প্রতিবেশী দেশটিতে রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে শুক্রবার নিরাপত্তা পরিষদের দেওয়া প্রথম বিবৃতিতে, ইউক্রেইন সমস্যার একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের খোঁজে জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রচেষ্টার প্রতিও সমর্থন দেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদের এই বিবৃতির বিষয়ে রাশিয়াসহ সব সদস্য রাষ্ট্র সম্মতি দিয়েছে। পরিষদের অস্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র নরওয়ে ও মেক্সিকো সংক্ষিপ্ত বিবৃতিটির খসড়া পেশ করেছিল।
এতে বলা হয়, “ইউক্রেইনের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। নিরাপত্তা পরিষদ স্মরণ করছে, সব সদস্য রাষ্ট্রগুলো জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী তাদের আন্তর্জাতিক বিরোধগুলো শান্তিপূর্ণ উপায়ে নিষ্পত্তির বাধ্যবাধকতা মেনে নিয়েছিল।”
এতে আরও বলা হয়, “একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের খোঁজে জাতিসংঘ মহাসচিবের চালানো প্রচেষ্টার প্রতি নিরাপত্তা পরিষদ জোরালো সমর্থন জানাচ্ছে।”
বিবৃতিতে নিরাপত্তা পরিষদকে ফের ‘যথাসময়ে’ অবহিত করার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
পরিষদের এই সমর্থনকে স্বাগত জানিয়ে মহাসচিব গুতেরেস বলেছেন, ‘জীবন বাঁচাতে, দুর্ভোগ লাঘবে ও শান্তির পথ খুঁজে পেতে কোনো প্রচেষ্টাই’ বাদ রাখবেন না তিনি।
ইউক্রেইন যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের খোঁজে গুতেরেস গত সপ্তাহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তার ওই সফরের ফলে জাতিসংঘ ও রেড ক্রসের যৌথ উদ্যোগে ইউক্রেইনের মারিউপোল শহর ও অবরুদ্ধ আজভস্তাইল ইস্পাত কারখানা থেকে আটকা পড়া প্রায় ৫০০ বেসামরিককে সরিয়ে নেওয়ার পথ খুলে।
রাশিয়া ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেশী ইউক্রেইনে হামলা চালানো পর থেকে কূটনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ি বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও নিরাপত্তা পরিষদের এবারের বিবৃতিতে সব সদস্য সম্মতি দিয়েছে। এর আগে ২৫ ফেব্রুয়ারি মস্কোর আগ্রাসনের নিন্দা জানানোর লক্ষ্যে প্রস্তাব করা আরেকটি খসড়া বিবৃতিতে রাশিয়া ভিটো দিয়েছিল। তখন এ প্রস্তাবের বিষয়ে ভোটাভুটিতে চীন, ভারত ও আরব আমিরাত ভোটদানে বিরত ছিল।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে কোনো প্রস্তাব পাশ হতে পক্ষে নয় ভোট আর পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কারও কোনো আপত্তি না থাকা প্রয়োজন হয়। পাঁচ স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স বা যুক্তরাজ্যের মধ্যে কেউ ভিটো দিলে প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়।
তবে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের কোনো প্রস্তাবের ক্ষেত্রে কোনো সদস্য রাষ্ট্রের ভিটো দেওয়ার ক্ষমতা নেই।