সপ্তাহখানেকেরও
বেশি সময় আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ওই কারখানা ও সংশ্লিষ্ট এলাকা এমনভাবে
ঘেরাও করে রাখতে বলেছিলেন, যেন মাছিও ‘বের হতে না পারে’।
তার
ওই নির্দেশের পর শনিবারই প্রথম কোনো বেসামরিক আজভস্তাল ছাড়ল বলে জানিয়েছে বিবিসি।
কারখানা
এলাকার ভেতর হাজারেরও বেশি আটকা পড়া বেসামরিক আছে বলে ইউক্রেইনীয় বাহিনী দাবি করে আসছে;
সব বেসামরিককে মুক্ত করতে আলোচনা চলছে।
এদিকে
রাশিয়া জানাচ্ছে, তারা ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলে তাদের আক্রমণের তীব্রতা আরও বাড়াতে যাচ্ছে।
রুশ
গণমাধ্যম বলছে, শনিবার ২৫ বেসামরিক আজভস্তাল কারখানা ছেড়েছে; এ বেসামরিকদের মধ্যে ১৪
বছরের কম বয়সী ৬ শিশুও আছে। এদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা বলতে পারেনি তারা।
অন্যদিকে
ইউক্রেইনের সেনারা বলছে, ২০ নারী ও শিশু আজভস্তাল ছেড়ে বের হয়েছে।
“তাদেরকে উপযুক্ত একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেখান
থেকে তাদেরকে ইউক্রেইনের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূখণ্ড জাপোরিজজিয়াতে নিয়ে যাওয়া হবে বলে
আমরা আশা করছি,” বলেছেন আজভ রেজিমেন্টের ডেপুটি কমান্ডার সভিয়াতোস্লাভ
পালামার।
মারিউপোলের
মেয়র ভাদিম বয়চেঙ্কো এর আগে বিবিসিকে বলেছিলেন, আজভস্তালে আটকা পড়ারা ‘জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছে’।
“তারা অপেক্ষা করছে, তাদের যেন উদ্ধার করা হয়, তার
জন্য প্রার্থনা করছে। তাদের জীবন বাঁচাতে আমাদের হাতে কত দিন বা ঘণ্টা আছে তা বলা মুশকিল,” বলেছিলেন তিনি।
ইউক্রেইনের
দক্ষিণের পুরো উপকূল কব্জায় নেওয়ার পরিকল্পনা করছে মস্কো; মারিউপোলের পূর্ণাঙ্গ নিয়ন্ত্রণ
তাদের ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে।
এটি
রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে ২০১৪ সালে রাশিয়ার
নিয়ন্ত্রণে যাওয়া ক্রাইমিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করবে।
মারিউপোলের
নিয়ন্ত্রণ পেলে ইউক্রেইনের পশ্চিম সীমান্তলাগোয়া মলদোভায় রুশপন্থিদের নিয়ন্ত্রণে থাকা
ট্রান্সনিস্ত্রিয়ায় যাওয়াও সহজ হবে।
শনিবার
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বন্দরনগরী ওডেসায় তিনটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। কর্মকর্তারা
বলছেন, রাশিয়ার হামলায় শহরের বিমানবন্দরের রানওয়ের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ইউক্রেইনের
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওলেকসান্দ্র মোতুজায়াঙ্ক বলেছেন, রুশ বাহিনী পূর্ব
ইউক্রেইনের পাশাপাশি অন্যান্য অঞ্চলেও তাদের আক্রমণের তীব্রতা বাড়াচ্ছে।
“আগ্রাসনকারীরা আরও বড় সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা
করছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে,” বলেছেন তিনি।
পশ্চিমা
কর্মকর্তারা বলছেন, মস্কো এমনকী ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলেও তীব্র প্রতিরোধের সম্মুখীন
হচ্ছে।
আর
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা শনিবার ইউক্রেইনের ১৭টি সামরিক স্থাপনায়
ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা চালিয়েছে, যাতে দুইশর বেশি ইউক্রেইনীয় নিহত হয়েছে, ধ্বংস
হয়েছে ২৩টি সাঁজোয়া যান, অনেক সামরিক সরঞ্জাম।