গত ১৫মার্চ (মঙ্গলবার) বিকালে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে ওই জেলেদের নৌকাসহ ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি)। এসব জেলের পরিবারে এখন ঈদের আয়োজন তো দূরের কথা, দুই বেলা পেট ভরে খাবারও মিলছে না।
আটক জেলেরা হলেন-উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ার নুর কালাম (২৬), মোহাম্মদ জসিম (২৫), সাইফুল ইসলাম (২৩), মো. ফয়সাল (২৩), আবু তাহের (২২), মো. ইসমাইল (২০), মো. ইসহাক (২৪), আবদুর রহমান (২৪), মো. হোসেন (২২), মোহাম্মদ হাসমত (২৫), মোহাম্মদ আকবর (২৩), নজিম উল্লাহ (১৯), মোহাম্মদ রফিক (২০), মোহাম্মদ সাব্বির (২৫), মোহাম্মদ হেলাল (২৫), মো. জামাল (২১), রেজাউল করিম (১৮) ও মোহাম্মদ রমজান (১৬)।
নাফনদীর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ায় জেলেদের ঘরে সোমবার সকালে গিয়ে দেখা গেছে, তাদের মুখে ঈদ আনন্দের রেশ নেই; চোখে হতাশা। কেউ সন্তান, কেউ স্বামীর বা কেউ বাবার ঘরে ফেরার অপেক্ষার প্রহর গুণছেন। তারা যেকোনো মূল্যে ফেরত চান পরিবারে উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে।
মোহাম্মদ জসিম স্ত্রী আয়সা খাতুন বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঈদ দিয়ে কি হবে? স্বামীকে তো ফেরত পেলাম না। কেমন আছেন, কোথায় আছে কে জানে? ছেলে-মেয়েরা নতুন জামার জন্য কান্নকাটি করছে। হাতে কোনো টাকা-পয়সাই নেই, কাপড় কিনে দিব কি ভাবে। তিন সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছি।”
মোহাম্মদ রফিকের মা সলেমা খাতুন বলেন, “ঈদের আনন্দের এখনে নেই। সব পরিবারের সদস্যদের চোখে-মুখে এখন শুধু হতাশা। পরিবারের লোকজন ঠিক মতো খাবার মুখে দিতে পারছে না। ঈদ দিয়ে আমাদের কি হবে। পরিবারের সদস্যদের ফেরত পেলে জীবনের সৃষ্ট ঈদ উৎযাপন হবে।“
এ বিষয়ে সাবরাং ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস সালাম বলেন, “১৮ জেলে বর্তমানে কোথায় আছেন, পরিবারগুলো কিছুই জানে না। তারা আতঙ্কগ্রস্ত ও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। মাছ শিকার করে তাদের ঘরসংসার চললেও বর্তমানে পরিবারগুলোর সদস্যরা অনাহারের মধ্যে জীবন-যাপন করছেন।”
জালিয়াপাড়া ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আবদুল গণি বলেন, “জেলেগুলোকে ফেরত আনার জন্য সরকারের কাছে সুদৃষ্টি কামনা করেছি।”
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, বিজিবির ওই জেলেদের ফেরত চেয়ে একাধিকবার মিয়ানমার সীমান্তবক্ষী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। কিন্তু আজও তারা বাংলাদেশি জেলেদের ফেরত দেয়নি।