বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান জানান, শুক্রবার দুপুর থেকেই ঈদ উদ্যাপন শেষে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রী ও যানবাহনের চাপে ঘাট এলাকায় যানজট দীর্ঘ হতে শুরু করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ২১টি ফেরি দিয়ে পারাপার করা হচ্ছে।
শনিবার সরেজমিন দেখা গেল, দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের জমিদার ব্রিজ পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকায় সহস্রাধিক যানবাহনকে পদ্মা পারের অপেক্ষায় রয়েছে। এর মধ্যে বাসের সংখ্যাই বেশি।
তাছাড়া দুই শতাধিক ব্যাক্তিগত গাড়ির চাপ রয়েছে। প্রতিটা যানবাহনকে দশ থেকে বারো ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
এদিকে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে দীর্ঘসময় অপেক্ষায় থেকে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন চালক ও যাত্রীরা।
বেলা ১১টায় ঘাট এলাকায় কথা হয় সাতক্ষীরা থেকে আসা ঈগল পরিবহনের যাত্রী রুমা আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, “ রাত ১২টায় ফেরি ঘাট এলাকায় এসেছি। সারা রাত ঘুম নেই। শুধু দুইটা রুটি খেয়ে রাত কাটিয়েছি। গরমে ছোট বাচ্চাটা ছটফট করছে।”
ওই বাসে সাবিনা ইয়াসমিন নামের আরেক যাত্রী বলেন, “গত রাত ১২টা থেকে এখানে আটকে আছি। ঘাট এলাকায় শৌচাগার ব্যবস্থা নেই; ফলে আরও বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।”
যশোর থেকে ঢাকাগামী গোল্ডেন লাইনের যাত্রী শফিকুল ইসলাম বলেন, “সকালে অফিসে যোগ দেওয়ার করার কথা ছিল। জ্যামের কারণে তা হল না। আমার দুই বছরের মেয়েটা দীর্ঘ সময় গরমের মধ্যে জ্যামে বসে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।”
সাতক্ষীরা থেকে আসা পাটুরা পরিবহনের চালক আসলাম হোসেন বলেন, “বিশ মিনিটের পদ্মা পাড়ি দিতে এসে অপেক্ষায় আছি দশ ঘণ্টা। এখানে খাওয়ার ব্যবস্থা নেই, বাথরুমের ব্যবস্থা নেই। যাত্রীরা গরমে ছটফট করছে। কি যে কষ্ট, সেটা বলে বোঝানো যাবে না।”
দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দ্বায়িত্বরত সার্জেন্ট শহিদ বলেন, প্রচুর যানবাহনের চাপে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় প্রায় দশ কিলোমিটার এলাকয় গাড়ির জট তৈরি হয়েছে। সময় যত বাড়ছে চাপও তত বাড়ছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন তারা।
এ পরিস্থিতিতে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হবে কিনা এমন প্রশ্নে বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান বলেন, “আপাতত ফেরি বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই। যে ফেরি আছে সেটা দিয়েই চাপ মোকাবেলার চেষ্টা করা হবে।”