রঙিন টুপির দিকে বেশ ঝোঁক দেখা গেল দ্বিতীয় শ্রেণি পড়ুয়া ইয়ামিনের। সোমবার বিকালে দোকানে ঢুকেই নেড়েচেড়ে দেখছেন, পছন্দ হলে তুলে দিচ্ছেন বাবার হাতে।
বেশ খানিকটা ঘোরাঘুরি শেষে বাবা ও ছেলের টুপি পছন্দ হল। দরদাম শেষে ইয়ামিনের জন্য নেওয়া হল বেশ রঙচংয়ের আফগানি টুপি, দাম পড়ল ১৫০ টাকা। আর তার বাবা ২০০ টাকা দিয়ে কিনলেন পাকিস্তানি টুপি।
এবার এল আতর পছন্দের পালা। তার বাবা গন্ধ পরীক্ষা করছেন। আতর মাখা হাত ছেলের দিকে বাড়িয়ে দিলেও সেদিকে মনযোগ নেই ছোট্ট ইয়ামিনের। একটি পোশাক কারখানায় কোয়ালিটি কন্ট্রোলার পদে কাজ করা ইলিয়াস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পায়জামা, পাঞ্জাবি, জুতাসহ সব কেনাকাটা শেষ করেছি। এখন টুপি আর আতর কেনার জন্য এ মার্কেটে এসেছি। রাস্তায় ভিড় নেই দেখে ছেলেকেও নিয়ে এলাম।
যাচাই বাছাই শেষে তিনি সৌদি আল রিহাব কোম্পানির ৩০০ টাকার আতর কিনলেন।
ঈদের আগে টুপির দোকানে যে পরিমাণ বেচাকেনা হওয়ার কথা, তা ফিরেছে আবার। মহামারীর কারণে গত দুই বছর ব্যবসা খারাপ থাকায় ক্রেতা হারিয়েছেন অনেক দোকানি। এ বছর আবার ফিরেছে ক্রেতা,বেড়েছে বিক্রি। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
বাবা ছেলের মত রোজার শেষ দিন অনেককেই দেখা গেল এই মার্কেটে ভিড় করতে। সবচেয়ে বেশি দেখা গেল বয়জ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের।
করোনাভাইরাস মহামারীর ধকল কাটিয়ে এবার সংক্রমণের ভয় কমে আসায় তারা এসেছেন বায়তুল মোকাররম মার্কেটে।
লকডাউনের বিধিনিষেধের না থাকায় রাত পোহালেই আগের মত স্বাভাবিক পরিবেশে ঈদুল ফিতর উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।
ঈদ জামাতে যাওয়ার অনুষজ্ঞ হিসেবেই যেন নতুন জায়নামাজ, টুপি আর আতরের খোঁজে দোকান থেকে দোকানে ঘুরছেন তারা।
তাদের অনেকে আতর ও টুপি ছাড়াও জায়নামাজ, পায়জামা এবং পাঞ্জাবির নিচে পড়তে গেঞ্জি কিনতে দেখা যায়। কেউ কেউ কিনছেন তসবিহও।
সোমবার ইফতারের পর রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায় থরে থরে সাজানো টুপি ও আতরের দোকানে ভিড় বাড়ে আরও। টুপি-আতর যাচাই বাছাই শেষে দরাদরিও চলছে ক্রেতা-দোকানিদের মধ্যে।
ঈদের আগে শনিবা বায়তুল মোকাররম মার্কেটে জায়নামাজ দেখছেন এক ব্যক্তি। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
অন্য সময়ের চেয়ে বিক্রিও বেশি। দোকানিরাও বছরের এ সময়ের অপেক্ষায় থাকেন বলে কাউকে ফেরাতে চাইছেন না। চাপ থাকলেও পণ্য দেখাচ্ছেন, হাসিমুখে দরাদরি করছেন।
জয়নাল নামে এখানকার এক পুরনো দোকানি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে আতর ও টুপি বিক্রি হচ্ছে ভালোই। তবে রোববার ও সোমবার বিক্রি বেড়েছে বেশি।
৫০ থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত দামের আতর রয়েছে তার দোকানে। মেশক আম্বার, হারামাইন আতর, সৌদি আল রিহাব কোম্পানির, ভারতের আল নাঈম কোম্পানির আতর রয়েছে বলে জানালেন।
এছাড়া দেশি ফারহান ও আলিফ নামের দুই কোম্পানির আতরও রয়েছে।
মো. বদরুল নামে এক দোকানি বলেন, তার দোকানে দেশি টুপির পাশাপাশি তুর্কি, পাকিস্তানি, চায়না ও ভারতীয় টুপি রয়েছে। এছাড়া জিন্নাহ ও নেয়ামত টুপিও রয়েছে।
তবে এবছর আফগান টুপি বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে তিনি জানান।