবাইল সিম
ঈদে ঢাকা ছেড়েছিল কোটির বেশি মানুষ?
এতে দেখা যায়, ২৯ ও ৩০ এপ্রিল গ্রামীণফোনের ১৮ লাখ ৬২ হাজার ১৩৬টি, রবির ১১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৪০টি, বাংলালিংকের ১১ লাখ ২৪ হাজার ৭৩২টি এবং টেলিটকের ১ লাখ ৪৬ হাজার ৮টি সিম নিয়ে মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। অর্থাৎ দুইদিনে ব্যবহারকারীরা মোট ৪৩ লাখ ৯ হাজার ২১৬টি সিম নিয়ে ঢাকা ছেড়ে যান।
মোস্তফা জব্বার জানান, এর আগের দুইদিনেও আনুমানিক ৩০ লাখ সিম ঢাকা ছেড়েছে।
সে হিসাবে ২৭ থেকে ৩০ এপ্রিলে ৭৩ লাখ ৯ হাজার ২১৬টি সিম নিয়ে ঢাকা ছেড়েছেন মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা।
ঈদযাত্রায় ভোগান্তি এড়াতে এবার পরিবারের সদস্যদের আগেই বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন অনেকে। ছুটি শুরুর প্রথম দিন শুক্রবার তাই উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়নি ঢাকার গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি
তবে সিমের এ সংখ্যা দিয়ে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া ব্যক্তির সংখ্যা নির্ধারণ করার সুযোগ কম। কেননা এক্ষেত্রে একজনের কাছে একাধিক সিমও থাকতে পারে। সে বিষয়টিও পরিষ্কার করেছেন মন্ত্রী।
তিনি ওই পোস্টে বলেছেন, “এজন্যই আমরা সিমের হিসাব করছি, মানুষের না। তবে এর সাথে সিম ছাড়া লোকও ঢাকা ছেড়েছে।”
পরিবারের শিশু ও অন্য অনেকেই সিম নিবন্ধন করতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সিমের জন্য তো এনআইডি লাগে। আমাদের হিসাবে ১৮ কোটি সিমের মাঝে প্রকৃত ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি। এর মানে হচ্ছে জনপ্রতি গড়ে সিম হচ্ছে দেড়টি। আবার সিম নেই, তেমন মানুষতো সিমধারীর চেয়ে দেড়গুণের বেশি হতে পারে।”
ফলে অন্তত সিমের সমসংখ্যক মানুষ ঢাকা ছেড়েছে বলে ধারণা করছেন তিনি।