ক্যাটাগরি

কিউবার রাজধানীতে বড় ধরনের বিস্ফোরণে নিহত ২২

শুক্রবার দেশটির রাজধানী হাভানার কেন্দ্রস্থলে সারাতোগা হোটেল প্রাঙ্গণে এ বিস্ফোরণ ঘটে, এতে হোটেল ভবনের একটি অংশ কয়েক তলা পর্যন্ত ধসে পড়েছে বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শী ও রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম।

বিবিসি জানিয়েছে, হাভানার পুরনো অংশে হোটেলটির সামনে পার্ক করে রাখা একটি গ্যাস ট্যাঙ্কারে আগুন লাগার পর তা বিস্ফোরিত হয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বন্ধ থাকা হোটেলটি চার দিনের মধ্যে খোলার কথা ছিল। সারাতোগার বাইরের দিকের অধিকাংশ দেয়াল ধসে পড়ায় এটি এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

হোটেলটি কিউবার ঐতিহাসিক পুরনো কংগ্রেসনাল ভবন ক্যাপিতোলিওর ঠিক উল্টো পাশেই।  

ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া লোকজনকে খুঁজে বের করতে তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে। নিহতদের মধ্যে গর্ভবর্তী এক নারী ও একটি শিশু আছে বলে জানিয়েছেন কিউবার প্রেসিডেন্ট।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াজ কানেল জানান, গ্যাস লিক থেকে ঐতিহাসিক এ হোটেলে বিস্ফোরণটি ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে।

হাভানার কালিক্সতো গার্তিয়া হাসপাতালে আহতদের দেখে বের হওয়ার সময় বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, “কোনোভাবেই এটা বোমা বা হামলার ঘটনা নয়। এটি শুধু খুব দুর্ভাগ্যজনক একটি দুর্ঘটনা।”

ছবি: রয়টার্স

ছবি: রয়টার্স

এই কালিক্সতো গার্তিয়া হাসপাতালে বহু আহতকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বিস্ফোরণের পর পুরনো হাভানার পুরো অংশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল, তবে তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। মহামারীতে ক্যারিবীয় দ্বীপ কিউবার গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন খাত প্রায় স্থবির হয়ে থাকার পর ধাপে ধাপে সচল হচ্ছে, শুরু হচ্ছে পর্যটকদের আনাগোনা।

সারাতোগা হোটেলের এক ব্লক পরের বাসিন্দা জাসিরা দে লা কারিদা সিবিএস নিউজকে জানান, বিস্ফোরণটিকে তিনি ভূমিকম্প বলে মনে করেছিলেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের পর তারা আকাশে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডুলি ও ধুলার মেঘ উঠতে দেখেছেন।

বিস্ফোরণের সময় হোটেলটির ঠিক পেছনেই একটি স্কুলে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। রাতে দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের মধ্যে অন্তত ১৫ জন শিশু আহত হয়েছে এবং একজনের মৃত্যু হয়েছে।

প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বিস্ফোরণে কোনো বিদেশি মারা যায়নি বা আহত হয়নি বলে জানিয়েছেন কিউবার পর্যটনমন্ত্রী হুয়ান কার্লোস গার্থিয়া।

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন জানিয়েছে, বিস্ফোরণের সময় ৯৬ রুমের শতাব্দী প্রাচীন হোটেল ভবনটির ভেতরে শুধু শ্রমিকরাই ছিলেন। 

বিস্ফোরণের পর উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত কাজে নেমে পড়ে। পুলিশ ক্যাপিতোলিওসহ নিকটবর্তী বেশ কয়েকটি সরকারি ভবন ঘিরে ফেলে।

কিউবা ভ্রমণে গিয়ে বিভিন্ন দেশের বহু শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা ও তারকা এই সারাতোগা হোটেলে থেকেছেন।