ঈদের নামাজের পাশাপাশি বন্দিদের অংশগ্রহণে গান বাজনারও আয়োজন করে কারা
কর্তৃপক্ষ। কাশিমপুরের চারটি কারাগারে আলাদাভাবে ঈদ উদযাপিত হয়েছে। এখানে মহিলাদের
একটি ছাড়া বাকি তিন কারাগারে ২০টি ঈদের জামাত হয়েছে।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ সুপার আব্দুল জলিল
জানান, এখানে ঈদের নামাজের ১২টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ কারাগারে তিন হাজার বন্দি
রয়েছেন। তাদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯৯৭ জন ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত প্রায় ছয়শ বন্দি
রয়েছেন।
দুইদিন আগে ঈদ উপলক্ষে এখানে দরিদ্র এক হাজার ২৮ জন বন্দিকে নতুন লুঙ্গি
দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এর সুপার মো. নুরুন্নবী ভূইয়া জানান, এ কারাগারে
বন্দিদের জন্য চারটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ কারাগারে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার
হোসাইন সাইদী, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামি কমান্ডার শাহাবুদ্দিন, ডেসিটিনির পরিচালক
মোহাম্মদ হোসেনসহ প্রায় দেড় হাজার বন্দি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৭১ জন ফাঁসির এবং শতাধিক
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি রয়েছেন।
গত রোববার ঈদ উপলক্ষে ১০০ দরিদ্র বন্দির মাঝে লুঙ্গি বিতরণ করা হয়েছে বলে
তিনি জানান।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর সুপার মো. আমিরুল ইসলাম জানান, এখানে
বন্দিদের জন্য ঈদের নামাজের চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ কারাগারে বন্দির সংখ্যা
হলো দুই হাজার ৭৯৮। তাদের মধ্যে শতাধিক ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত এবং চার শতাধিক যাবজ্জীবন
দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি রয়েছেন।
এখানে গত শনিবার ১৫০ জন দরিদ্র বন্দিকে লুঙ্গি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার মোসা. হালিমা খাতুন জানান, এ কারাগারে
নারী বন্দিদের জন্য ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত না হলেও নিজেরা নিজেদের মতো করে নামাজ/উপাসনা
করেছেন।
এ কারাগারে নরসিংদীর জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামিমা
নূর পাপিয়াসহ মোট বন্দির সংখ্যা হলো প্রায় ৭০০। তাদের মধ্যে ফাঁসির আসামি ৩০ জন এবং
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আছেন প্রায় অর্ধশত। এছাড়া এ কারাগারে (ডে-কেয়ার সেন্টারে) মা-বন্দিদের
সঙ্গে আসা ৮৪ জন শিশু রয়েছে।
এখানে বিকালে বন্দিদের অংশগ্রহণে নানা ঈদ-আনন্দ ও গান-বাজনার আয়োজন করা
হয়েছে।
কারা সুপার মোসা. হালিমা খাতুন আরও জানান, এই কারাগারে ২৬৫ জন দরিদ্র নারী
বন্দি ও তাদের সঙ্গে থাকা ৮০ জন শিশুকে নতুন জামা দেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার জেলা প্রশাসক
উপস্থিত থেকে তাদের ওই পোশাক বিতরণ করেন।
ঈদের দিনে সব কারাগারে বিশেষ খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে
সকালে পায়েস-মুড়ি, দুপুরে মাংস-পোলাও, মিষ্টি, সালাদ, পান-সুপারি এবং রাতে ভাত, রুই
মাছ, ছোলার ডাল।