রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গত দুই বছরের মতো এবারও রোজার ঈদে
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই সময় কাটাবেন।
প্রতিবছর ঈদের দিন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের পদচারণায় মুখর থাকে
বঙ্গভবন, তবে করোনাভাইরাস সঙ্কট শুরু হওয়ার পর ছেদ পড়ে আয়োজনে।
মহামারীর খাঁড়া কাটিয়ে মঙ্গলবার বাংলাদেশে উদযাপিত হবে ইসলাম
ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর।
গত দুই বছর ঈদ জামাত সীমিত ছিল চার দেয়ালের ভেতর, কোলাকুলিতেও ছিল
মানা, সংক্রমণ কমে আসায় এবার ঈদ ফিরছে উৎসবের পুরনো মেজাজে।
এমনিতে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপতির
ঈদ উদযাপন শুরু হয়। নামাজ শেষে বঙ্গভবনে ফিরে পরিবারের সদস্য এবং কর্মকর্তাদের
সঙ্গে তিনি ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
তবে এবারের ঈদেও জাতীয় ঈদগাহে যাচ্ছেন না রাষ্ট্রপতি। মঙ্গলবার সকাল
সাড়ে ৯টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে পরিবারের সদস্য এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদের নামাজ
পড়বেন তিনি। এক্ষেত্রেও মানা হবে কোভিডবিধি।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
ডটকমকে বলেন, “দরবার হলে নামাজের পর
রাষ্ট্রপতি ভিডিওবার্তায় দেশবাসীকে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাবেন।”
প্রেস সচিব জানান, ঈদের দিন বিকালে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি তার আত্মীয়-পরিজনদের
সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
গত বছর কোরবানির ঈদেও বঙ্গভবনেই নামাজ পড়েছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ফাইল ছবি
অন্য সময় ঈদের দিন বঙ্গভবনের ক্রেডেনশিয়াল হলে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার
আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন রাষ্ট্রপ্রধান। স্ত্রী রাশিদা
খানমসহ পরিবারের সদস্যরাও সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন। সারি বেঁধে সকলে
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। অতিথিদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি করমর্দনও করেন।
দরবার হলে হরেক পদের খাবারে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়। শুভেচ্ছা
বিনিময়ের ফাঁকে ঈদের শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রপতি। এক ফাঁকে দরকার হলে গিয়ে
অতিথিদের খোঁজ-খবর নেন।
শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় মাইকে বাজতে থাকে বাঙালির ঈদ উদযাপনের চেনা
সংগীত, ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে
এলো খুশির ঈদ।’
বঙ্গভবনের সেই আয়োজনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীরা সদস্যসহ বিভিন্ন কাজে
নিয়োজিত থাকেন কয়েকশ কর্মী। সকলের পদচারণায় মুখর থাকে মূল ভবনের বাইরের প্রাঙ্গন।
প্রেস সচিব জানান, ঈদের নামাজ শেষে রাষ্ট্রপতি পরিবারের সদস্যদের
সঙ্গে সময় কাটাবেন। নামাজ শেষে বঙ্গভবনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়
করবেন তিনি।
এদিকে দেশবাসীকে ঈদ মোবারক জানিয়ে শুভেচ্ছা বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি
আবদুল হামিদ।
তাতে তিনি বলেছেন, “ঈদ
সবার মধ্যে গড়ে তোলে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি আর ঐক্যের বন্ধন। ঈদুল ফিতরের শিক্ষা
সকলের মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক, গড়ে উঠুক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ-এ প্রত্যাশা করি।
“ইসলাম শান্তি ও কল্যাণের ধর্ম। এখানে
হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি, কূপমণ্ডূকতার কোনো স্থান নেই। মানবিক মূল্যবোধ,
পারস্পরিক সহাবস্থান, পরমতসহিষ্ণুতা ও সাম্যসহ বিশ্বজনীন কল্যাণকে ইসলাম ধারণ করে।
ইসলামের এই সুমহান বার্তা ও আদর্শ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।”
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে গত দুটি ঈদুল ফিতর
উদযাপনের কথা স্মরণ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, “বর্তমানে
দেশে করোনা সংক্রমণের হার অনেক কমে এসেছে। জীবনযাত্রাও স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তবে
ভবিষ্যৎ সংক্রমণ বৃদ্ধি রোধ করতে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে এবং সকলকে
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।”