দিল্লির দাদু মেডিকেল সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান
ডা. নিবেদিতা দাদু বলেন, “ত্বকের পোড়া মানে কোষের ক্ষয় যা প্রধানত ভুল কসমেটিক পণ্য
ব্যবহারের কারণে হয়ে থাকে। এটা অতিরিক্ত সূর্যরশ্মি, বিকিরণ বা বৈদ্যুতিক যন্ত্রের
সঙ্গে যোগাযোগের কারণেও হতে পারে।”
ফেমিনা ডটইন’য়ে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহারে ত্বকে হওয়া ক্ষতি
সম্পর্কে ডা. নিবেদিতা দাদুর বিস্তারিত পরামর্শ সম্পর্কে জানা যায়।
ত্বকে পোড়াভাবের কারণে সাধারণ র্যাশ থেকে শুরু করে অ্যালার্জির
গুরুতর সমস্যা পর্যন্ত দেখা যেতে পারে। এছাড়াও ত্বকে খুব বেশি জ্বলুনির সমস্যা দেখা
দেওয়া, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সঙ্গে জড়িত।
‘অ্যালার্জিক কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস’য়ের লক্ষণগুলো হল-
ত্বকে লালচেভাব, ফোলাভাব, চুলকানি ইত্যাদি।
প্রসাধনীর কারণে হওয়া পোড়াভাব সাধারণত, মুখ, চোখ, কান ঘাড়
ইত্যাদি স্থানে দেয়।
যে কারণে প্রসাধনী
ত্বকে পোড়াভাব সৃষ্টি করে
ত্বক পরিচর্যার প্রসাধনীতে সুগন্ধি এবং সংরক্ষক থাকার কারণে
ত্বক-পোড়া সমস্যা দেখা দেয়।
গন্ধহীন প্রসাধনীতেও রাসায়নিক উপাদান থাকে যা ত্বকে অ্যালার্জির
সমস্যা সৃষ্টি করে। তাছাড়া ভুল প্রসাধনী ব্যবহার ত্বকের বিদ্যমান সমস্যা যেমন- শুষ্কতা
ও তৈলাক্ততার মাত্রা বাড়ায়।
ডা. নিবেদিতার মতে, “স্বাভাবিকভাবে ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ
হলে অ্যাসিড সমৃদ্ধ প্রসাধনী ব্যবহারে তা আরও খারাপ অবস্থায় যায়। ফোম ভিত্তিক রুক্ষ
পরিষ্কারক ত্বকের প্রতিরক্ষার স্তরকে আরও নাজুক করে দিতে পারে।”
প্রসাধনী থেকে
হওয়া পোড়াভাব কমানোর উপায়
প্রথমত ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক পণ্য নির্বাচন বাছাই করতে
হবে। ডা. নিবেদিতা ত্বক শুষ্ক, তৈলাক্ত না সংবেদনশীল তা বুঝে সে অনুযায়ী প্রসাধনী ব্যবহারের
পরামর্শ দেন।
ত্বকের সমস্যার কথা মাথায় রেখে পণ্য কেনার আগে এর উপকরণ
তালিকা দেখে নেওয়া এবং ভালো ফলাফলের জন্য প্রাকৃতিক উপাদানকে অগ্রাধিকার দেওয়া উপকারী।
মুখের এক এক স্থানের ত্বক একেক রকম। যেমন- গাল, ঠোঁট, চোখ
ইত্যাদি ভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তাই একই ব্র্যান্ডের সকল প্রসাধনী যে মানানসই হবে এমনটা
নাও হতে পারে। তাই ত্বকের ধরন বুঝে তা নির্বাচন করা জরুরি।
ত্বক শুষ্ক বা ব্রণ সৃষ্টি করে এমন প্রসাধনী ব্যবহার না
করা।
যে কোনো প্রসাধনী ব্যবহারের আগে তা কানের পেছনে লাগিয়ে
প্যাচ টেস্ট করে নেওয়া যেতে পারে। এতে জ্বলুনি বা অ্যালার্জির ঝুঁকি কমবে।
ত্বক সংবেদনশীল হলে, সেরকম মানানসই প্রসধানী নির্বাচন করতে
হবে। ‘নন-অ্যালার্জিক’ উপকরণ সমৃদ্ধ প্রসাধনী ব্যবহার এক্ষেত্রে উপকারী। এতে যে কোনো
অ্যালার্জি ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়ানো সম্ভব।
প্রসাধনীর কারণে
হওয়া পোড়াভাব প্রতিকারের পন্থা
নিচের উপায়গুলো কার্যকর হলেও প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে
আলোচনা করে নেওয়া নিরাপদ।
রেটিনল, স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বা গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ত্বকে
তাৎক্ষনিকভাবেই পোড়াভাব সৃষ্টি করতে পারে। ত্বকের নির্দিষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য কোনো
বিশেষ প্রসাধনী ব্যবহার করার দরকার নেই।
ত্বকের সাধারণ পরিচর্যার ধাপগুলো- ক্লেঞ্জিং, টোনিং এবং
ময়েশ্চারাইজিং নিয়মিত অনুসরণ করা উচিত।
রাসায়নিক উপাদান ত্বকে সরাসরি আর্দ্রতা রক্ষাকারী স্তরে
প্রভাব রাখে। ফলে ত্বকে সংবেদনশীলতার সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে হায়ালুরনিক অ্যাসিড,
গ্লিসারিন, সেরামাইড ইত্যাদি উপাদান সমৃদ্ধ প্রসাধনী ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্বকের
আর্দ্রতা সুরক্ষিত থাকবে।
ত্বকে আরাম দেয় এমন উপকরণ যেমন- অ্যালো ভেরা, সেন্টেলা
অ্যাসিটিকা, অ্যালানটোইন, বিসাবোলোল এবং লিকোরাইস মূলের নির্যাসের তৈরি উপাদান ব্যবহার
ত্বকের জ্বলুনি ও প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে।
ত্বক খুব বেশি সংবেদনশীল হলে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি মারাত্মক
ক্ষতি করে। তাই সবসময় ত্বকে সান ব্লক ব্যবহার করতে হবে।
আরও পড়ুন:
যে কারণে প্রসাধনীর কার্যকারিতা হারায়