চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিশেষ উদ্যোগে বেসরকারি কর্ণফুলী ড্রাইডক
জেটিতে বুধবার বিকালে জাহাজটিকে ভেড়ানো হয় বলে বন্দর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
জাহাজটিতে ১১৫৬ টিইইউএস কন্টেইনার ছিল। এর বেশিরভাগ কন্টেইনারই রপ্তানি
পণ্যভর্তি।
জাহাজটিকে উদ্ধার করে জেটিতে ভিড়িয়ে প্রায় আটশ কোটি টাকার মতো পণ্য রক্ষা
করা গেছে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক।
ভিয়েতনামের পতাকাবাহী ১৭২ মিটার দৈর্ঘ্যের ‘এমভি
হেইনান সিটি’ নামের জাহাজটি গত ১৪ এপ্রিল
চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগের পর গভীর সমুদ্রের কুতুবদিয়া এলাকায় ‘এমটি
ওরিয়ন এক্সপ্রেস’ নামের অন্য একটি জাহাজের সঙ্গে
ধাক্কা লাগায়।
কুতুবদিয়ার কাছে সাগরে অন্য একটি জাহাজের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ডুবে যাচ্ছিল ‘এমভি হেইনান সিটি’।
বন্দর সচিব ফারুক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এতে
এমভি হেইনানের কার্গো হোল্ডে ছিদ্র হয়ে পানি ঢুকে সেটি সাত ডিগ্রি কাত হয়ে যায়।
“পানি প্রবেশের ফলে ডুবতে বসা জাহাজটি কুতুবদিয়া এলাকায়
নোঙ্গর করে। এটি মেরামত করার জন্য বহন করা কন্টেইনার খালাস করা জরুরি হয়ে পড়ে।”
এজন্য বোঝাই করা রপ্তানিপণ্য রক্ষা এবং জাহাজটি উদ্ধারে ঈদের ছুটি ও
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার
অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বার্থিং দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
বন্দর সচিব বলেন, জাহাজটিতে পানি প্রবেশের পর এর পানির নিচের অংশের গভীরতা
১০ দশমিক ৭ মিটারে গিয়ে দাঁড়ায়। পরবর্তীতে বিশেষ ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে সেটিকে ভেড়ানোর
উপযোগী করা হয়।
বন্দরের নৌ বিভাগের পাইলটিং, টাগ, স্থানীয় নৌ প্রযুক্তি ও আন্তর্জাতিক
সেলভেজ ইউনিয়নের সদস্য বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মানের স্যালভেজ প্রতিষ্ঠান প্রান্তিক
বেঙ্গল সার্ভিসের সহযোগিতায় কর্ণফুলী ড্রাই ডক জেটিতে ভেড়ানো হয় জাহাজটি।
এ কাজে বন্দরের টাগবোট, দুটি বিশেষায়িত পলিউশন কন্ট্রোল জাহাজ ছাড়াও
প্রান্তিক বেঙ্গল স্যালভেজ অ্যান্ড ডাইভিং সার্ভিসের টাগবোট ব্যবহার করা হয়।
চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে যাওয়া জাহাজটিতে ১১৫৬ টিইইউএস কন্টেইনারে আটশ কোটি ডলারের পণ্য ছিল, যা রক্ষা করা গেছে।
বন্দর সচিব বলেন, “জাহাজ উদ্ধার কাজ সম্পাদন
করার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ৮০০ কোটি টাকার মূল্যের রপ্তানি
পণ্য যেমন রক্ষা পেয়েছে তেমনি জাহাজ ডুবে গেলে স্বাভাবিক নৌ চলাচলে যে প্রতিবন্ধকতা
সৃষ্ট হত, তা থেকে বন্দর রক্ষা পেয়েছে।
“এ কাজের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক নৌ বাণিজ্যে চট্টগ্রাম
বন্দরের সুনাম বাড়বে। একইসাথে রপ্তানিকারকরা আর্থিক ক্ষতি হতে রক্ষা পেয়েছেন”