ঢোকার আগে স্বামী ও আট বছর বয়সী ছেলেকে হাত নেড়ে বিদায় জানান এনামুলের স্ত্রী।
একটু এগিয়ে এনামুল ছেলেকে নিয়ে ঈদগাহের প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকতে লাইনে দাঁড়িয়ে গেলেন।
পরিবারের কে কে এসেছেন জানতে চাইলে বংশাল সাইকেল পার্টস বিক্রেতা এনামুল বলেন, “সবাই, চারজনের সবাই চলে এসেছি।”
“এটাই আমাদের ঈদ, এটাই আনন্দ,” এক বাক্যে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন তিনি।
মহামারীর দুঃসহ স্মৃতি পেরিয়ে মঙ্গলবার ঈদ এসেছে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে, আনন্দের উপলক্ষ হয়ে।
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসবের রঙ গত দুই বছর হারিয়েছিল করোনাভাইরাস মহামারীর খাঁড়ায়। জাতীয় ঈদগাহে জামাতও হয়নি গত দুই বছরে চারটি ঈদে। মসজিদে ঈদ জামাত হলেও বিধি-নিষেধের বেড়াজালে কোলাকুলির মতো চেনা দৃশ্যও স্বাস্থ্যবিধির তোড়ে গিয়েছিল হারিয়ে।
মহামারী পরিস্থিতির উন্নতিতে এবার আবার স্বরূপে ফিরল ঈদের উৎসব, জাতীয় ঈদগাহও পেয়েছে মুসল্লি।
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহে ঈদ জামাতের সময় সকাল ৮টা ঘোষণা দেওয়া হলেও ৩৫ হাজার মানুষ ধারণ ক্ষমতার মাঠটিতে সকাল ৬টা থেকে মানুষ আসতে শুরু করে।
আকাশে মেঘ আর রোদের লুকোচুরিও এই আসায় বাধ সাধতে পারেনি। সবার মুখে দুই বছর পর জাতীয় ঈদগাহ মাঠে আসতে পারার খুশি।
জাহাঙ্গীর হোসেন একজন সরকারি কর্মচারী
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খুবই মানসিক অস্বস্তিতে ছিলাম গত দুই বছর এখানে নামাজ
পড়তে না পেরে।”
গত ২০ বছর জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে নামাজ
পড়ে আসছেন জাহাঙ্গীর।
বাবার সঙ্গে নামাজ পড়তে আসা আট বছর
বসয়ী আদনান আহমেদ বলল, “খুব ভালো লাগছে।”
সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। তখনও আকাশে মেঘের সাজ থাকলেও তা বৃষ্টি হয়ে নামেনি।
ঈদগাহের নিরাপত্তায় পুলিশ ও র্যাবের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
মুসল্লিদের ছাতা আর জায়নামাজ ছাড়া আর কিছু আনতে আগেই নিষেধ করেছিল পুলিশ। তা মেনেই এসেছেন সবাই।
তবে মহামারী এখনও শেষ না হওয়ায় স্বাস্থবিধি মানার তাগিদ থাকলেও তাতে দেখা গেছে অনীহা। অধিকাংশের মুখে ছিল না মাস্ক।
জাতীয় ঈদগাহসহ ঢাকা মহানগরে ১ হাজারটি ৪৬৮টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে এসব ঈদ জামাতের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ জানিয়েছে।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রথম ঈদ জামাত হয়েছে সকাল ৭টায়। সেখানে পৌনে ১১টা পর্যন্ত পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে।